নেপালি ‘রিপাবলিক’ এর স্বপ্ন কী একেবারেই ব্যর্থ হল!

গৌতম দাস

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

নেপালের তরুণদেরকে গ্লোবাল ভাষায় জেন-জি বা জেন-জেড নামে ডাকা হচ্ছে।  তারা মূলত নেপালের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতি বিরুদ্ধে বিদ্রোহি উত্থান ঘটিয়েছেন।  এরাই নেপো-কিডস [NEPO-KIDS] -দের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়িয়েছে। নেপো- শব্দটা নেয়া হয়েছে ইংরাজি নেপোটিজম [Nepotism] থেকে। যার বাংলামানে হল, যারা জনগণের নামে ক্ষমতা নিয়ে ক্ষমতায় থেকে নিজ সন্তান বা আত্দেমীয় পরিজনদেরকে চরম অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থ-সুবিধাদি দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা কর চলে। নেপালের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিকেরা শুধু একাজই করেন নাই। তাদের নেপো-গুষ্ঠি আর তাদের সন্তানরা ক্রমাগত বড়লোকি ফুটানি প্রকাশ করে সোশাল মিডিয়া ভারী করে রেখেছিল। আর এসবের বিরুদ্ধে নেপালের তরুণেরা সোশাল মিডিয়ায় প্রথমদিকে কঠোর সমালোচনাকে কেন্দ্র করে জড়ো হতে শুরু করেছিল।  কিন্তু ক্ষমতাসীনেরা তা টের পেয়ে এই সমালোচনাকে দমন করার জন্য একটা কৌশল করেছিল। তারা আদালতে এসব সোশাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক, এক্স থেকে শুরু করে এমনকি সিগনাল এপ (খুবই নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা একটা কথোপকথনের এপ।) এসব কিছুর উপর আদালতের এক নির্দেশনা নিয়ে এসেছিল তাতে এসব  সোশাল মিডিয়াকে নতুন করে নিয়ম মেনে সাতদিনের মধ্যে রেজিষ্ট্রেশনের নির্দেশ নিয়ে আস্তে হবে। এসব কড়াকড়ির জন্য এক টিকটিক ছাড়া উল্লেখযোগ্য বেশির ভাগ সোশাল মিডিয়াই নতুন করে রেজিষ্টার্ড হতে ব্যর্থ হয়। ফলে এসব এপ এর নেপালে উপস্থিতি নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এতে এইবার নেপালী তরুণেরা এমন সমস্ত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে এদেরকে উপড়ে ফেলার জন্য বিদ্রোহ আর গণ-উত্থান ঘটিয়ে দিয়েছিল। এমনিতেই নেপাল গ্লোবাল মিডিয়ায় তেমন উপস্থতি থাকে না। তাই এই খবরটা বাইরের মিডিয়া প্রচার করেছিল যে নেপাল থেকে কেবল ফেসবুক ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে এই বিক্ষোভ। অর্থাৎ এসবের পিছনের মূল কারণ যে নেপালের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতি সেই মূলকথাটাই চাপা পরে গিয়েছিল
যাহোক, নেপালের এই নেপো-কিডস কারা এনিয়ে একটা রিপোর্ট আমরা বাংলায় পেয়েছি বাংলাদেশের  যুগান্তরে অনুমান করি এটা কোন ইন্ডিয়ান পত্রিকা থেকে নেয়া। যুগান্তরে এটা ১২ সেপ্টেম্বর ছাপা হয়েছে এখানে লিঙ্ক দিলাম। শিরোনাম “নেপালে আন্দোলনের নেপথ্যে নেপো কিডস’, কারা এরা?”। এছাড়া নেপালের কাটমান্ডু পোস্ট পত্রিকা পাঁচ প্রশ্নের উত্তর  দিতে গিয়ে সংক্ষেপে এই প্রশ্ন নিয়ে নাড়াচারা করেছে।


আইডিওলজির বিচারে  ২০০৬ সাল থেকেই নেপালের রাজনীতিতে রাজতন্ত্র উচ্ছেদ করার আন্দোলনের সময় থেকে কমিউনিস্ট ঘরানা আধিপত্য শুরু হয়ে যায় যা এখনও বর্তমান!  আর সম্ভবত সেটাই একালে এসে নেপালের তরুণের সংগঠিত বিদ্রোহী উত্থানের পেছনের এক কারণ। নেপালের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বড় প্রভাবের দুটি দলই কমিউনিস্ট আর তৃতীয়টি ইন্ডিয়ান কংগ্রেস অনুকরণে যার নাম ‘নেপালি কংগ্রেস’। প্রথম দুই কমিউনিস্ট দলের একটি হলো গত প্রধানমন্ত্রী কে পি অলির বা খড়্গ প্রসাদ শর্মা অলির দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (একীভূত মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী) [সিপিএন ইউএমএল] এভাবে নামে ডাকতে পছন্দ করেন। আর অন্য কমিউনিস্ট পার্টিটা হল, পুষ্প কমল দাহালের [সশস্ত্র সংগ্রামের সময় দেওয়া যার ছদ্মনাম ছিল প্রচন্ড] আরেক ‘নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী কেন্দ্র)’।

