ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগামী নির্বাচনে যদি খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসেন, তাহলে তিনি ‘বিষ খেয়ে আত্মহত্যা’ করবেন। নির্বাচনে জনগণ নৌকায় ভোট না দিলে সেটি ‘জাতির জন্য বেইমানি’ হবে বলে মনে করেন তিনি।
গতকাল শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের ভুটিয়ারকোনা গ্রামে নারীদের নিয়ে এক উঠান বৈঠকে এসব কথা বলেন নাজিম উদ্দিন আহমেদ। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরতে এই উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
বক্তব্যের একপর্যায়ে সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমার কোনো সহায় সম্বল নাই, ব্যাংকে কোনো টাকাপয়সা নাই। এ দেশে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধে রক্ত দিয়েছে, তাঁদের মনের আশা, ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানে। আত্মারা যদি আপনাদের কাছে দাবি করে, নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য, যদি আপনারা নৌকায় ভোট না দেন, তাহলে জাতির জন্য বেইমানি হবে। তাই আপনাদের কাছে দাবি করব, আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে আরেকবার সুযোগ দেন, যাতে এ দেশে রাজাকার আলবদরেরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে না পারে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিভিন্ন অপরাধের কথা উল্লেখ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তারাই যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তাহলে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আপনাদের সামনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করব। যদি শুনতে পারি নৌকা হেরে গিয়েছে, ক্ষমতায় এসেছে খালেদা জিয়া, তাহলে আমি আর বেঁচে থাকতে চাই না। কারণ, এ বেঁচে থাকার আর মূল্য নাই।’
ময়মনসিংহ–৩ আসনের দুবারের সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমার এই হাতে অস্ত্র ধরেছিলাম, দেশ স্বাধীন করেছিলাম। এরপরও যদি আবার হায়েনারা ক্ষমতায় আসে, তাহলে আমি মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে থেকে লাভ কী? তাই আপনাদের কাছে আকুল আবেদন আগামী নির্বাচনে আপনারা নৌকায় ভোট দেবেন। আমি দুইবার এমপি হয়েছি। আগামী নির্বাচনে আবার চাই শেখ হাসিনা যেন আমাকে নৌকা দেন। আপনারা শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন।’
নিজের এমন বক্তব্যের বিষয়ে আজ শনিবার দুপুরে সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বক্তব্যে মূলত আমি আমার অনুভূতি প্রকাশ করেছি। স্বাধীন দেশে স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় এসেছে। সেটা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আমি আমার আক্ষেপ প্রকাশ করেছি। স্বাধীনতাবিরোধীরা যখন গাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে চলাচল করে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এটা আমার জন্য আত্মহত্যার শামিল।’