- আফফান উসামা
- ২৫ জুলাই ২০২২, ১৩:২৩
‘অনেক বড় হতে হবে দাদুভাই। এত বিখ্যাত হতে হবে যে, দুনিয়ার সবাই জানবে তোমার নাম। যখন তুমি বাড়ী আসবে, সবাই দল বেঁধে ভিড় জমাবে তোমায় দেখতে।’ আদরের নাতিকে ছোট্ট থাকতে এভাবেই বিশ্ব জয়ের সবক শিখিয়ে দিয়েছিলেন দাদুভাই। স্বপ্ন দেখিয়ে দিয়েছিলেন বড় কিছু হবার, বড় কিছু করার। অঙ্কুরে পানির জোগান দিয়েছিলেন।
দাদুর শিখিয়ে দেয়া সেই মন্ত্র নাতি কভুও ভুলে যায়নি। দাদুর সেই শিক্ষা বুকে নিয়ে স্বপ্নটা বাস্তবতায় রূপ দিয়েছেন। অঙ্কুরে দাদুর দেয়া সেই পানির জোগানে আজ তা বৃক্ষে পরিণত। শুধুই কি তাই? বৃক্ষ থেকে প্রস্ফুটিত হয়েছে মন মুগ্ধকর সব ফুল, যেই ফুলের সুবাসে আজ গোটা বিশ্ব মাতাল।
কার কথা বলছি, বুঝতে বাকি আছে কি? হ্যাঁ, সাকিব আল হাসান। তিন শব্দের একটি নাম সাকিব আল হাসান। বিশ্ব ক্রিকেটের হাজারো কীর্তি আর কীর্তিমানের ভীড়ে হীরকখণ্ডের মতো চকচক করে যে লাল-সবুজ নামটি। যা রূপকথার চেয়ে কম কোথায়? ষোল কোটি মানুষের একটা দেশের প্রিয় খেলাটার আশা আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন সবকিছু মিশে থাকে তার নামের সাথে। প্রত্যাশার হিমালয়সম বোঝা মাথায় নিয়ে নিরন্তর যিনি মাঠের সবুজের বুকে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন, বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের ছোট্ট তালিকায় আজ সসম্মানে উচ্চারিত হয় তার নামটি।
দাদু আজ পৃথিবীতে নেই। হয়তো দূর থেকে দেখছেন নাতির এমন কীর্তিগাথা। আজ যে তার সেই আদুরে নাতিটিতে সবাই মুগ্ধ হয়ে থাকে। অসংখ্য তারার ভিড়ে নাতিটি যে সূর্য্যসম; শুভ্র রশ্মি ছড়িয়েছে দূর দিগন্তে যার। শত মাইল দূরত্বেও নিদ্রাহীন বাঙালীর বাধন হারা উল্লাস আর বাধঁভাঙ্গা উচ্ছাসের উপলক্ষ সে, একবার, দু’বার নয়; অসংখ্য-অগণিতবার। বাঘের গর্জনে বিশ্ব কাঁপাতে পথচলা তার দিগন্ত জুড়ে! বাঁ হাতের বিস্ময়কর সব কারুকার্যে বিস্মিত বিশ্বকে পরিচয় দিয়েছেন আমি বাংলার; আমি বাঘেদের একজন!
শুধু সাকিব আল হাসান নিজের পরিচয় বিলি করেই দমে যাননি, নিজেকে এমন একটা অবস্থায় পৌঁছে দিছেন যে বর্হিবিশ্বে বাংলার মানুষ সাকিবের পরিচয়ে বাংলাদেশকে তুলে ধরে। অর্থাৎ সাকিবকে দিয়ে বিশ্ব বাংলাদেশকে চেনে। এমন একটা-দুটো নয়, শত ঘটনা রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। তর্ক বির্তক থাকতেই পারে, সমালোচনা-আলোচনা সবাইকে নিয়েই থাকে। তবে সব শেষে আপনাকে মানতেই হবে ‘সাকিব এই দেশের অমূল্য এক সম্পদ’। যাহোক, সব শেষে বলাই যেতে পারে দাদির চাওয়া অপূর্ণ রাখেননি সাকিব। তিনি এখন বিখ্যাত, খুব বেশিই বিখ্যাত।