উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান, নিরাপদে ফিরলেন সাজেকের পর্যটকরা

খাগড়াছড়িতে আকস্মিক সড়ক অবরোধ ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে সাজেক ভ্যালিতে আটকে পড়া প্রায় দুই হাজার পর্যটক নিরাপদে ফিরেছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তারা খাগড়াছড়ি শহরে পৌঁছান। শনিবার রাত ১০টার দিকে পর্যটকদের বহনকারী গাড়িগুলো খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরে এসে পৌঁছালে তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।

সাজেক ভ্যালি

শহরটিতে পৌঁছানোর পর আর দেরি করেননি পর্যটকরা। শান্তি পরিবহনের কাউন্টার কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে সবাই নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন।

এর আগে দিনভর চরম উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটাতে হয় তাদের। শুক্রবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় দুই শতাধিক জিপ, পিকআপ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে পর্যটকরা সাজেক ভ্রমণে গিয়েছিলেন। শনিবার দুপুরের মধ্যে তাদের ফেরার কথা থাকলেও অবরোধের কারণে তারা আটকা পড়েন।

ময়মনসিংহ থেকে আসা পর্যটক ছাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। সকাল থেকে দীঘিনালায় আটকে ছিলাম। সেনাবাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া আমরা ফিরতে পারতাম না’।

একই রকম অভিজ্ঞতার কথা জানান কক্সবাজার থেকে আসা পর্যটক মো. শরীফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাতেই অবরোধের খবর পাই। সকাল ১০টায় সাজেক থেকে বের হয়ে দুপুর পর্যন্ত কিছুই খেতে পারিনি’।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পর্যটকদের নিরাপত্তায় তৎপর ছিল। সকালে বিশেষ পাহারায় তাদের সাজেক থেকে দীঘিনালায় নামিয়ে আনা হয়। তবে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তাদের সেখানে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। অবশেষে রাতে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় তাদের খাগড়াছড়ি শহরে আনা হয়।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয় এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনা ঘটে, যার ফলে পর্যটকরা আটকা পড়েন।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং তৎপরতার কারণে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।