ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন (সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট—সিএএস) সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানজি পুকুর লেনের ওয়াইএনটি সেন্টারে মতবিনিময়ের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভারতের নাগরিকত্ব আইন বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। এ সময় তিনি জলদস্যুতার শিকার বাংলাদেশি জাহাজ ও নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি দপ্তরের নেতিবাচক মন্তব্যের বিষয়েও কথা বলেন। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারতের নাগরিকত্ব আইন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা প্রতিবেশী দেশ। সে হিসেবে আমরা বিষয়টির ওপর নজর রাখছি।’
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি দপ্তরের নেতিবাচক মন্তব্য–সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো দপ্তর তাদের মতামত দিতেই পারে। তারা বলেছে, বিরোধী দল অংশগ্রহণ করেনি। বাংলাদেশে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ করা না করাটা, সেটি সরকারের ওপর বর্তায় না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব এবং সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তারা কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক, আমরাও সেটিকে আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একসঙ্গে কাজ করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর প্রায় ৮০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সম্পর্ক দ্বিতীয় পর্যায়ে উন্নীত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। সুতরাং আমাদের বিবেচনায় এ অঞ্চলের নিরিখে অত্যন্ত সুন্দর, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে।’
সোমালিয়ায় জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও ২৩ নাবিককে মুক্ত করে আনার উদ্যোগ সম্পর্কে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের টেলিভিশনে কী দেখাচ্ছে, কী হচ্ছে, সেটা কিন্তু যারা হাইজ্যাক করেছে, তারা দেখছে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল দেখার সুযোগ আছে। যখন এই বিষয়কে অতিগুরুত্ব দেওয়া হয়, জিম্মিদের পরিবারের প্রতিক্রিয়া যখন ওরা দেখে, তখন অপহরণকারীদের অবস্থান আরও অনমনীয় হয় এবং হচ্ছে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য জাহাজসহ নাবিকদের মুক্ত করা। সুতরাং আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্বশীলভাবে যদি আচরণ করি, তাহলে এই পরিস্থিতি উত্তরণ সহজ হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ে সরকার কাজ করছে। অতীতেও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ১০০ দিনের মাথায় একই কোম্পানির জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল। এখনো আমরা আশা করছি, আমাদের যে সমন্বিত প্রচেষ্টা আছে, নাবিকদের মুক্ত করে নিয়ে আসতে পারব।’
রমজান কিংবা ঈদ উপলক্ষে কোনো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ার কোনো কারণ নেই জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে, অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারেন, সে জন্য সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখলাম, মানুষ এ ব্যাপারে আগের তুলনায় অনেক বেশি সোচ্চার হয়েছে। অহেতুক দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর প্রবণতা রোধ করার ক্ষেত্রে মানুষের সোচ্চার হওয়াটা সহায়ক।’
prothom alo