অঘটন ঘটিয়ে শেষ ষোলতে অস্ট্রেলিয়া

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ৩০ নভেম্বর ২০২২, ২৩:২৩, আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:২২
অঘটন ঘটিয়ে শেষ ষোলতে অস্ট্রেলিয়া। – ছবি : সংগৃহীত

মরা-বাঁচার লড়াইয়ে ১-০ গোলের অঘটন ঘটিয়ে ডেনমার্ককে হারিয়ে শেষ ষোলতে অস্ট্রেলিয়া।

ডি গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়া-ডেনমার্ক। ডু অর ডাই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ল ড্যানিশরা। জয় পেলেও অবশ্য লাভ হতো না, আজকে অন্য আরেকটি ম্যাচে ফ্রান্সকে হারিয়ে দেয়ায় তিউনিসিয়াই উঠে যেত শেষ ষোলতে। এই জয়ের ফলে ডি গ্রুপ থেকে ফ্রান্সের পরে দ্বিতীয় দল হিসেবে নক আউটে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া।

ম্যাচের প্রথম ১৫ মিনিট সকারুরা আধিপত্য দেখালেও বাকি সময় বল ছিল ড্যানিশদের নিয়ন্ত্রণে। পুরো ম্যাচে ৬৯ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রেখেছিল এরিকসেন-ক্রিস্টেনসনরা। প্রথমার্ধে একাধিকবার একে অন্যের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নিলেও গোল করতে সক্ষম হয়নি কেউই। দ্বিতীয়ার্ধে বলের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আক্রমণের মাত্রাও বাড়ায় অস্ট্রেলিয়া। যার ফলও তারা পেয়ে যায় দ্রুতই। ৬০ মিনিটের মাথায় ম্যাথু লেকির গোলে এগিয়ে যায় দলটি। পুরো ম্যাচে ড্যানিশদের পায়েই বল বেশি থাকলেও আক্রমণের ধার বেশি ছিল অজিদেরই।

কাতারের আল জানুব স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও ডেনমার্ক। বিশ্বকাপের গ্রুপ ডি থেকে নকআউট পর্বের টিকিট পেয়ে গিয়েছিল ফ্রান্স আগেই। এই গ্রুপ থেকে আর একটি দলের কোটা ছিল নকআউট পর্বে যাওয়ার জন্য। তাই আজকে নিজেদের মরণ-বাঁচন ম্যাচ খেলতে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া-ডেনমার্ক।

ম্যাচের শুরু থেকেই দু’দলের মধ্যে চলে বল দখলের লড়াই। ম্যাচের ৩ মিনিট সময়ে অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড় রিলি ম্যাকগ্রি ডি বক্সের বাইরে স্পেস পেয়ে ডেনমার্কের গোলপোস্ট বরাবর শট নিলেও তার সতীর্থ মিচেল ডিউকের গায়ে বল লেগে একটি সুযোগ নষ্ট হয়। ৬ মিনিটের মাথায় স্কোভ ওলসেনকে ফাউল করায় হলুদ কার্ড দেখে বসেন অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার আহমেদ বেহিখ। দশম মিনিটের মাথায় ডেনমার্কের গোলবার লক্ষ্য করে শট নেন বেহিখ। তবে অজি ডিফেন্ডাররা দ্রুতই সেই বল ব্লক করতে সক্ষম হন।

ম্যাচের ১৫ মিনিট পর থেকে ডেনমার্ক বল দখল ও নিয়ন্ত্রণে নিজেদের আধিপত্য দেখাতে শুরু করে। ১৯ মিনিটের মাথায় বল নিয়ে ডিবক্সের কাছাকাছি চলে আসেন ডেনমার্কের জোয়াকিম মাহেল। গোলের আশঙ্কা জেগে উঠলে দ্রুত রিফ্লেক্সে বল সেভ করেন অজি গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান। দু’মিনিট পর এবারে আক্রমণে যায় অস্ট্রেলিয়া, কিন্তু ম্যাকগ্রির ডিবক্সের কোণা থেকে করা হাফ ভলি শট আটকে দেন ডেনমার্ক কিপার ক্যাস্পার স্কিমাইখেল।

৩৭ মিনিটের মাথায় মাঠের ডানপ্রান্ত থেকে এরিকসেনের উড়ে আসা দুর্বল ক্রস সহজেই ক্লিয়ার করে দেন অজি মিডফিল্ডার জ্যাকসন আরভিন।

৪১ মিনিট সময়ে ২০ গজ দূর থেকে ডেনমার্কের গোলবারে শট নেন মিচেল ডিউক। তবে দ্রুত রিফ্লেক্স দেখিয়ে শটটি সেভ করেন ড্যানিশ কিপার। এরপরে দু’দল আর কোনো অ্যাটাকে না যাওয়ায় গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয়।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই গুছিয়ে খেলতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। ৪৮ মিনিটের মাথাতেই আক্রমণে যায় দলটি। ম্যাকগ্রির কাছ থেকে বল পেয়ে ডিবক্সের ভেতর থেকে গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন আরভিন। কিন্তু তার শটে বল চলে যায় বারের ওপর দিয়ে।

৫৮ মিনিটের মাথায় একটি ফ্রিকিক পেয়েছিল ডেনমার্ক। কিন্তু তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন।

অবশেষে ৬০তম মিনিটে ডেডলক ভাঙতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাথু লোকির গোলে ম্যাচে ১-০ এগিয়ে যায় সকারুরা। এরপর ডেনমার্ক ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও এ সময় তাদের খেলোয়াড়রা বেশ দিশেহারা হয়ে এলোমেলো খেলতে শুরু করে।

৭১ মিনিটের মাথায় রেফারির কাছ থেকে পেনাল্টি আদায়ের চেষ্টা করে দলটি। কিন্তু ড্যানিশ স্ট্রাইকার ক্যাস্পার ডলজবার্গ বল বিল্ড আপের সময় অফসাইডে থাকায় পেনাল্টি দেননি রেফারি।

৮৪ মিনিটের মাথায় ক্যাস্পার ডলজবার্গ অজিদের গোলবারে শট নেয়ার চেষ্টা করলেও বল আটকে দেন রায়ান। এরপরে একবার কর্ণার পেলেও তা থেকে গোল করতে পারেনি ডেনমার্ক। শেষপর্যন্ত গোল পরিশোধ করে সমতায় ফিরতে ব্যর্থ হলে পরাজয় মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়ে দলটি। এই ম্যাচে হারের ফলে ডেনমার্কের বিশ্বকাপ মিশন থেমে গেল এখানেই।