ভারত তো বটেই, অনেকের চোখে এ মুহূর্তে ক্রিকেট–দুনিয়ারই সেরা বোলারের নাম যশপ্রীত বুমরা। সেরা হওয়ার আবার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে, দল অনেক ক্ষেত্রে তাঁর প্রতি অতি–নির্ভর হয়ে পড়ে। না খেললে দল ভোগান্তিতে পড়ে। যেমনটা সদ্য সমাপ্ত শ্রীলঙ্কা–ভারত ওয়ানডে সিরিজে দেখা গেল আরেকবার।
বুমরাকে বিশ্রামে রেখে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নেমে ভারত হেরেছে ২–০ ব্যবধানে। একবিংশ শতাব্দীতে এটিই শ্রীলঙ্কার কাছে ভারতের প্রথম সিরিজ হার। প্রশ্ন উঠেছে, বুমরা না থাকাতেই ভুগেছে রোহিত শর্মার দল। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার জুনাইদ খান তো বুমরা ছাড়া ভারতের বোলিং কিছুই নয় বলেও মন্তব্য করেছেন।
জুনাইদের এই ভাবনা যে পুরোটাই অমূলক, তা নয়। সেটা অবশ্য বুমরার নিজের পারফরম্যান্সের কারণে। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বুমরা কী করেছেন, সেটা নিশ্চয়ই ভোলেননি। ফাইনাল থেকে পেছনের দিকে যেতে যেতে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ পর্যন্ত চোখ রাখলে ভারতের প্রতিটি ম্যাচের পারফরমারদের ভিড়ে শুধু একটা নামই কমন—বুমরা। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার ৩০ বলে প্রয়োজন ছিল ৩০ রান, হাতে ছিল ৬ উইকেট—এমন পরিস্থিতি থেকে ভারতকে ম্যাচ জেতাতে পারতেন শুধু বুমরাই।
শেষ পর্যন্ত তিনিই জেতান ভারতকে। রূপক অর্থে বললে বিশ্বকাপ ট্রফিটা এইডেন মার্করামের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে এসে বুমরা তুলে দিয়েছেন রোহিত শর্মার হাতে। সব মিলিয়ে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২৯.৪ ওভার বোলিং করে বুমরা ১৫ উইকেট নিয়েছেন। মানে ১৭৮টি বল করে ১২৪ রান দিয়েছেন। ইকোনমি ৪.১৭। ওয়ানডে ক্রিকেট আর বাজবলের দুনিয়ার টেস্ট ক্রিকেটেও যা দুর্দান্ত বলে বিবেচিত হওয়ার মতো।
ভারতকে বিশ্বকাপ জেতাতে বড় ভূমিকা রাখা বুমরা এখন আছেন বিশ্রামে। অনেক বছর ধরেই মূলত বেছে বেছে বুমরাকে খেলায় ভারত। বুমরাহীন ভারতীয় বোলিং বিভাগকে শ্রীলঙ্কা সিরিজে সামলেছেন মোহাম্মদ সিরাজ, ওয়াশিংটন সুন্দর, কুলদীপ যাদবরা। সুন্দর, কুলদীপরা ভালো বোলিং করলেও সিরাজ, অর্শদীপরা কিছুই করতে পারেননি।
ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন কন্ডিশনে এ দুই পেসারই রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ৬ রানের বেশি করে। উইকেট নিয়েছেন দুজন মিলে মাত্র ৫টি; সিরাজ ৩টি, অর্শদীপ ২টি। এই সিরিজে শ্রীলঙ্কার পেসাররাও উইকেট পেয়েছেন মাত্র ৩টি। তবে এই স্পিনসহায়ক উইকেটেও যে বুমরার কাটার, স্লোয়ার বেশ কার্যকরীই হওয়ার কথা।
জুনাইদ এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘বুমরা ছাড়া ভারতের বোলিং জিরো। আপনি কি একমত?’
prothom alo