গত কয়েকদিনের আন্দোলনের সূত্র ধরে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ মূলত দুটি সংবাদভিত্তিক টিভি চ্যানেল প্রতি। অভিযোগ, ওই দুটি চ্যানেল তাদের পক্ষের সংবাদ সে অর্থে সম্প্রচার করে না! ফলে তাদের জমায়েতে ওই দুটি চ্যানেলের প্রতিনিধি গেলে সেটার প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে বিভিন্ন সময়ে।
সে হিসেবে এই দুটি টিভি চ্যানেলের দফতর ও কর্তৃপক্ষ বরাবরই সতর্ক অবস্থায় আছে বলে জানা গেছে। অথচ সেই সতর্কতার ফাঁক গলে দেশের একমাত্র সংগীতভিত্তিক টিভি চ্যানেলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো।
রবিবার (৪ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার মধ্যে আন্দোলন থেকে সৃষ্ট সহিংসতায় এই ঘটনা ঘটে। রাজধানীর প্রগতি সরণীতে অবস্থিত ভবনটির বেশিরভাগ ফ্লোরজুড়েই ছিলো চ্যানেলটির স্টুডিও সেটআপ, শুটিং ফ্লোর, সাউন্ড সিস্টেম, এডিটিং প্যানেল, সম্প্রচার যন্ত্রসহ কয়েক কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রাংশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সংগীতশিল্পী কৌশিক হোসেন তাপস।
গানবাংলা ভবনটি আক্রমণ করার সময়য়ের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ৮ থেকে ১০ তলা এই ভবনের বাইরের প্রায় সব গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। এমনটি ভেতরে ঢুকে সকল যন্ত্রাংশ ভেঙে বাইরেও ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ভবনের সামনেই জ্বলছিলো আগুন।
আক্রমণের শিকার সংবাদভিত্তিক চ্যানেল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও কেন সংগীতভিত্তিক একমাত্র টিভি চ্যানেলটি এভাবে ধ্বংসস্তুূপে পরিণত হলো? এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কৌশিক হোসেন তাপস। তিনি এই ঘটনার পর একরকম হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। কারণ দু’দিন আগেই তিনি সোশ্যাল হ্যান্ডেলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছিলেন ফেসবুকের প্রোফাইল ও কাভারে লাল ছবি সংযুক্ত করে।
তবে, এর আগে বর্তমান সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন কৌশিক হোসেন তাপস। তাই নয়, খোদ প্রধানমন্ত্রী তাকে ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত পছন্দ করার নজিরও মিলেছে অনেক ছবি ও ভিডিওতে।
সব মিলিয়ে গানবাংলা কর্তৃপক্ষ তথা সংগীতাঙ্গনের মানুষদের হিসেব মেলাতে কষ্ট হচ্ছে, কেন দেশের একমাত্র সংগীতনির্ভর প্রতিষ্ঠানটি এভাবে ধ্বংস করা হলো, এবং তারা আসলে কারা!
বলা দরকার, এর আগে এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশের প্রধান গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনেও আগুন জ্বালিয়ে দেয় দুষ্কৃতকারীরা।