আল ফায়েদা এবং অন্ডকোষ/অন্যকোষ কাটা মিডিয়া
মুসলিম বিশ্বে আল কায়েদার চেহারা বা উদ্দেশ্য অনেকটা ঘোলাটে হলেও এই আলকায়েদা থেকে ফায়দা নেওয়ার জন্যে উদগ্রীব আল ফায়েদাদের চেহারা ও উদ্দেশ্যটি পানির মত স্বচ্ছ ও পরিস্কার হয়ে পড়েছে।
মুসলিম বিশ্বের যেসব দেশে গণতন্ত্র এখনও শৈশবে অবস্থান করছে কিংবা নানা কারনে এই গণতন্ত্রকে বিকলাঙ্গ করে রাখা হয়েছে সেখানে এই আল ফায়েদাদের জন্ম হয়েছে। প্রতিপক্ষকে আলকায়েদা বা আইএসআই হিসাবে তুলে ধরে নিজেদের সকল কুকর্ম চালিয়ে যেতে চেষ্টা করে যাতে বহির্বিশ্ব চুপ মেরে থাকে।
অগণতান্ত্রিক খায়েস বাস্তবায়নের জন্যে রাজনৈতিক বিরোধীদের আল কায়েদা বানাতে চেষ্টা করে। অনেক সময় নিজেরাই ইন্ধন দিয়ে এসব জানা অজানা গ্রুপ তৈরি করে।
এদের মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে ভয়ংকর ও নির্মম আল ফায়েদা গ্রুপটির উদ্ভব হয়েছে। জেএমবি সহ অন্যান্য জঙ্গীবাদী গ্রুপের( ডিএনএর মত কোন টেষ্ট করে) জন্মের উৎসে বিস্ময়কর মিল খুজে পাওয়া গেছে । প্রথমদিকে সাধারন মানুষ এতে বিভ্রান্ত হয়ে পড়লেও এখন সকল কিছু দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে পড়েছে।
নিজেরাই বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে সেই দোষ বিরোধীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়। সকল বিরোধী মত ও পথের পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে। সর্বশেষ বন্ধ করেছে ফ্রন্টলাইন টক শো টি। কিন্তু তাতেও মনে হয় পতন ঠেক দেয়া যাবে না।
পতনের আগে কর্ণেল গাদ্দাফী বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে তার বিরোধীদের দিকে আঙুল নির্দেশ করে বলেছিলেন, এরা সব আল-কায়েদা। এদের খতম করো। ‘
দীর্ঘ সময় ধরে এই সব স্বৈর শাসক ( আল ফায়েদা হিসাবে) বিশ্ব বাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এদের জীবনের অন্তিম মুহুর্তে এই কৌশলটি আর কারোরই কাজে আসে নি।
এখানে মিলটিও চমৎকার মনে হচ্ছে।
এদেশে আল ফায়েদার পরবর্তী আমির সজীব ওয়াজেদ জয় অনেকটা উদ্ভ্রান্তের মত ( তার সর্বশেষ বাক্যবিন্যাশ গুলি লক্ষ্য করলেই স্পষ্ট হয় বিপদ অাসন্ন) বলছেন, বিএনপি জামায়াত এরা সব আইএসআই। জ্যান্ত হোক, মৃত হোক এদের ধরো।
প্রথম বাকশাল কেটেছিল মিডিয়ার গলা। এবারও কয়েকটি মিডিয়ার সরাসরি গলা কেটেছে। বাকিদের কেটেছে অন্ডকোষ। কাউকে কেটেছে ভয় দেখিয়ে। কেউ কেউ আবার খুশী মনেই অন্ডকোষটি কাটতে দিয়েছেন। প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিষ্ট সিরাজুর রহমান তাই এই সব মিডিয়াকে খাসির সাথে তুলনা করেছেন। বিষয়টি খুবই প্রণিধানযোগ্য।
পাঠার অন্ডকোষ কেটে ফেললে তা হয় খাসি। ষাড়ের অন্ডকোষ কেটে ফেললে তা হয় বলদ। রাজা বাদশাহদের হেরেমে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরুষদের বিশেষ অঙ্গ কাটলে হতো খোজা।
এখন এই সব অন্ডকোষ বা অন্যকোষ কাটা বলদ/খাসি/খোজা মিডিয়া এই আলফায়েদার সব চেয়ে বড় সহযোগী হয়েছে। অনেক জায়গা থেকে প্রমানসহ অভিযোগ আসছে যে আল ফায়েদারা নিজেরাই আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারছে। আর অন্ডকোষ /অন্যকোষ কাটা মিডিয়া এক পেশে প্রচারনায় সেসব বিরোধী দলের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে।
এখন বার্ন ইউনিটে যত দগ্ধ মানুষ আসবে আলফায়েদার তত ফায়দা হবে। এই তরিকায় দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে এরা বার্ন ইউনিটের রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছে।
পাঠাকে খাসি , ষাড়কে বলদ কিংবা পুরুষ চাকরকে খোজা বানিয়ে ফেললে এদের মালিকদেরকে যেমন উৎকট কোন যন্ত্রণা পোহাতে হয় না তেমনি ভাবে মিডিয়ার এই বলদকরন/খোজা করনের ফলে নব্য বাকশাল বা আল ফায়েদাকে কোন ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না।
কারন অন্ডকোষ/অন্যকোষ কাটা এই খাসি/ বলদ/খোজা মিডিয়া বর্তমান গনতান্ত্রিক আন্দোলনের পেছনের সুদীর্ঘ উপাখ্যান মানুষকে ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। সমস্যার রুট কজ এনালাইসিসের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলি চিরতরে সমাধানের পথকে রুদ্ধ করে দিয়েছে।
তবে
হতাশার কোন কারন নেই। সমস্যা যখন স্পষ্ট হয়েছে, সমাধান অবশ্যি বেরিয়ে আসবে। এই সরকারের পতন হলে মুক্ত আলোচনায় বেরিয়ে আসবে আসলে কোন মিডিয়ার কোন অঙ্গটি কাঁটা হয়েছিল।