- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৯ মে ২০২২, ২১:২৯
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে শুরু থেকেই আক্রমণ করছিল লিভারপুল। একের পর এক গোলমুখী শট বাঁচাচ্ছিলেন থিবো কুর্তোয়া। প্রথমার্ধের শেষের দিকে হঠাৎ উল্টো দিকে আক্রমণ। সেই আক্রমণ থেকে জালে বল জড়িয়ে দেন রিয়াল মাদ্রিদের করিম বেঞ্জেমা।
কিন্তু বলটা জালে জড়িয়ে সমর্থকদের দিকে ঘুরে তাকাতেই দেখতে পান সহকারী রেফারি পতাকা তুলেছেন। অফসাইড।
প্রশ্ন তৈরি হয় পেছনে বিপক্ষের দু’জন ফুটবলার থাকতেও কেন অফসাইড দেয়া হলো?
ভিডিও দেখার পরেও অফসাইডের সিদ্ধান্তই বহাল রাখা হয়। হতাশ মুখে মাঠে দাঁড়িয়ে থাকেন বেঞ্জেমা।
কী ঘটেছিল?
শনিবার বেঞ্জেমা গোলের আগের মুহূর্তে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেই সময় লিভারপুলের গোলরক্ষক অ্যালিসন বেশ কিছুটা এগিয়ে ছিলেন। তার পেছনে ছিলেন লিভারপুলের অ্যান্ড্রু রবার্টসন এবং ভার্জিল ভ্যান ডিক। গোলের সামনে ছিলেন রবার্টসন। তার এবং ভ্যান ডিকের মাঝে ছিলেন বেঞ্জেমা। সেই সময় বেঞ্জেমার দিকে বল আসে। সেই বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। অফসাইড দেন সহকারী রেফারি।
বেঞ্জেমার কাছে বল আসার আগে তা লিভারপুলের ফুটবলার ফ্যাবিনহোর পায়ে লাগে। সেই কারণেও অনেকের মনে হয় এটা অফসাইড নয়।
প্রিমিয়ার লিগের প্রাক্তন রেফারি পিটার ওয়াল্টন কী বলছেন?
ওয়াল্টন বলেন, ‘বেঞ্জেমা অফসাইড ছিল। বল যদি তোমার দিকে পাঠানো হয় তা হলে অফসাইড। এখানে ফ্যাবিনহোর পায়ে লেগে বল ঘুরে গিয়েছিল। কিন্তু ফ্যাবিনহো ইচ্ছাকৃত ভাবে বলে পা লাগায়নি। যেহেতু ইচ্ছাকৃত ভাবে বল বেঞ্জেমার কাছে পাঠায়নি তাই বেঞ্জেমাকে অনসাইড বলা যাবে না। সেই কারণেই ভিডিওতে বার বার দেখা হচ্ছিল যে বলটি ইচ্ছাকৃত ভাবে বেঞ্জেমার দিকে পাঠানো হয়েছিল কি না।’
বাংলার প্রাক্তন রেফারি উদয়ন হালদার বললেন, ‘যেহেতু লিভারপুলের গোলরক্ষক এগিয়ে গিয়েছেন তাই গোলের সামনে থাকা লিভারপুলের ডিফেন্ডারকে গোলরক্ষক ধরা হবে। তার সামনে থাকা ডিফেন্ডার এ ক্ষেত্রে হবেন প্রথম ডিফেন্ডার। বেঞ্জেমা সেই প্রথম ডিফেন্ডারের থেকে গোলের দিকে বেশি এগিয়ে রয়েছেন। তাই এই ক্ষেত্রে বেঞ্জেমা অফসাইড।’
নিয়ম কী বলছে?
একজন ফুটবলারকে তখনই অফসাইড বলা হবে, যখন সে বিপক্ষের গোলরক্ষক এবং প্রথম ডিফেন্ডারের মাঝখানে রয়েছে। আক্রমণভাগের ফুটবলারের শরীরের কোনো অংশ প্রথম ডিফেন্ডারের থেকে যদি এগিয়ে থাকে এবং সেই সময় তার দিকে বল বাড়ানো হয় তা হলে সেই আক্রমণ ভাগের ফুটবলারকে অফসাইড ধরা হয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুলের গোলরক্ষক এগিয়ে থাকায় গোলের সামনে থাকা ডিফেন্ডারকে গোলরক্ষক ধরা হয়। সেই হিসাবে বেঞ্জেমা অফসাইড থেকে গোল করেন।
ভিডিওতে বার বার দেখার চেষ্টা হয় বেঞ্জেমা সত্যিই এগিয়ে ছিলেন কি না। রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবলাররা বার বার রেফারির সাথে কথা বলতে থাকেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানিয়ে দেয়া হয় বেঞ্জেমা অফসাইড ছিলেন।