- আবুল বাশার হাটহাজারী (চট্টগ্রাম)
- ২০ আগস্ট ২০২১
হেফাজতে ইসলামের আমির হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষা পরিচালক আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে হাটহাজারী মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে হাটহাজারী মাদরাসার কবরস্থান ‘মাগবারায়ে জামেয়ায়’ হেফাজতের সাবেক আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কবরের পাশেই জুনায়েদ বাবুনগরীর লাশ দাফন করা হয়।
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
আল্লামা বাবুনগরীর জানাজা পড়ান হেফাজতের প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। জানাজায় অংশগ্রহণ করেন ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুল ইসলাম, বেফাকের সভাপতি ও হাইয়াতুল উলইয়ার চেয়ারম্যান মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির আল্লামা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদি, মাওলানা আব্দুল হালীম মধুপুরী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মুফতি মুহাম্মদ আলী, মুফতি হুমায়ুন হুমায়ুন আইয়ুব, মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ, সাইমুম সাদী, ড. এনায়াতুল্লাহ আব্বাসীসহ বিভিন্ন দলের কেন্দ্রীয় ও চট্টগ্রাম মহানগর, জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দসহ লক্ষাধিক মানুষ।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তিনি অসুস্থতা অনুভব করেন এবং সকাল ১০টায় অবস্থার অবনতি হলে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাবুনগরীকে নগরীর সিএসসিআর হসপিটালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১২টার দিকে সেখানেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
পৌনে তিনটার দিকে জুনাইদ বাবুনগরীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স হাটহাজারী মাদরাসায় আনা হয়। লাশের গাড়ি মাদরাসায় পৌছলে মাদরাসার ছাত্র-তৌহিদি জনতার মাঝে এক হৃদয়বিদাক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
মৃত্যুর সংবাদ প্রচার হওয়ার পর থেকে চারদিক থেকে ছুটে আসতে থাকে মাদরাসার ছাত্র জনতা। বিকাল ৩টার দিকে হাটহাজারী মাদরাসা ভরপুর হয়ে যায় ভক্ত অনুসারীদের আগমনে। পৌণে চারটায় লাশের গোসল শেষে ভক্তদের দেখানোর জন্য মাদরাসার ভেতরে রাখা হয়। এ সময় একনজর দেখার জন্য সারিবদ্ধভাবে যান হাজার হাজার হেফাজতের নেতা-কর্মী, প্রিয় ছাত্র ও তৌহিদি জনতা।
স্বজনের কাছে বাবুনগরীর লাশ
পরিবারের সদস্য ও নিকটআত্মীয়দের দেখানোর জন্য আসরের নামাজের পর হাটহাজারী মাদরাসা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় জুনাইদ বাবুনগরীর নিজ বাড়ি ফটিকছড়ি বাবুনগরে। সন্ধ্যার আগেই সেখানে নিকটআত্মীয় ও পরিবারের সদস্যদের লাশ দেখানো শেষ হয়।
আল্লাামা জুনায়েদ বাবুনগরীর ছয় সন্তান। তার স্ত্রী এক ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছে।
বাদ মাগরিব লাশ হাটহাজারীর মাদরাসায় জানাজা ও দাফনের জন্য রওনা হয়। রাত আটটার দিকে লাশবাহী গাড়ি মাদরাসায় পৌঁছে। আবার একনজর দেখার সুযোগ হয় হাজার হাজার ভক্ত শুভাকাঙ্ক্ষীদের।
জুনায়েদ বাবু নগরীর জন্য দুকবর
মৃত্যুর পর পর ঘোষণা করা হয়, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর ওছিয়ত মতে দাফন হবে নিজ বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বাবুনগর মাদ্রাসার মাখবারায়ে আজিজীতে। সেখানে জুনাইদ বাবুনগরীর নানা আল্লামা হারুন বাবুনগরীর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হবে। তাই ফটিকছড়িতে নিজ জন্মস্থান বাবুনগরে নানার কবরের পাশে দুপুর ২টা থেকে কবর খোঁড়ার কাজ শুরু হয়ে যায় এবং কবর তৈরী করা হয়।
বিকাল ৩টায় আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাজার সময় ও দাফনের স্থান পরিবর্তন করে হাটহাজারী মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। জানাজার পর হাটহাজারী মাদরাসার মাগবারায়ে জামেয়া নামক কবরে দাফন করা হবে বলে জানান মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি জসিম উদ্দিন। এ সিদ্ধান্তের পর পরই হাটহাজারী মাদরাসার ভিতরে উত্তর পাশে মসজিদ-সংলগ্ন গোরস্থান মাগবারায়ে জামেয়ায় কবর তৈরীর কাজ শুরু হয়।