দেশের ৯৭ শতাংশ ভোটার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থাশীল। এই সরকারের মেয়াদ তিন বছর বা তার বেশি হওয়া উচিত বলে মনে করেন ৪৭ শতাংশ ভোটার। আর ৫৩ শতাংশ মনে করেন, মেয়াদ দুই বছর বা তার কম হওয়া উচিত।
বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি) পরিচালিত জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জরিপের এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘জাতীয় জরিপ ২০২৪: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নাগরিকদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সমীক্ষাটি গত ৯ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের ৮টি বিভাগের ১৭টি জেলায় মোট ১ হাজার ৮৬৯ জনের ওপর পরিচালিত হয়। উত্তরদাতাদের বৃহত্তম অংশ (৬৩ শতাংশ) মধ্যবয়সী (২৮-৫০ বছর)। ২২ শতাংশ জেনারেশন জেড (১৮-২৭ বছর)। ১৪ শতাংশের বয়স ৫০ বছরের ওপরে। জরিপের উত্তরদাতাদের ৫৪ শতাংশ শহরাঞ্চলের। ৪৬ শতাংশ গ্রামীণ অঞ্চলের।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আকরাম হোসেন জরিপের তথ্য ও ফলাফল উপস্থাপন করেন। এতে দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ৭২ শতাংশ ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করেন।
প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি থাকতে পারবেন না– এমন বিধান করাকে সমর্থন করেন উত্তরদাতাদের ৯৬ শতাংশ। ৪৬ শতাংশ মনে করেন, উল্লেখযোগ্য সাংবিধানিক পরিবর্তন প্রয়োজন। সংবিধানে ছোটখাটো সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন ৩৫ শতাংশ। আর ১৬ শতাংশ সম্পূর্ণ নতুন করে লেখা সংবিধানের পক্ষে মত দিয়েছেন। বাকি ৩ শতাংশ সংবিধানে পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই বলে মত দেন।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের ব্যাপক আস্থা ও আকাশচুম্বী প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে, যা এই জরিপেও উঠে এসেছে। এই প্রত্যাশার ব্যবস্থাপনা করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, আগেও দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে; কিন্তু তার সুফল পাওয়া যায়নি। এর বড় কারণ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে রাজনৈতিক দলগুলো যেসব অঙ্গীকার করে, ক্ষমতায় গিয়ে সেসব বাস্তবায়ন না করলে সবই হবে পণ্ডশ্রম।
এসআইপিজির উপদেষ্টা অধ্যাপক সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেন, ৯৭ শতাংশ মানুষ বর্তমান সরকারের প্রতি আস্থা রেখেছে। সরকারকে বুঝতে হবে, তাদের সংস্কার করার সুযোগ রয়েছে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ বলেন, মানুষের মধ্যে অনেক আস্থা ও আকাশচুম্বী প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। এই প্রত্যাশার অর্থ হলো, সরকারের দায়িত্ব। মানুষ ভরসা করতে চায়।
samakal