আওয়ামী লীগের গুপ্ত তৎপরতা, সতর্কতার বিকল্প নেই

logo

প্রকাশ : শনিবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:৪৯

কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া ফ্যাসিবাদী সংগঠন আওয়ামী লীগ আবারো দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গণহত্যা চালিয়ে হাজারো মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করেও গণ-অভ্যুত্থান ঠেকাতে ব্যর্থ দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। ক্ষমতায় থাকতে এরা দুর্নীতি, দখলবাজি, নির্বিচার লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে শুধু ধ্বংস করেনি, পুরো বাংলাদেশকে প্রতিবেশী দেশের উপনিবেশে পরিণত করেছিল। ভূ-রাজনীতির অনেক বিশ্লেষক-বিশেষজ্ঞ বলেছেন, আর কিছু দিন ক্ষমতায় থাকতে পারলে তারা বাংলাদেশকে পুরোপুরি ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করত। বাংলাদেশের নির্বাচনসহ রাষ্ট্র পরিচালনার অনেক ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ভারতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করত। এমনকি এ দেশে ভারতীয় সশস্ত্র গুপ্ত তৎপরতাও কারো অজানা নেই। এতে স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সম্পূর্ণ বিরোধী। ভারত যে বাংলাদেশের মিত্র নয়; বরং শত্রু এমন বহু প্রমাণ স্পষ্ট। সেই বৈরী দেশের সাথে আওয়ামী লীগের গোপন ষড়যন্ত্রের ইতিহাস অনেক পুরনো। স্বাধীনতা-পূর্ব এবং একাত্তরে স্বাধীনতার পরও তার অবসান হয়নি। স্বাধীনতা-উত্তর এটি শুরু হয় ফারাক্কা বাঁধ চালুর মধ্য দিয়ে। আর শেষ হয় বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটি পুতুল সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র দিয়ে। এখনো ভারত আমাদের পতিত প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের ফিরে আসার সুযোগ তৈরি করতে চাচ্ছে।

গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনের আগে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দলটি একটি ‘স্লিপারসেল’ গঠন করেছে। স্লিপারসেল গোপনে গুপ্তচরবৃত্তি, আক্রমণ ও সন্ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে। এর সদস্যরা সমাজে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে থাকে।

দেশে জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ এতে থাকবে না; কিন্তু দলটি তার ভুলের জন্য অনুতপ্ত নয়। কোনো রকম অনুশোচনাও করেনি; বরং গুম-খুন, গণহত্যার পক্ষে এখনো সাফাই গেয়ে চলেছে। ক্ষমতায় থেকে লুটপাট করা বিপুল অর্থ ছড়িয়ে দেশে আবার ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এটি তাদের পক্ষে সম্ভব। কারণ নাশকতামূলক কাজে দলটি সিদ্ধহস্ত। এর মধ্যে দলটি ঝটিকামিছিল, ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। যেকোনো সময় ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা ও টার্গেট কিলিংয়ের মতো ঘটনা ঘটাতে পারে।

সরকার ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এ বিষয়ে সতর্ক আছে। তবে বিষয়টি শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে না পারলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না। আর তেমন কিছু ঘটলে নির্বাচনসহ দেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। কিন্তু এখানে শুধু একটি সন্ত্রাসী দলকে মোকাবেলার প্রশ্ন নয়- এর পেছনে আছে একটি বড় দেশ এবং পতিত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী দেশের ভেতরের প্রভাবশালী গোষ্ঠী। এদের মোকাবেলায় বড় প্রস্তুতি দরকার। এটি শুধু আইনশৃঙ্খলাবাহিনী দিয়ে হবে না। দরকার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের। প্রয়োজন ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য। এ শক্তির অনৈক্য যে আওয়ামী লীগকে সাহস জোগাচ্ছে এটি স্পষ্ট। আমরা জুলাই বিপ্লবের মূল শক্তি সেই তরুণ ছাত্রসমাজকেও এ বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here