গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ডামি আওয়ামী সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকে আছে, এই অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক বিবৃতিতে তিনি গুমের ঘটনা বন্ধে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল এক বিবৃতিতে ওই বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। তিনি দেশে গুমের অভিযোগগুলোর ব্যাপারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি শুনানির আয়োজন করার দাবিও জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৬৬ জন ব্যক্তি গুম হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার বরাত দিয়ে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এই গুম হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কাউকে মৃত, কাউকে অনেক দিন পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে; আবার অনেকের কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।
অনেক দিন ধরে গুমের শিকার ব্যক্তিদের এই সংখ্যা তুলে ধরছে বিএনপি। আর গুমের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে সরকার।
বিএনপির কয়েকজন নেতার গুম হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ উপলক্ষে আমরা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই, অবিলম্বে এম ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, চৌধুরী আলম, হুমায়ুন পারভেজ, সাজেদুল ইসলাম সুমন, জাকিরসহ গুম হয়ে যাওয়া অসংখ্য নেতা–কর্মীকে ফিরিয়ে দিতে হবে।’ তিনি এ-ও বলেন, ‘আমি মনে করি, ভুক্তভোগী বা তাঁদের পরিবারকে আইনি ও নৈতিক সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি শুনানির আয়োজন করা প্রয়োজন।’
বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব বলেন, গণবিচ্ছিন্ন সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ও ভিন্ন মতের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এখন চরম সংকটাপন্ন। দেশের মানুষকে বাক্রুদ্ধ করার জন্য একের পর এক কালো আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘জোরপূর্বক গুমকে অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়ে এরা দেশকে এক ভীতিকর জনপদে পরিণত করেছে। একচ্ছত্র ক্ষমতা ধরে রাখতে ডামি সরকার গুমের মতো মনুষ্যত্বহীন পন্থায় বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার সর্বাধিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশে গুমের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রতিবাদী হলেও আওয়ামী সরকার কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একদিকে সমাজ ও রাজনীতিতে মাফিয়াদের উত্থান; অন্যদিকে গণতন্ত্রকামী মানুষ জোরপূর্বক গুমের আতঙ্কে দিনরাত উদ্বিগ্ন থাকছে। সবার চোখের সামনে থেকে ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গুম করা হলেও আওয়ামী লীগ সরকার বরাবরই গুমের বিষয়টি সব আন্তর্জাতিক ফোরামে নির্লজ্জের মতো অস্বীকার করে আসছে। অথচ বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে এর সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।’
prothom alo