গণভবনের জায়গায় গণহত্যা মিউজিয়াম তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তারেক রহমান এই ঘোষণা দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ষড়যন্ত্র কিংবা অপপ্রচার চালিয়ে গত ১৫ বছরের অনাচার অবিচার জনগণকে ভুলিয়ে দেওয়া যাবে না। রাষ্ট্রীয় স্থাপনা গণভবন ছিল বা দেশের রাষ্ট্র ও রাজনীতির ঐতিহ্যবাহী স্মারক। গণভবন বা বর্তমানে স্বৈরাচারী হাসিনার দুর্নীতি দুঃশাসন, অনাচার, অপকর্মের প্রতীক। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে এই গণভবনকে গুম খুন অপহরণ এবং গণহত্যার মিউজিয়াম হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি উঠেছে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে শহীদ এবং গুম হওয়া মানুষদের স্মৃতিগুলো এই মিউজিয়ামে সংরক্ষিত থাকবে। অবৈধ ক্ষমতায় থাকার জন্য বাংলাদেশে আর কোনো শাসক যাতে হাসিনার মতো বর্বরোচিত পথ অনুসরণ না করে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই মিউজিয়াম সেই বার্তাই বহন করবে।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের দল বিএনপি মনে করে, জনগণের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য রাষ্ট্র ও রাজনীতি সংস্কারের বিকল্প নেই। দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রমগুলো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে হলে সেটি বেশি কার্যকর বলেও জনগণ বিশ্বাস করে। গণতান্ত্রিক বিশ্বেও এটি স্বীকৃত।’
তিনি বলেন, রাষ্ট্র, রাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ সব ক্ষেত্রে দেশকে এক নৈরাজ্যকর অবস্থায় রেখে হাসিনা পালিয়েছে। দেশকে ঋণনির্ভর, আমদানিনির্ভর, পরনির্ভর রেখে হাসিনা পালিয়েছে। শুধু একজন হাসিনাই পালিয়ে যায়নি। তার বিনা ভোটের মন্ত্রিসভা, বিনা ভোটের সব এমপি, এমনকি তাদের নিয়োগ দেওয়া বায়তুল মোকাররমের খতিব পর্যন্ত পালিয়েছে। দেশের এমন নজিরবিহীন ভয়ানক পরিস্থিতি অতিক্রম করে জনগণ এখন সম্মান এবং সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে চায়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র সংস্কারকে কার্যকর করতে হলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি এবং কার্যক্রমেও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয়টিও উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। সে লক্ষ্যে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি দলীয় রাজনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বিএনপি সকল মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা; ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন; রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সমন্বয় করা; পরপর দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন না করা; ‘উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাসহ রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছে।
এসময় তারেক রহমান তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করা, প্রতিশোধপরায়ণ না হওয়া, নিজের হাতে আইন তুলে না নেওয়া, কেউ যাতে হয়রানিমূলক হামলা-মামলার শিকার না হন, সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান।
samakal