করোনাভাইরাসের ‘নিউ নরমাল’ পরিস্থিতিতে দেশে আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেরানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা অবশেষে সফল হয়েছে। মুজিববর্ষে নেপালের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচটি মাঠে গড়িয়েছে ভালোভাবেই। আর এতে দীর্ঘ ১০ মাস পর মাঠে খেলা দেখার আক্ষেপ ঘুচেছে হাজারো দর্শকের। সেই সঙ্গে অনেকদিন পর মাঠে ফিরে জয়ের দেখাও পেয়েছে বাংলাদেশ দল। শুক্রবার নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ২-০ গোলে। সাফ ফুটবল ও এসএ গেমস ফুটবলে টানা হারের পর হিমালয়ের দেশটির বিপক্ষে অবশেষে জয় এলো।
শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু থেকে বাংলাদেশ আক্রমণে এগিয়ে থাকে। জেমি ডের ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খারাপ করেনি দল। নেপালের বিপক্ষে আধাডজন আক্রমণ গড়ে যদিও গোল এসেছে মাত্র একটি! ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ বারবার লম্বা থ্রো-ইন করে প্রতিপক্ষকে ভয় ধরিয়েছেন। এছাড়া আক্রমণে সাদ উদ্দিন-নাবীব নেওয়াজ জীবন ও সুমন রেজার কম্বিনেশনও ভালো করেছে। নেপাল মাঝে-মধ্যে আক্রমণ গড়েও সফল হতে পারেনি। আগের সেই নেপাল ঝলক এই অর্ধে দেখা যায়নি।
ম্যাচের ৯ মিনিটে বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা থ্রো-ইন থেকে তপু বর্মণ হেড নিতে পারেননি। তবে পরের মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। নাবীব নেওয়াজ জীবনের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গোল দেওয়ার ইতিহাস কমই। সবশেষ গত বছর ভুটানের বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন এই তারকা। অনেক দিন পর আবারও সফল হলেন আবাহনীর স্ট্রাইকার। ডান প্রান্ত থেকে সাদউদ্দিন দুই ডিফেন্ডারকে বডি ডজ দিয়ে ছিটকে দিয়ে গোলমুখে ক্রস করলে জীবন নিখুঁত স্লাইডে লক্ষ্যভেদ করেন( ১-০) । ২১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো। জীবনের ক্রসে ইব্রাহিম হেড নিলেও এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। ২৩ মিনিটে বিশ্বনাথের থ্রো-ইন থেকে তপুর হেড পোস্টের বাইর দিয়ে যায়। ২৭ মিনিটে মানিক মোল্লার দূরপাল্লার শট গোলকিপার কিরণ কুমারের হাত ছুঁয়ে ক্রসবার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ৩২ মিনিটে সাদের ক্রসে জীবনের ভলি শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। এভাবেই ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতির পর নেপাল কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল অবশ্য। ৫৫ মিনিটে সতীর্থের ক্রস থেকে বিক্রম লামার প্লেসিং এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে ক্রসবারের বাইরে দিয়ে যায়। উল্টোদিকে এই অর্ধে জেমি ডে একাদশে পাঁচটি পরিবর্তন আনেন। তাতেই বাজিমাত করে বাংলাদেশ। বদলি নেমে সফল হন মাহবুবুর রহমান সুফিল। ৮১ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে সোহেল রানার থ্রু থেকে বাঁ প্রান্ত দিয়ে উঠে গোলকিপারকে ডজ দিয়ে দূরের পোস্টে বল ঠেলে দেন তিনি। অসাধারণ এই গোলের পর আনন্দে উদ্বেল হয়ে পড়েন সমর্থকেরা। শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।