জামাত নেতা কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ায় পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ

Logo

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে আঠারবাড়ি ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে জামাত নেতা দায়িত্ব পাওয়ায় পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে আঠারবাড়ি ইউনিয়ন ও আঠারবাড়ি ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উদ্যােগে কলেজ চত্বরে ওই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। বিক্ষোভ শেষে ছাত্র লীগের নেতৃবৃন্দরা অধ্যক্ষের রুমে তালা লাগানোর চেষ্টা করে। এসময় সেখানে উপস্থিত থাকা আঠারবাড়ি তদন্ত কেন্দের ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম তা নিষেধ করলে নেতারা তালা লাগানো থেকে সরে আসে।

জানা যায়, উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নে উপস্থিত ঐতিহ্যবাহী আঠারবাড়ি ডিগ্রি কলেজের গত ১০ মে ২০২৩ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পায় অত্র কলেজের সমাজকর্মে সহকারী অধ্যাপক মো. খায়রুল কবীর নিয়োগী। এদিকে অধ্যক্ষ খায়রুল কবীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। এরমধ্যে অন্যতম আলোচনা হলো তিনি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার জামাতে ইসলামের নায়েবে আমির। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাদিক মামলা। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রলীগের ব্যানের কলেজ চত্বরে করা হয় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল। সেই মানববন্ধনে নেতারা অধ্যক্ষ খায়রুল কবীরকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগের দাবি জানান। না হলে আরো কঠিন কর্মসূচী দেবে বলে জানান তারা।

আঠারবাড়ী কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হাসান বলেন, আমাদের কলেজে জামাতে ইসলামের কোন নেতা কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকতে পারবে না। আমরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।

আঠারবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম বলেন, আমরা বেঁচে থাকতে কলেজে স্বাধীনতা বিরোধী কাউকে এমন দায়িত্ব নিতে দেবো না। যারা তার নিয়োগের সাথে জড়িত রয়েছে এবং তাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে তাদের কাউকেই আমরা ছাড় দেবো না।

আঠারবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক উজ্জ্বল হাসান বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে কলেজের এমন দায়িত্ব তা আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি তাকে অপসারণ না করা হয় তাহলে তার রুমে তালা দিয়ে সব বন্ধ করে দেওয়া হবে।

আঠারবাড়ী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে এমন খবর পেয়ে কলেজে গিয়ে সকলের সাথে আলোচনা করে শান্তি শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে সবকিছু শেষ হয়েছে। অধ্যক্ষের রুমে তালা দিতে চেষ্টা করা হয়েছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কিছু ছেলে অধ্যক্ষের রুমে তালা দিতে চেয়েছিলো, এসময় তাদের নিষেধ করলে তারা তালা দেওয়া থেকে বিরত থাকে।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. খায়রুল কবীর নিয়োগী বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত অত্র কলেজেই শিক্ষকতা করে আসছি, এখানে আমি সবচেয়ে সিনিয়র শিক্ষক। তাই জ্যেষ্ঠতা মেনেই কতৃপক্ষ আমাকে নিয়োগ দিয়েছে। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে সুন্দর ভাবে কলেজটাকে পরিচালনা করে আসছি। কলেজের বাহিরের একটা পক্ষ আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ গুলো এনেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। যারা আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তারা কলেজের কোন ছাত্র না তারা সবাই বাহিরের ছেলে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজ কমিটির সভাপতি মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, এবিষয়ে এখন কিছু বলতে পারছি না আমি। বিষয়টি নিয়ে ডিসি স্যারের সাথে আলোচনা করবো।