মাতাল সুন্দরীর তেঁতুল-টেষ্ট এবং খেলারামদের সর্বশেষ খেলা
তেঁতুল তত্ত্বের প্রবক্তাদের প্রতি এক ধরনের বৈরিতা পোষন করা হলেও
‘তেঁতুলের দোষ’ শব্দটি বাজারে বেশ চালু হয়ে গেছে । ভয়ংকর উচু পজিসনে থাকা কারো কারো তেঁতুলের এই দোষটি শ্রুতিগোচর হলে তওবা তওবা বলে জিভ কাটতে হয়।
পুরুষদের তেঁতুলের দোষ( তেঁতুল তত্ত্ব) প্রমাণ করার জন্যে এই সপ্তাহে হলিউডে একটি মজার এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছে। তেঁতুল টেষ্টের এই ভিডিওটি সঙ্গত কারনেই ভাইরাল হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়
এক সুন্দরী অভিনেত্রী মাতাল হওয়ার অভিনয় বা ভান করে। কয়েক জন পথচারী (পুরুষ) কে নিজের বাড়ি পৌছার জন্যে বাস স্টেশনের পথটি দেখিয়ে দিতে অনুরোধ জানায় । পর পর পাঁচ জন পুরুষকে এই অনুরোধটি করে। উক্ত পাঁচ জনের মধ্যে মাত্র একজন তাকে সঠিক পথটি দেখিয়ে দেয়। বাকি চার জনই এই মাতাল সুন্দরীকে বিশেষ তেঁতুল বা মওকা মনে করে নিজ নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্যে প্রলুব্দ করে। একজন বলে, তার বাসায় একটা চমৎকার ওয়াটার বেড রয়েছে। শেষের দুজন তো এই ‘তেঁতুল’কে নিয়ে রীতিমত কথা কাটাকাটি শুরু করে দেয়।
ডেইলি মেইল অন লাইনেও সংবাদটি পরিবেশন করা হয় – Shocking video shows men taking advantage of a ‘drunk’ woman । পরে আবার জানানো হয়েছে যে পুরু ভিডিওটিই নাকি সাজানো বা অভিনয় ছিল। বাস্তব বা অভিনয় যাই হোক না কেন – পুরুষ জাতির আসল স্বভাব বা তেঁতুলের দোষটি এখানে অত্যন্ত সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে।
বাংলাদেশে এই সপ্তাহটি কাটছে অন্য ধরনের তেঁতুল নিয়ে। পুরো রাষ্ট্রটিই এক ধরনের তেঁতুল হয়ে পড়েছে। জাতিকে চেতনার মদ খাইয়ে অবচেতন করে ফেলা হয়েছে। কেউ মাতাল হয়েছে খেয়ে, কেউ মাতাল আবেশে। ফলে আস্ত রাষ্ট্রটি বনে গেছে এক মাতাল সুন্দরী ।
বিরোধী দলগুলি ক্লান্ত,শ্রান্ত ও কিছুটা বিভ্রান্ত। গণ মাধ্যম গুলি নামেই গণমাধ্যম। বাস্তবে গণ শত্রুদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে । এরা শেয়ালের চেয়েও ধূর্ত। এক শ্রেণীর ‘ কানা মিজান’ দের মানবতার পাহারাদার বানানো হয়েছে। শুটকির বাজারগুলিতে চৌকিদার বানানো হয়েছে কালো বিড়ালদের ।
ফলে বাস স্টেশনের রাস্তা বা প্রকৃত গন্তব্যে না পৌছিয়ে রাষ্ট্র নামক এই সুন্দরীকে নিজেদের নৌকায় টেনে নিতে একটুও বেগ পেতে হচ্ছে না এই এইচ টি ইমামদের । নিজেদের পানি শয্যায় এই সুন্দরীকে ফেলে এরা দলিত মথিত চূর্ণ বিচূর্ণ করে ফেলেছে ।
গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন ‘বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় পাস কর, ভাইভা আমরা দেখব। যারা ছাত্রলীগ করেছে তাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ‘
স্বজনপ্রীিত বা দলপ্রীতি এদেশে নতুন কিছু নয়। প্রতিটি সরকারই কমবেশী এই কুকর্মটি করেছে। কিন্তু বর্তমান সরকার এটাকে পেয়েছে এক্কেবারে হরিলুটের মাল। এমন করে মাইক বাজিয়ে এভাবে রাষ্ট্রকে ধর্ষণ এর আগে আর কেউ করে নি। আবুল মাল ফতোয়া দিয়েছেন , ঘুষ অবৈধ নয়। আইনের শাসনের কথা বলে দেশটিতে এরা পুরাপুরি জঙ্গলের শাসন প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে।
এর মূল কারন হলো, এই রাক্ষসরা মনে করে ফেলেছে যে ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের আত্মা বিশেষ কৌটায় সংরক্ষিত হয়ে গেছে । একজন তো মুখ ফুটে বলেই ফেলেছেন, শেখ হাসিনা চিরদিন ক্ষমতায় থাকবেন । কাজেই রাক্ষসরা যাই করুক তাদের আর মরন নেই।
