আগামী বছর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের লোকসান দাঁড়াবে ১৮ হাজার কোটি টাকা: সিপিডি

logo

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(১৮ ঘন্টা আগে) ২৩ জুন ২০২৪, রবিবার, ৪:২০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:১২ পূর্বাহ্ন

mzamin

facebook sharing button
twitter sharing button
skype sharing button
messenger sharing button
viber sharing button
whatsapp sharing button

সরকারের ভুলনীতির কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অব্যাহত লোকসান ২০২৫ সাল নাগাদ ১৯৬ শতাংশ বেড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াবে। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং সরকারের ভর্তুকি দেয়ার পরও এই বিপুল পরিমাণ লোকসান হবে সংস্থাটির। রোববার রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক ইন সেন্টারে প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেটে ‘পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি সেক্টরে চ্যালেঞ্জ ও প্রস্তাব’ শীর্ষক প্রেজেন্টেশনে এ তথ্য জানান সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এ কে আজাদ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. ম তামিম, বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটের রেক্টর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা  অধ্যাপক ড. শামসুল আলম প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে পরিকল্পনা নিয়েছে সেটা উচ্চাভিলাসী। ওই সময় ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত রিজার্ভ ধরেও সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ হলেই যথেষ্ট। সক্ষমতার অতিরিক্ত বিদ্যুতের কারণে জ্বালানি সংকট এবং বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনের সীমাবদ্ধতার কারণে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। ফলে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ থাকার পরও লোডশেডিং হচ্ছে। আবার বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসিয়ে রেখে বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। এর ফলে পিডিবির লোকসান বাড়ছে। সেই সঙ্গে ভোক্তার বিদ্যুতের দামও বাড়ছে।

ড. মোয়াজ্জেম বলেন, বিপিসি বছরের শুরুতে লোকসান দেখায় কিন্তু বছরের শেষে তারা মুনাফা করে।

তারা আসলে করছে টা কী? তারা কী প্রক্রিয়ায় তেলের মূল্য নির্ধারণ করছে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং ব্যয়বহুল হওয়ায় জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির পরামর্শ দেন তিনি। 

মোয়াজ্জেম বলেন, ব্যয়বহুল সত্ত্বেও সরকার জ্বালানি আমদানি বাড়িয়ে যাচ্ছে। উচ্চমূল্যের জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসেত হবে। দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে আরো বেশি আন্তরিক হওয়া দরকার। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থার জন্য সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনের উন্নয়নের পাশাপাশি স্মার্ট গ্রিড ব্যবস্থায় উত্তোরণের জন্য সরকারকে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

সরকার বিদ্যুৎ খাত নিয়ে গোঁজামিলের আশ্রয় নিয়েছে উল্লেখ্য করে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সরকার একদিকে বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছে। অন্যদিকে ডিপিডিসি বলছে, বছরে তাদের ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লাভ হচ্ছে।

তিনি বলেন, আইএমএফ-এর শর্ত শুনে সরকার বিদ্যুতের ভর্তুকি কমানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা এ টেকসই সমাধান হবে না এবং এ খাতের সমস্যা সমাধান হবে না। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ানোর জন্য সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে বাজেট কমানোর জন্য তা ফলপ্রসু হবে না। এর ফলে সরকার বিদ্যুতের ভর্তুকি কমাতে একদিকে দাম বাড়াবে। এতে এ খাতের সংকট ও অব্যবস্থাপনা থেকেই যাবে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেছেন, বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন) আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের নামে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি সমন্বয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের একক দায়িত্ব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের হলেও বিপিসি তেলের মূল্য নির্ধারণ করছে। এটা নিয়ে আদালতে মামলা করেছি। পরবর্তীতে রাষ্ট্র এই প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিকে সুরক্ষা দিয়েছে।