দেশে ফিরতেও পারেন সাকিব

দেশে ফিরতেও পারেন সাকিব 

পড়বে না তাঁর পায়ের চিহ্ন এই বাটে…। কানপুর টেস্ট দিয়ে তাঁর বাট বাঁক নিয়েছে বিদায়ের দিকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট খেলার সুযোগ পেলে বিদায় আনুষ্ঠানিকতা পাবে। রাজনৈতিক কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে টি২০র মতো শেষ টেস্ট ম্যাচও খেলা হয়ে গেছে সাকিবের।

যদিও টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৩৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের শেষ টেস্ট খেলার কথা দেশের মাটিতে। খেলা হোক বা না হোক, সাকিবের শেষের বাঁশি বেজে গেছে। গতকাল গ্রিন পার্কে তাই আংশিক বিদায় সংবর্ধনাও পেয়েছেন তিনি। সিরিজ কাভার করতে আসা বাংলাদেশি সাংবাদিকরা ক্রেস্ট ও ফুলের তোড়া দিয়ে সম্মান জানান জীবন্ত এ কিংবদন্তিকে।

এই সম্মান প্রদর্শনে বিদায়ের বার্তা থাকলেও বিরাট কোহলির কাছ থেকে একটি ভালো ব্যাট চেয়ে নেওয়ার অর্থ– আরও ভালো খেলার প্রেরণা খুঁজছেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার।

গ্রিন পার্কে পুরস্কার বিতরণ চলাকালে কোহলি একপাশে গিয়ে সাকিবের সঙ্গে কিছুক্ষণ গল্প করেন। এ সময় একটি ব্যাট সাকিবের হাতে তুলে দেন তিনি। বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমাম জানান, কোহলির কাছ থেকে সাকিবই ব্যাটটি চেয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু কোহলির ব্যাট ভালো হয়। এ ধরনের ব্যাট বাইরে পাওয়া যায় না। তাই কোহলির কাছে সাকিব একটি ব্যাট চেয়েছিলেন।’

সাকিব শেষ অ্যাওয়ে টেস্ট খেলে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ধরেছেন গতকালই। ভারতের সময় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় কানপুর থেকে দুবাইগামী বিমান ধরেন তিনি। সেখান থেকে উড়াল দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে। দল সূত্রে জানা গেছে, মিরপুর টেস্ট শুরুর তিন থেকে চার দিন আগে ঢাকায় ফেরার পরিকল্পনা করেছেন। টিম ম্যানেজমেন্টের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সাকিব দেশে ফিরে ফেয়ারওয়েল টেস্ট খেলার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত। কারণ তিনি কারও ক্ষতি করেননি। বিশ্বের সবাই জানে, দেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সাকিব কোথায় ছিলেন এবং কী করছিলেন।’ সেই অভ্যুত্থানে নিহত এক গার্মেন্টসকর্মীর হত্যা মামলায় সাকিবকে আসামী করা হয়েছে।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও জানান, তাঁর জানা মতে, সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলবেন। ভারতীয় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, সাকিব তাঁর শেষ টেস্ট খেলে ফেললেন কিনা। উত্তরে টাইগার প্রধান কোচ বলেন, ‘এটাই শেষ, আমি এমন কিছু শুনিনি। আমি যেটা জানি, সে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠেয় সিরিজে খেলবে।’

সাকিবের চাওয়াই টিম ম্যানেজমেন্ট ও ক্রিকেটারদের চাওয়া। বিশ্বের অন্যতম সেরা এ অলরাউন্ডারের আনুষ্ঠানিক বিদায় দেখতে চান তারা। সে কারণে গতকাল শেষ বলতে চাননি তিনি। সাংবাদিকদের দেওয়া সম্মাননায়ও বোধ হয় খুশি ছিলেন না। তিনি হয়তো চেয়েছেন মিরপুরেই হোক সবকিছু। দীর্ঘ ১৮ বছর জাতীয় দলকে সার্ভিস দেওয়া সাকিবের বিদায় বলার সিদ্ধান্ত শোনার পর বিস্মিত হয়েছিলেন কোচ।

বাঁহাতি অলরাউন্ডারের উত্তরাধিকার নিয়ে প্রশ্ন হওয়ায় হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমরা সবাই বিস্মিত হয়েছি, যখন সে বলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজই তার শেষ। কারণ সাকিবের মতো কাউকে যে আর পাওয়া যাবে না।’ সাকিব ধাপে ধাপে জাতীয় দল ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও রেকর্ডের বরপুত্র হিসেবে থাকবেন দলের সঙ্গে ছায়া হয়ে।

samakal