মজা হল, কোনো কারণে ২০০৬ সালে নেপালের রাজতন্ত্র উৎখাতের আন্দোলনের পরে ২০০৯ সালে যখন প্রথম নয়া রিপাবলিক নেপাল রাষ্ট্র গঠনের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়, তাতে ভোটের ফলাফলে দেখা গিয়েছিল, কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। আর সেটি শুধু ২০০৯ সালের প্রথম নির্বাচনের (গণপরিষদ বা কনস্টিটিউশন প্রণয়নের প্রতিনিধি নির্বাচন) সময়ই নয়, বরং এরপরের এ পর্যন্ত সব নির্বাচনের ফলাফল একই; মানে তিন দলের মধ্যে আসন বিভক্ত। এর মধ্যে নেপালি কংগ্রেস হয়তো সবচেয়ে কম আর অলির কমিউনিস্ট হয়তো সবার চেয়ে বেশি। কিন্তু কোনো দলই কখনো পঞ্চাশ ভাগের বেশি আসন পায়নি। নেপালের রাজনীতি বোঝার জন্য এ বাস্তবতার দিকে খেয়ালে রাখা খুব জরুরি। এ তিনটা মূলদলের বাইরে নেপালে আরও অন্তত গোটা দশেক ছোট দল আছে, যাদের বেশিরভাগই নানা কিসিমের কমিউনিস্ট দল।

ইন্ডিয়া ২০০৯-২০১৫ পর্যন্ত সম্ভব সবরকমভাবে নেপালে একটা নয়া রিপাবলিক রাষ্ট্র গঠনের বিরুদ্ধে সব কায়দায় সর্বোচ্চ বাধা তৈরি করে গিয়েছিল, যাতে নেপালে কোনো ‘রিপাবলিক কনস্টিটিউশনাল রাষ্ট্র’ হিসাবে পুনঃগঠিত হতে না পারে। কিন্তু তা ততধিক খারাপভাবেই কেবল ব্যর্থ হয়নি; ইন্ডিয়ার এই ততপরতা এতে নেপাল এক চরম ভারতবিরোধী নেপালে পরিণত হয়। সফল হয়ে উঠে দাড়িয়েছিল।  ফলে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে নেপালের নয়া কনস্টিটিউশনের ‘প্রোক্লেমেশন’ বা ঘোষণা সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু সেই শেষ! এর পরের নেপাল গত দশ বছরে ক্রমশ এ’তিন দলেরই দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির দেশ ও সরকারে পরিণত হয়। আর সেটারই পরিণতি আমরা দেখছি এবারের নেপালের তরুণদের গণ-উত্থান!

আমি মনে করি, মাত্র দশ বছরেই এমন পরিণতি হওয়ার পেছনের প্রধান কারণ নেপালের রাজনীতিতে প্রকাশিত কমিউনিস্ট আধিপত্য। মনে রাখতে হবে, নেপালে রাজতন্ত্রের বিকল্প হিসাবে রিপাবলিক নেপাল গড়ার প্রধান কারিগর হলেন দাহাল প্রচন্ড, এবং তার সাথে ছিলেন মূলত তাঁরই বিদেশি তবে ইতিবাচক সাপোর্টিংয়ের একাডেমিক বন্ধু বা সিনিয়র একাদেমিক -এরা।

এতে অনেকের মনে হতে পারে, এটা ভালোই তো হয়েছে। সেটা হয়ত। কিন্তু এর স্ববিরোধটা আমাদের খেয়াল করতে হবে। সেটা হল, একদিকে দাহাল মৌলিকভাবে – মাওবাদী কমিউনিস্ট। তাহলে তিনি নিজ ‘শ্রেণির রাষ্ট্রচিন্তা’ ফেলে এক ‘রিপাবলিক রাষ্ট্র’ গড়ার ভক্ত হন কেমন করে? অনেকেই হয়তো এদিকটা খেয়াল করেননি। মনে রাখতে হবে, মার্কস বা লেনিনের ‘শ্রেণির রাষ্ট্রচিন্তায়’ জনগণ বলে কোনো ধারণা নেই; কোনো চিহ্ন পর্যন্ত নেই!

