আফগানদের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে বাংলাদেশের হার

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ১৭ অক্টোবর ২০২২, ১৭:৪২, আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২২, ১৭:৪৪

দুই ওভারে বিনা উইকেটে ১৮ রান থেকে ৬.১ ওভারে ২৮ /৫! বিশ্বকাপের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের দেয়া ১৬১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা ছিল এমনই বিদঘুটে। তবে মোসাদ্দেক-মোস্তাফিজের ব্যাটে অলআউট হওয়া থেকে রক্ষা পেলেও বাংলাদেশের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ৯৬ রানে। ৬৪ রানের জয় পায় আফগানিস্তান।

এইদিন অপ্রত্যাশিত চমক নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা ব্যর্থতায় ওপেনিং থেকে বাদ পড়া মেহেদী হাসান মিরাজ আবারো ফিরেছেন ওপেনিংয়ে। ১৬১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নাজমুল হাসান শান্তের সাথে মিরাজের ইনিংস উদ্বোধন করাটা বিস্ময়করই বটে। তবে ওপেনিংয়ের প্রতিনিয়ত এমন অদলবদলেও কোনো লাভ হচ্ছে না, লাভ হয়নি আজও।

এই জুটিতে প্রথম ২ ওভারে আসে ১৮ রান। উড়ন্ত শুরু ভেবে যখন তৃপ্তির ঢেঁকুর উঠাতে যাবেন, তখন ৯ বলে ১২ রানে ফজল হক ফারুকির শিকার হয়ে শান্ত ফিরেন সাজঘরের। সেই ওভারে মাত্র ১ রান আসে, তবুও সেটা লেগ বাই থেকে। পরের ওভারে মুজিবুর রহমানের শিকার ওয়ান ডাউনে নেমে ১ রান করা সৌম্য সরকার।

শান্ত ও সৌম্যর পর পরপর দুই বলে ফারুকির শিকার হয়ে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেন। সাকিব ১ রান করলেও আফিফ ফিরেছেন গোল্ডেন ডাক মেরে, কোনো রান না করেই। আর পাওয়ার প্লে শেষে সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই কোনো রান না করে ফিরেছেন ইয়াসির আলী রাব্বিও। ফলে দলীয় স্কোর তখন ২ ওভারে ১৮ থেকে ৬.১ ওভারে ২৮/৫!

অষ্টম ওভারে মুজিবের বলে কোনো রানই করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৯ম ওভারে ফরিদ মালিককে ছয়-চার হাকিয়ে নুরুল হাসান সোহান ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেও সেই ওভারের শেষ বলেই ১৩ রানে ফিরেন তিনি। পরের ৮ বলে আরো ১ রান যোগ করে নাভিন উল হকের শিকার হয়ে ফিরেন মিরাজ। ওপেনিংয়ে নামা এই অলরাউন্ডার করেন ৩১ বলে ১৬ রান!

১৩.৩ ওভারে রান আউটের শিকার হন তাসকিন আহমেদ। দলীয় স্কোর তখন ৮ উইকেট হারিয়ে ৬০ রান। এরপর মোস্তাফিজুর রহমানকে সাথে নিয়ে হারের ব্যবধান কমাতে এবং অলআউট এড়াতে দাঁত চেপে লড়াই করে যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ১৯তম ওভারে মোসাদ্দেক ফেরার আগে করেন ২৫ বলে ২১ রান। মোস্তাফিজ অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে ১৮ রানে। ৯ রানে ৩ উইকেট নেন ফারুকি।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। তবে ইনিংসের শুরুতেই বাংলাদেশী বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে পড়ে যায় তারা। প্রিয় কন্ডিশনে দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেন তাসকিন আহমেদ। পাওয়ার প্লেতে তার ছন্দময় বোলিংয়ের কোনো জবাব ছিল না আফগানিস্তানের কাছে। এরই মাঝে হযরতুল্লাহ জাজাইকে নিজের শিকার বানান তাসকিন। পাওয়ার প্লে থেকে আসে ১ উইকেটে ৩৯ রান।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ভয়ঙ্কর হতে থাকেন রাহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইবরাহিম জাদরান। তাদের ৪২ রানের জুটি ভেঙে গুরবাজকে ব্যক্তিগত ২৭ রানে ফেরান সাকিব। ১৪তম ওভারে তাসকিনকে দ্বিতীয় শিকার হন দরবেশ রাসুলি। তবে আফগানদের হয়ে ম্যাচে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ইবরাহিম জাদরানকে থামান হাসান মাহমুদ, ৩৯ বলে ৪৬ করে এই ব্যাটার। চড়াও হওয়ার আগেই নাজবুল্লাহ জাদরানকেও ফেরান হাসান মাহমুদ।

একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল ১৪০ এর আগেই থেমে যাবে আফগানিস্তানের ইনিংস। তবে তা আর হয়নি ১৯তম ওভারে সাকিবের কারণে। ওভারের প্রথম বলে উসমান ঘানিকে ফেরালেও পরের ৫ বলে দেন ১৯ রান। একাই ১৮ রান নেন মোহাম্মদ নবি। শেষ ওভারে তিনিও চড়াও হন তাসকিনের উপর। ২ ছক্কায় শেষ ওভারে আনেন ১৪ রান। ফলে ১৬০ রানের সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান। নবি অপরাজিত থাকেন এক চার আর পাঁচ ছক্কায় ১৭ বলে ৪১ রানে। তাসকিন আহমেদ শিকার করেন ৩০ রানে ৩ উইকেট।