নিরাপত্তা খুঁজে পাচ্ছি না: হিরো আলম
“আমার কাছে কিছু তথ্য আছে, টাকা দিয়ে তারা ভোট কিনেছে।”
ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে হামলার শিকার স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম (হিরো আলম) বুধবার ঢাকার একটি হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করেন।
বগুড়া থেকে ঢাকায় এসে ভোটে দাঁড়িয়ে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন আশরাফুল আলম (হিরো আলম)।
ভোটের দুদিন পর বুধবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানান তিনি। সেই সঙ্গে ভোটের দিন হামলার শিকার হওয়ার জন্য পুলিশকে দায়ী করেন তিনি।
সোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটার হিরো আলম বগুড়ার পর এবার ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।
গত সোমবার ভোটগ্রহণের দিন বনানী বিদ্যা নিকেতন কেন্দ্রে হামলার শিকার হন তিনি। তারপর তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে আবার হাসপাতালে যান, সেখানেই তিনি বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
হিরো আলম বলেন, “আমি জীবনের কোনো নিরাপত্তা খুঁজে পাইতেছি না। আজকে আমি হসপিটালে, তারা আমার অফিসে যাইয়া হামলা করার চিন্তাভাবনা করেছে।
“আজকে আমার বাসায় ৮-১০ জন ছেলেপেলে ‘আলম বের হ, বের হ’ বলে চিল্লাইতেছিল…দারোয়ানের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে।”
হাসপাতাল থেকে তিনি নিরাপদে বাসায় যেতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও সংশয়ী এখন এই যুবক।
তিনি বলেন, “আমি কাউকে জানাইনি আমি কোন হসপিটালে। অনেকেই বলেছে, হিরো আলম কই? কিন্তু নিরাপত্তার খাতিরে আমি আমার মোবাইল বন্ধ রাখছিলাম। আমি ঠিকানা দেই নাই, কারণ ঠিকানা দিলে চিকিৎসা ভালোভাবে হবে না। সন্ত্রাসীরা আমায় খুঁজতেছে….আমি জানি না আমি ভালোভাবে বাসায় ফিরতে পারবো কি না “
নিরাপত্তাহীনতার কথা পুলিশকে জানিয়েছেন বলে জানান হিরো আলম। তিনি বলেন, হাতিরঝিল থানায় আবেদনও জমা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ডিএমপির গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মাসুম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তার (হিরো আলম) নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে তার উপর বাকি হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
ভোটের দিন হামলার জন্য পুলিশকেই দায়ী করছেন হিরো আলম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমার উপর যে হামলা হয়েছিল, আমি যে আজকে মৃত্যুর মুখে, এর পেছনে আমি পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করছি।
“কারণ সেদিন যখন মারামারি, গণ্ডগোল হয়, যখন আমায় ধাক্কা মারা হয়, গেট থেকে বের করে দেওয়া হয়, তখন যদি তারা আমাকে গাড়িতে তুলে দিত, তাহলে কিন্তু আমি এই মৃত্যুর মুখে পড়ি না, হামলার শিকার হই না।”
হামলাকারীরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে আগে থেকে অভিযোগ করে আসছেন তিনি।
এই উপনির্বাচনে ৫ হাজারের মতো ভোট পেয়ে হেরেছেন হিরো আলম। ২৮ হাজার ভোট পেয়ে জিতেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত।
তবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম বলেন, “আমার কাছে কিছু তথ্য আছে, টাকা দিয়ে তারা ভোট কিনেছে।”
নৌকার পক্ষে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, আমাকে ইচ্ছে করে হারানো হয়েছে।”