জনগণ শব্দটা ইংরেজি ‘পাবলিক’ শব্দের বাংলা। যদিও ‘পিউপল’ শব্দের অন্তর্ভুক্তি মার্কস বা লেনিনের নয়; এটি বরং চীনা মাওয়ের। মাও মোটা দাগে স্টালিনিস্ট (মানে মার্কস বা লেনিনকে নিজের মত করে বুঝা বা রপ্তকারী স্টালিন) হলেও ট্রাডিশনাল ‘শ্রেণির রাষ্ট্রচিন্তা’ থেকে কিছুটা বের হয়ে জনগণ ধারণার দিকে নিজ আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু সব ক্ষেত্রে নয়। শেষ বিচারে মাও-ও ‘শ্রেণি’ না ‘পাবলিক’-কার পক্ষ নেবেন, সে ফয়সালা করতে পারেননি! আবার বলা যায়, পারেননি বলেই চীন এখনো ‘শ্রেণিবোধের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বের’ চীন হয়েই আছে! পাবলিকের রাষ্ট্র (মানে রিপাবলিক রাষ্ট্র) ধারণার ‘মর্ম উপলব্ধ কোনো চীন’ হতে পারেনি, এখনো।

বিশেষতঃ, পাবলিক মানে নাগরিক জনগণকে শ্রেণী নির্বিশেষে  মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার এক রিপাবলিক রাষ্ট্র, অধিকার ভিত্তিক এক রাষ্ট্রই আয়েম করতে হবে – এতদুর এখনও মাও বা দেং জিয়াও পিং -এর এখনকার চীন পৌছাতে পারে নাই! অস্পষ্টতায় আছে! যদিও গ্লোবাল হিয়ম্যান রাইট ইস্যুতে একালের চীনের আগেহ ক্রমশ বাড়তেছে!

 

আসলে শ্রেণি আর পাবলিক ধারণার মূল ফারাকটা কোথায়ঃ
রাষ্ট্র মানে মূলত নাকি কোনো না কোনো একটা শ্রেণির রাষ্ট্র; এ কথা বলে মার্কস থেমেছিলেন। লেনিন সেটাকে আরও চরমে নিয়ে বলেছেন, রাষ্ট্র মানে মূলত কোনো না কোনো শ্রেণির একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র। লেনিনের যুক্ত করা বাড়তি শব্দটা হল – একনায়কতান্ত্রিক; যা মার্কসের বলা অন্তর্নিহিত অর্থটাকে স্পষ্ট করে সামনে নিয়ে এসে বলা। কিন্তু সেটা যাই হোক, মার্কস বা লেনিন কারও ধারণাই ‘পাবলিক’ ধারণাটাকে আপন করে নেয় না।ধারে কাছেও যায় নাই। 

পাবলিক মানে হলো দেশের ‘এনিবডি’ বা শ্রেণী নির্বিশেষে যে কেউ, যে নাগরিক; এবং তাদের কমন স্বার্থ এটাই পাবলিক বা পাবলিক ইন্টারেস্ট, বাংলায় যা জনস্বার্থ

তুলনায় মার্কসের কাছে ‘জনগণ’ বলে কোনো ধারণা-ই নেই। সবই একটা শ্রেণির ধারণা আর এক শ্রেণির বিরুদ্ধে অপর একটা শ্রেণি ধারণা। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ দিকটা হল, জনগণ বা পাবলিক ধারণাটা এক রাজনৈতিক ধারণা। রাজনৈতিক ধারণা মানে? মানে হল, এটা যেমন এটা রাজনৈতিক অধিকারের ধারণা; যা মার্কসের অভিধানে নেই। বরং ১৯৬৬ সালে এসে এটা বড়জোর অর্থনৈতিক বা বৈষয়িক স্বার্থের ধারণা যেমন – অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিতসা ও বাসস্থানের ধারণা।    পাবলিক শব্দটা যেমন নাগরিক মাত্রই এবং দেশের সবার ন্যূনতম ও কমন এবং সমান অধিকারের ধারণা; এর বিপরীতে শ্রেণি ধারণায় সমাজের কেবল একটা শ্রেণি এবং কেবল তার আধিপত্যের পক্ষে সব সাফাই দেওয়া; সেটা এমনকি তাকে একনায়ক বানানো পর্যন্ত!

