- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ নভেম্বর ২০২২, ২২:০৭, আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২২, ২২:৪২
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শুরু হলো ফিফা বিশ্বকাপ-২০২২। স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডরের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠলো সবচেয়ে জনপ্রিয় বৈশ্বিক এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার।
রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় শুরু হয়েছে ম্যাচটি। এর আগে বিশ্বকাপ উপলক্ষে বিশ্ববাসীকে জমকালো একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপহার দেয় কাতার।
গ্রুপ-এ‘র দুই দলের ম্যাচটির মাধ্যমে মাঠে গড়াবে মাসব্যপী বিশ্বকাপের জমাট লড়াই। এই প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ হিসেবে কাতারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে কাতারের এটি প্রথম অংশগ্রহণ। স্বাগতিক হিসেবে কাতার সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
অন্যদিকে আট বছর পর বিশ্বকাপে ফিরেছে ইকুয়েডর। কাগজে কলমে কাতারের থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছে ইকুয়েডর। যে কারণে ম্যাচটিতে জয়ের সম্ভাবনায়ও এগিয়ে রয়েছে সফরকারীরা।
দক্ষিণ আমেরিকান বাছাইপর্বে কঠিন চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে চতুর্থ স্থান লাভ করেছিল ইকুয়েডর। এমনকি ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে বাজিকরদেও কাছে এগিয়ে রয়েছে ইকুয়েডর। এক্ষেত্রে বাজির অনুপাত ৭/৫।
কিন্তু স্বাগতিক হিসেবে ঘরের মাঠের বাড়তি সুবিধা পেতে পারে কাতার। ইতিহাস বলছে, বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে এ পর্যন্ত কোনো স্বাগতিক দল পরাজিত হয়নি। ১৯৭৮ সালের পর বিশ্বকাপে উদ্বোধনী কোনো ম্যাচ গোল শূন্যভাবে শেষ হয়নি।
ইতিহাস ছাড়াও মাঠের লড়াইয়েও বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে কাতার। স্বাগতিকরা এ পর্যন্ত টানা পাঁচ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে। সেপ্টেম্বরে চিলির সাথে ২-২ গোল করার পর একে একে কাতার হারিয়েছে গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস, পানাম ও আলবেনিয়াকে। এসবই কাতারকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে।
গত পাঁচ বছর ধরে স্প্যানিশ কোচ ফেলিক্স সানচেজ বাসের অধীনে কাতার নিজেদের ধীরে ধীরে প্রস্তুত করেছে। তবে বিশ্বকাপের মতো এত বড় আসরে অতীতে খেলার অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেক কিছুতেই তাদের মানিয়ে নেয়াটাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গ্রুপ-এ‘র অন্য দুটি দল হচ্ছে সেনেগাল ও নেদারল্যান্ড। কাতারের লক্ষ্য স্বাগতিক হিসেবে নিজেদের সেরাটা দিয়ে যতটা সম্ভব সবাইকে আকৃষ্ট করা ও ভাল খেলা উপহার দেয়া।
আফ্রিকান নেশন্স কাপ বিজয়ী সেনেগাল ও ২০১০ বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট নেদারল্যান্ডকে মোকাবেলা করা বিশ্বেও ৫০তম র্যাঙ্কধারী দলটির পক্ষে কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যায়। কিন্তু অক্টোবরের চারটি প্রীতি ম্যাচের জয় কাতারকে দারুন আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। শেষ ম্যাচে আলবেনিয়ার বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করেছিলেন তারকা স্ট্রাইকার আলমোয়েজ আলি। দেশের হয়ে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪২ গোল করেছেন আলি।
২০০২ সালে ওই সময়কার চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে সেনেগাল উদ্বোধনী ম্যাচে অভিষিক্ত দল হিসেবে যে রেকর্ড গড়েছিল তার পুনরাবৃত্তি করতে চায় কাতার। একইসাথে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় স্বাগতিক হিসেবে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়ে ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ডটা স্পর্শ করতে চায় না মেরুনরা। কালকের ম্যাচে জিততে পারলে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)-এর একমাত্র দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচে জয়ে ইতিহাস গড়বে কাতার।
বল মাঠে গড়নোর আগে বিশ্বজুড়ে অভিবাসী শ্রমিকদের নায্য পাওনাসহ অন্য আরো কিছু ইস্যুতে কাতারকে নিয়ে অসংখ্য সমালোচনা হয়েছে। তবে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে ইকুয়েডরও। বাছাইর্বে অবৈধ খেলোয়াড় খেলানোর অভিযোগে রয়েছে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে। যদিও শেষ পর্যন্ত ওই অভিযোগের কোনো সত্যতা মিলেনি।
বিশ্বকাপের আগে প্রীতি ম্যাচে খেলে পাঁচটি ম্যাচের কোনটিতেই কোনো গোল হজম করেনি ইকুয়েডর। শনিবার সর্বশেষ ইরাকের বিপক্ষে গোলশুন্য ড্র করেছে। দুই বছর আগে দলের দায়িত্ব পাওয়া আর্জেন্টাইন কোচ গুস্তাভো আলফারোর অধীনে এভাবেই পুরো ইকুয়েডর বিশ্বকাপের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করেছে।
কাতার এর আগে তিনবার ইকুয়েডরের বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলেছে যার মধ্যে একটিতে জয়, একটি ড্র ও একটি পরাজিত হয়েছে। আলবেনিয়ার বিপক্ষে শেষ প্রীতি ম্যাচে এ্যাটাকার আহমেদ আয়েলদিন ইনজুরিতে পড়ে ২৬ মিনিটে মাঠ ছাড়েন। এই একটি ইনজুরি ছাড়া আপাতত কোনো ঝুঁকি নেই কাতার শিবিরে। যদিও কাতারের মেডিক্যাল টিম আশ্বস্ত করেছন আয়েলদিনের ইনজুরি ততটা গুরুতর নয়।