এরা হাম্বি তাম্বি যাই করুক না কেন, সরকারের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। আলামত টের পেয়ে ধূরন্ধর লতিফ সিদ্দিকী স্বপক্ষ ত্যাগ করেছেন। জনগন হেইয়ো হেইয়ো বলে তাল তুলছে। এই তাল একবার শুধু সিংক্রোনাইজ মানে এক সঙ্গে হতে পারলেই কেল্লা ফতেহ। সরকারও এটা ভালোভাবেই জানে।
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন,যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন বিশ্ব সংস্থা এবং প্রভাবশালী দেশ এই সরকারের উপর তাদের অসন্তোষ বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ করেছে। কাজেই বীণা সিক্রি এসেছেন শেষ সময়ের ঠেকটি দিতে। সরকারের কথাগুলিই টিয়া পাখির মতো বলে যাচ্ছেন।
এই বীণা সিক্রিরা শুধু এদেশের মানুষেরই শত্রু নহে – এরা পুরো উপমহাদেশের এক বিলিয়নের উপরে জনগোষ্ঠির শত্রু। এদের ষড়যন্ত্র ও ভূমিকার কারনেই এই উপমহাদেশে কাঙ্খিত শান্তিটি আসতে পারছে না। পৃথিবীর সবচেয়ে অধিক গরীব মানুষের বাসস্থান এই উপমহাদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে না এই বীণা সিক্রিদের নোংরা মানসিকতার কারনেই। একজনের পাছায় অন্যজনের অাঙুল দেওয়ার পলিসিটি এরাই জিইয়ে রাখে । এরা এক মানুষের উপর অন্য মানুষের প্রভুত্ব সৃষ্টি করার জন্যে কাজ করে। এরা মানবতার বন্ধুর চেয়ে শত্রু হিসাবেই বেশী ভূমিকা পালন করে। কাজেই এই বীণা সিক্রিদের পাশ কাটিয়ে উভয় দেশের প্রকৃত মানবতাবাদীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। এরা কখনই নিজের দেশের সকল জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্ব করে না। এরা প্রতিনিধিত্ব করে একটি বিশেষ স্বার্থের।
এদেশে বীণা সিক্রির কার্যকালটি (২০০৩ থেকে ২০০৬) বিশেষভাবে লক্ষ্য করার মতো । জঙ্গীবাদের রহস্যজনক উথ্থানে তার ভূমিকাটুকুও সামনের দিনে আরো স্পষ্ট হতে পারে । এদেশে জঙ্গীবাদ এসে সবচেয়ে বেকায়দায় ফেলেছে ডানপন্থি তথা ইসলামপন্থীদের। সোনায় সোহাগা হয়েছে এক শ্রেণীর বামপন্থীদের। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার মতো ভোট যারা পেতো না তারাও মন্ত্রী হয়ে গেছেন। আরো অনেকেই মন্ত্রী উপদেষ্টা হয়েছেন যাদের কোন স্পষ্ট অবদান জাতির চোখে পড়ে নি। কাজেই জঙ্গীবাদের রহস্যজনক উথ্থানে এই বিষয়গুলি জাতির চিন্তার জগতে আঘাত করছে।
চারদলীয় জোট সরকার প্রথম দিকে এই জঙ্গীদের নিয়ে অন্ধকারে থাকলেও পরে তারাই পালের গোদাদের গ্রেফতার করে দ্রুত ফাঁসির ব্যবস্থা করেছে। এই জঙ্গীদের সমূলে উৎখাত করায় র্যাবের কর্ণেল গুলজার বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। সেই গুলজার হঠাৎ বিডিআরে বদলী হয়ে পড়েন এবং অন্যান্য ৫৬ জন কৃতি অফিসারের সাথে অত্যন্ত করুণভাবে নিহত হন।
তারপরেও এই রহস্য কন্যা বীণা সিক্রি সরকারের পুরনো বাশীটিই বাজাতে এসেছেন ।
এই জঙ্গী জঙ্গী খেলায় মূলত কারোরই কোন লাভ হবে না। এই দেশটি জঙ্গীবাদের অভয়ারন্য হয়ে পড়লে ইন্ডিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আরো সুবিধাজনক অবস্থায় চলে যাবে। আমরা দেখেছি সোমালিয়া নামক রাষ্ট্র কাঠামোটি ভেঙে যাওয়ার পর তা কীভাবে পুরো বিশ্বের জন্যেই আপদ হয়ে পড়েছে। বিশ্বের পরাশক্তিগুলি এক সাথে জোট বেধেও সেখানকার জলদস্যুদের কন্ট্রোল করতে পারে নি। কারন সেখানে কোন কেন্দ্রীয় সরকার নেই।
কাজেই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি ভেঙে পড়লে ( আল্লাহ না করুক) তা ইন্ডিয়ারও ভাঙনের সূত্রপাত করবে। কাজেই পুরো এলাকার শান্তির জন্যে দরকার একটি গণতান্ত্রিক উপমহাদেশ। বীণা সিক্রিদের বর্তমান ভূমিকা স্পষ্টতই এর বিরুদ্ধে।
এই খেলারামরা টের পাচ্ছে না তারা কী নিয়ে খেলছে!