চট্টগ্রাম বন্দর দখলে নিতে হবে

বিশেষ প্রতিনিধি, কলকাতা
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ০৪
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ১১

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ‘আবার মহান করে তোলার’ আহ্বান জানিয়ে টিপ্রা মোথা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রদ্যোত বিক্রম মাণিক্য দেববর্মা একটি বিতর্কিত প্রস্তাব দিয়েছেন। যার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে।

তিনি বলেছেন, ভারতের উচিত চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল এবং আমাদের পুরোনো জমি ফিরিয়ে নেওয়া। তিনি মনে করেন, কৃত্রিম সীমানা তৈরি করা হয়েছে এবং যদি রাজনৈতিক সীমানা এখনই তৈরি করা না যায়, তবে একটি সাংস্কৃতিক সীমানা তৈরি করা উচিত।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রদ্যোত দেববর্মা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেন। ইউনূস বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত ভূমিবেষ্টিত। এর জবাবে দেববর্মা বলেন, ইউনূসের এ ধারণাকে ভুল প্রমাণ করতে হবে এবং এজন্য চট্টগ্রাম বন্দর দখল আমাদের অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য।

ত্রিপুরার সাবেক রাজপরিবারের এ বংশধর ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান কীভাবে সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল এবং ত্রিপুরা কীভাবে ভারতে অন্তর্ভুক্তির চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, সে কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বৃহত্তর ত্রিপুরাল্যান্ড হবে যখন আমরা সবাই একসঙ্গে হয়ে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে ঠুকব এবং চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের আমাদের পুরোনো জমি ফিরিয়ে নেব। এ সীমানাগুলো কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। আমাদের মানুষরা ওপারে থাকে। রাজনৈতিক সীমানা তৈরি না করে একটি সাংস্কৃতিক সীমানা তৈরি করো। ইউরোপ কী করেছে দেখুন? তারা একটি ইস্ট তিমুর তৈরি করেছে।

তিনি আরো বলেন, তুমি গণভোটের কথা ভাবছ? তুমি ইউক্রেনের কথা ভাবছ যেখানে গণভোট হয়েছে? এমন কিছু হয় না। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য কি কোনো গণভোট হয়েছিল? শাসন পরিবর্তন খুব স্পষ্ট। এটা হয়, একটি ডিপ স্টেট কাজ করে।

প্রদ্যোত দেববর্মা ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতে চলমান কিছু সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের একটি শক্তিশালী নেতৃত্ব দরকার এবং এমন নেতৃত্ব দরকার, যারা এ অঞ্চলটিকে আগামী ২০ বছর পর কীভাবে দেখাবে, তা ভাববে। আরাকান সেনাবাহিনী বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে। রোহিঙ্গা সমস্যা আছে। এ অঞ্চলে অনেক কিছু ঘটছে। সবাই আমাদের প্রতিবেশী আর মণিপুরে কী ঘটছে? মিয়ানমার থেকে মানুষ আসছে। এগুলো সবই বৃহত্তর ভূরাজনীতির অংশ। আমরা রাজনীতি রাজনীতি খেলছি। আমাদের দরকার একটি দৃঢ় হাত।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, যদি উত্তর-পূর্বাঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকতে চায়, তবে মুহাম্মদ ইউনূসকে ভুল প্রমাণ করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য। শুধু ত্রিপুরার জন্য নয়, পুরো উত্তর-পূর্বের জন্য।

টিপ্রা মোথা পার্টির প্রধান আরো দাবি করেন, বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র এবং আমাদের উসকানি দিচ্ছে। চাকমারা বৌদ্ধ। জাপান, চীন, পূর্বের প্রজাতন্ত্রগুলো আমাদের সমর্থন দেবে। ত্রিপুরা, গারো, খাসিয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক খ্রিস্টান, হিন্দু আছে, তাই পশ্চিমে কোনো সমস্যা হবে না।

বৃহত্তর ত্রিপুরাল্যান্ড টিপ্রা মোথার একটি আদর্শিক দাবি। এটি প্রথমে একটি এনজিও হিসেবে শুরু হয়েছিল এবং পরে ২০২১ সালে একটি রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here