কার ঘরে যাবে তৃতীয় বিশ্বকাপ

  • রফিকুল হায়দার ফরহাদ, কাতার থেকে
  •  ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ২২:৪৮
কার ঘরে যাবে তৃতীয় বিশ্বকাপ। – ছবি : সংগৃহীত

পরপর দুই বিশ্বকাপ জেতা দেশ মাত্র দুটি। ইতালী এবং ব্রাজিল। ইতালী ১৯৩৪ সালে বিশ্বকাপ জিতে ১৯৩৮ সালে তা ধরে রাখে। ব্রাজিল তাদের অনুসরণ করে ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে। ফ্রান্সের সুযোগ পরপর দুই বিশ্বকাপ জিতে ইতালী ও ব্রাজিলের সমকক্ষ হতে।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) কাতারের দোহার সবচেয়ে বড় বিশ্বকাপ ভেন্যু লুসাইল স্টেডিয়ামে হুগো লরিচ, কিলিয়ান এমবাপ্পেরা ম্যাচ শেষে উল্লাসে মেতে উঠলে তাদের হবে টানা দ্বিতীয় ট্রফি। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার মিশন ট্রফি পুনরুদ্ধারের। তবে দুই দেশের যে দলের অধিনায়কের হাতেই শিরোপাটা উঠুক না কেন তা হবে তাদের তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়। এখন দেখার অপেক্ষা কোন দলের জেতা হবে ফুটবল দুনিয়ার সবচেয়ে বড় এই চ্যাম্পিয়নশিপ। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে এই ম্যাচ। চ্যাম্পিয়ন দল ৪২ মিলিয়ন ডলার এবং রানার্সআপ পাবে ৩০ মিলিয়ন ডলার। চ্যাম্পিয়নশিপের এই প্রাইজমানি রাশিয়া বিশ্বকাপের চেয়ে চার মিলিয়ন ডলার বেশি। সাথে ফাইনাল জেতা দলের দখলে যাবে গোল্ড প্লেটেড ব্রোঞ্জ রেপলিকা বিশ্বকাপের ট্রফি। ছয় কেজি ওজনের এই ট্রফিতে আছে ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ।

কাতারই শেষ বিশ্বকাপ লিওনেল মেসির। গ্রেট এ ফুটবলারের বিদায়টা যেনো শিরোপা উৎসবে হয় প্রত্যাশা করছেন সব গ্রেট ফুটবলারও। জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবলার ইর্য়ুগান ক্লিন্সম্যান, পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোসহ সবারই চাওয়া আর্জেন্টাইন অধিনায়কের হাতে উঠুক ট্রফি। সাবেক মহা তারকা ফুটবলারদের সাথে সারা বিশ্বের ফুটবল ভক্তদেরও চাওয়া তাই। তাহলে তিনি এই অর্জনে দিয়েগো ম্যারাডোনার সমকক্ষ হতে পারবেন। অন্যদিকে কিলিয়ান এমবাপ্পে, হুগো লরিচ, অলিভার জিরুর্ডদের সুযোগ টানা দ্বিতীয় বারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের দারুণ কীর্তি গড়ার। আর দেশ্যামস হবেন দ্বিতীয় বারের মতো দেশকে বিশ্বকাপ এনে দেয়া কোচ। (যা তিনি করেছিলেন ১৯৯৮ সালে অধিনায়ক হিসেবে)। অন্য দিকে লুইস সিজার মেনোত্তি এবং কার্লোন বিলার্ডোর পর বিশ্বকাপে সফল কোচ হওয়ার সুযোগ আর্জেন্টিনার লিওনেল স্ক্যালোনির সামনে।

ফিফা র‌্যাংকিংয়ের দোহাই দিয়ে কোনো দলকেই পেছনে রাখার সুযোগ নেই। আলবিসেলেস্তেরা আছে তিন নম্বরে। আর লেস ব্লুজদের অবস্থান চারে। দুই দলের পারস্পরিক মোকাবেলায় আর্জেন্টিনার জয়ের পাল্লাটা ভারী। ফ্রান্সের তিন জয়ের বিপরীতে আর্জেন্টাইনদের জয় ৬ ম্যাচে। বাকি তিন ম্যাচ ড্র। বিশ্বকাপেও উভয়ের পারস্পরিক মোকাবেলায় জয়ে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। তাদের জয় দু`বার, আর ফ্রান্সের এক বার। ১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে ০-১ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। ১৯৭৮ সালেও আর্জেন্টিনার ২-১ গোলে জয়। তবে সর্বশেষ মোকাবেলায় জয়টা ফরাসিদের জন্য অনুপ্রেরণা আর আর্জেন্টিনার জন্য ভয়ের। রাশিয়া বিশ্বকাপে ইউরোপিয়ান দেশটি ৪-৩ গোলে হারিয়েছিল ল্যাটিন আমেরিকার দেশটিকে। ১৯৭১ সালের ফিফা প্রীতি ম্যাচেও ফ্রান্স ৪-৩ গোলে পরাজিত করেছিল আজকের ফাইনালের প্রতিপক্ষকে। তাদের বিপক্ষে আর্জেন্টাইনদের সর্বশেষ জয় ২০০৯ সালের ফিফা প্রীতি ম্যাচে। ২-০ গোলে শেষ হাসি ছিল তাদের।

কাতার বিশ্বকাপে এদের কেউ অপরাজিত থেকে খেলার মর্যাদা পাচ্ছে না। দু`দলেরই হার গ্রুপ পর্বের খেলায়। মেসিরা হেরেছিল সৌদি আরবের কাছে। এমবাপ্পেদের পরাজয়টা তিউনিসিয়ার কাছে। এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা যে প্রতিপক্ষকে হারাতে ঘাম ঝরিয়েছে তাদের অবলীলায় হারিয়েছে দিদিয়ের দেশ্যামসের দল। লিওনেল স্ক্যালোনির দল ২-১ গোলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতলেও ফরাসিরা তাদের ৪-১ এ উড়িয়ে দেয়। গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনা ২-০ তে পোল্যান্ডকে হারালেও ফ্রান্স তাদের দ্বিতীয় রাউন্ডে ৩-১ গোলে পরাজিত করে। গ্রুপ পর্বে মোট ৫ গোল দিয়ে আর্জেন্টিনা হজম করেছিল ২ গোল। সেখানে ফ্রান্স ৬ গোল দিয়ে খেয়েছিল ৩টি। ফাইনালে আসার আগ পর্যন্ত ফ্রান্স মোট ১৩ গোল দিয়ে খেয়েছে ৫ গোল। আর্জেন্টিনা ১২ গোল দিয়ে নিজেদের জালে বল যেতে দেখেছে ৫ গোল।