গণতন্ত্র হত্যাকারীদের দ্বারা গণতন্ত্র উদ্ধার অসম্ভব : খন্দকার মোশাররফ

Daily Nayadiganta (নয়া দিগন্ত) : Most Popular Bangla Newspaper

গণতন্ত্র হত্যাকারীদের দ্বারা গণতন্ত্র উদ্ধার অসম্ভব : খন্দকার মোশাররফ – ছবি : নয়া দিগন্ত

যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তাদের হাত দিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার সম্ভব নয় মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, লুটপাটের রাজনীতির জন্য দেশের অর্থনীতি শেষ হয়ে গেছে।

রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব স্মরণসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরাম নামে একটি সংগঠন এ স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশে রিজার্ভ কত আছে তা মানুষ জানতে পারছে না। রিজার্ভ থেকে ঋণ নেয়ার কোনো নিয়ম নেই। রিজার্ভ থেকে ঋণ নিয়ে দেশ চালাচ্ছে। মেগা প্রজেক্টে তারা তাদের দেনা পরিশোধ করছে। কিন্তু সেইটা হিসাবে আনা হচ্ছে না। এটাকে রিজার্ভ দেখিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে হিসাব মিলিয়ে দিচ্ছে। তারপর এখন অঙ্ক মিলাতে পারছে না। যদি তাদের রিজার্ভের গল্প সত্য হয়ে থাকলে তাহলে কেনো লিকুইড গ্যাস আনতে পারছে না। কেনো ব্যাংক গুলোতে এলসি করতে গেলে এলসি করতে পারছে না।

তিনি বলেন, সরকার মানুষকে না জানিয়ে উচ্চহারে সুদে ঋণ নিয়েছে, শুধু তাদের নিজস্ব স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য। ঋণ পরিশোধের সময় এসে গেছে এবং তখনই ধরা পড়ে যাবে সরকার ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না।

প্রয়াত অধ্যাপক এমাজ উদ্দিনকে স্মরণ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, অধ্যাপক এমাজউদ্দিনকে হারিয়ে গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক এবং জাতীয়তাবাদী শক্তি তাদের অভিভাবককে হারিয়েছে। আমরা একজন সুপরামর্শককে হারিয়েছি। তার সারা জীবনের চর্চা ছিল গণতন্ত্র।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা। যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তাদের হাত দিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব নয় এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। সরকার তাদের লোকজন এজেন্ট লাগিয়ে দিয়েছে এটা বিশ্বাস করানোর জন্য।

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, সরকার মানুষকে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করছে যে তাদের হাত দিয়েই নাকি একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। কিন্তু তারাই তো গণতন্ত্র চুরি করেছে ডাকাতি করেছে। আগামীতে ইভিএম এর মাধ্যমে কারসাজি করে এ সরকার আবার ক্ষমতায় থাকতে চায়।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে শুধু লুটপাটের রাজনীতির জন্য আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি একটা বিপর্যয়ের মুখে। কেন? এই বাংলাদেশে যারা ক্ষমতায় তারা যেহেতু গণতান্ত্রিক নয়। তারা যেহেতু গায়ের জোরে ক্ষমতায় দিনের ভোট রাতে করার সরকার তাদের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা নেই।

আজকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সংকট শ্রীলঙ্কার চেয়ে কম নয় মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, শ্রীলঙ্কার মত মেগা প্রজেক্ট করে বাংলাদেশ মেগা লুটপাট চলছে। এবং সেই মেগা দুর্নীতিকে হালাল করার জন্য ঢাক-ঢোল পিটিয়ে মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার বিদ্যুৎ উৎসব করে বলে লোডশেডিংকে আমরা জাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন নিজেই জাদুঘরে যাওয়ার সময় এসেছে তার (সরকারের)। সরকার একটার পর একটা মিথ্যা কথা বলে চলেছে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার এখনই সময়।

বিএনপির সিনিয়ী যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাষ্ট্র বলে আসলে কিছু নেই। যে রাষ্ট্র অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদকে মিথ্যা মামলা দিতে পারে, সেরকম একটা রাষ্ট্রে আমরা বসবাস করছি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।