খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফ্র্যাঞ্চাইজিরা

খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফ্র্যাঞ্চাইজিরাছবি- সংগৃহীত

বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগ বিসিবির বিরুদ্ধে পুরোনো। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন কম হয়নি। বিসিবি কর্মকর্তাদের ইগোর সঙ্গে পেরে না ওঠায় দেশের নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলো বিপিএল থেকে সরে গেছে। আগ্রহ হারাচ্ছে বর্তমান ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অনেকে।

বৈশ্বিক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে না পারা, বিসিবির উপেক্ষা, রাজস্বের ভাগ না দেওয়া, বাণিজ্যিকভাবে অলাভজনক হওয়ায় নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ার এ মানসিকতা ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। তারা মনে করে এভাবে চলতে থাকলে এক-দুই মৌসুম পরই সাদামাটা টুর্নামেন্টে পরিণত হবে বিপিএল। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে বিসিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বেক্সিমকো লিমিটেড, জেমকন গ্রুপ, ওরিয়ান গ্রুপ কয়েক মৌসুম পরই বিপিএল থেকে সরে গেছে বিসিবি রাজস্ব ভাগাভাগি করতে রাজি না হওয়ায়। প্রথম দিককার ফ্র্যাঞ্চাইজি আলিফ গ্রুপ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অসম্মানিত বোধ করায়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও রেভিনিউ শেয়ার ইস্যুতে কম লড়াই করেনি। এ পরিস্থিতিতে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলকে ফ্র্যাঞ্চাইজি টানতে নির্ভর করতে হচ্ছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ওপর। এই দুরবস্থার মধ্যে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সামনে নতুন সমস্যা বিদেশি ক্রিকেটার দলে টান। বিশেষ করে এক সপ্তাহ পিছিয়ে ১৯ জানুয়ারি থেকে টুর্নামেন্ট শুরুর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে তাদের।

 

১৯ জানুয়ারি থেকে বিপিএল শুরু। একই দিন মাঠে গড়াবে আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি২০। ১৭ ফেব্রুয়ারি গিয়ে শেষ করবে তারা। ১০ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি মাঠে থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ টি২০ লিগ। পিএসএল শুরু ১৩ ফেব্রুয়ারি। এই চারটি লিগের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো আর্থিক সক্ষমতা বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের নেই। মানের দিক থেকেও বৈশ্বিক ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের তালিকার তলানিতে বিপিএল।

বিসিবি কর্মকর্তারাও এখন তা স্বীকার করেন। বর্তমান বাস্তবতায় বিপিএলে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ফরচুন বরিশালের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিদেশি ক্রিকেটার নেওয়ার ক্ষেত্রে সবাইকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ক্রিকেটার পাওয়া যাচ্ছে না। বিপিএলের মান পড়ে যাওয়ায় ভালো মানের বিদেশি আসতে চায় না। এভাবে এক লিগ থেকে আরেক লিগে এক-দুই ম্যাচের জন্য খেলোয়াড় আনতে গেলে বাজেট ফেল করে। এই পরিস্থিতিতে সহযোগী দেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে খেলতে হতে পারে।’

বিদেশি ক্রিকেটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কোনো সংখ্যা বেঁধে দেয়নি বিসিবি। আবার ন্যূনতম দু’জন বিদেশি খেলানোর নিয়ম করার অর্থ হলো– বিসিবিও বুঝে গেছে বিপিএল বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েছে আগেই। সাবেক ও বর্তমান ফ্র্যাঞ্চাইজিরা মনে করেন, এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে ঘরোয়া ক্রিকেটারদের টুর্নামেন্টে পরিণত হতে পারে বিপিএল।

samakal