মনে রাখতে হবে, এর সুবিধা নিয়েই আমাদের দেশে ‘চেতনা ব্যবসা’ হাসিনা এত জাঁকজমক করে নিয়েছিলেন – নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা শ্রেণির নেতা বলে ঘোষণা দিয়ে। এতে তিনি বিশেষ ক্ষমতাবান শ্রেণির ক্ষমতার রাষ্ট্রনায়ক দাবি করতেন, আর যারা যাকেই তার বিপরীত শ্রেণি (রাজাকার শ্রেণি) বলে ট্যাগ, লেবেল বা ঘোষণা করে দিতেন, তার আর কোনো নাগরিক অধিকার থাকত না, নাই হয়ে যেত। ফলে তাকে গুম, আয়নাঘর বা গুলি করা  সব জায়েজ হয়ে যেত। এই হল, নাগরিক অধিকারের বিপরীতে শ্রেণিচিন্তার ব্যবহারিক তাণ্ডব এবং পরিণতি।

তাহলে এবার প্রাসঙ্গিক করে বলি। নেপালের মাওবাদী দাহাল প্রচন্ড, তিনি রিপাবলিক নেপাল গড়লেও তিনি তো আসলে কমিউনিস্ট, শ্রেণিচিন্তার কমিউনিস্ট। ফলে ডিপ অন্তর থেকে  ‘পাবলিক’ ধারণায় কোনো নাগরিক অধিকার ধারণার নেতা তিনি নন! আসলে মৌলিকভাবে ‘রিপাবলিক’ ধারণার নেতাই তিনি নন। তাহলে ‘রিপাবলিক’ ধারণার আবার আলাদা বৈশিষ্ট্য কী? রিপাবলিক বুঝতে গেলে ‘রাজতন্ত্র’ বুঝতে হবে। কারণ রাজতন্ত্র উপড়ে ফেলা, এর বিকল্প নতুন ও এর বিপরীত শাসনব্যবস্থার চিন্তা থেকেই রিপাবলিক (প্রজাতন্ত্র) ধারণার উৎপত্তি। রাজা উতখাত করে বিপরীতে প্রজাদের শাসন!  যেমন রাজার বিপরীতে শাসন ক্ষমতার উৎস কী হবে? শাসককে ক্ষমতা কে দেবে? এরই জবাব হল জনগণ বা পাবলিক দিবে।


পাবলিক সব ক্ষমতার উৎস। তাই পাবলিকের প্রতিনিধি মানে জনপ্রতিনিধি রাষ্ট্রশাসন করবে। তাই রাজা, সম্রাট, আমির, বাদশার বিপরীতে কোনো ‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিই’ কেবল রাষ্ট্রশাসন করবে। এ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির (কোনো শ্রেণির প্রতিনিধি নয়) শাসন সিস্টেমই হলো রিপাবলিক রাষ্ট্র!

কমিউনিস্ট চিন্তা মাত্রই আইডিয়ালঃ
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে রাখতে হবে, কমিউনিস্ট চিন্তা মাত্রই আইডিয়াল [ideal]। মানে “হওয়া উচিত” অর্থে একটা ধারণা। মানে বাস্তবে বাস্তবায়িত করে দেখানো কোন ধারণা নয়! তাই কমিউনিস্টদের প্র্যাকটিসটাই এমন যে, সেটা আসলে কমিউনিস্ট হিসাবে ‘কী হওয়া উচিত’-এরই বয়ান। মানে এটা বাস্তবে বাস্তবায়িত করে দেখানো, কতটা হয়েছে, হওয়া সম্ভব সেই ধারণা একেবারেই নয়। আর এ কারণের দাহালেরা  দশ বছরের ব্যবহারিক শাসন ক্ষমতা চালানোর মধ্যেই একেবারে ব্যর্থ শুধু নয়, চরমভাবে তরুণদের চাহিদা আর হাহাকার বুঝাবুঝি থেকেই বিচ্ছিন্ন!

এর সঙ্গে রয়েছে দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতিতে ডুবে যাওয়া। আর এখান থেকেই এককালে রাজনীতিবিদদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া অ্যাকশন দেখানো সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি তরুণদের প্রধান চয়েজ, তিনি নির্বাহী প্রধানের ক্ষমতায় শপথ নিয়েছেন। আর সেই সঙ্গে প্রধান তিন দলের ছয় সিনিয়র নেতাকে রাজনীতি থেকে অবসরের প্রস্তাবের বাস্তবায়ন চলছে : ‘আমরা ছয়জন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি যৌথ বিবৃতি পাওয়ার জন্য কাজ করছি, যাতে তাদের অবসর নেওয়ার এবং দেশকে নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।’

তরুণদের এ আপসটা বাস্তবোচিত। কারণ, প্রধান তিনটি দলকেই উচ্ছেদ করে দিলে নতুন রাজনীতির সাময়িক নেতা কে হবে? নয়া নেতা গড়ে উঠতে তো সময় লাগবে! আর এর সঙ্গে দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতি একেবারে নির্মুল না হোক নাগাম টেনে ধরা সহজ কাজ নয়; এছাড়া তা করতে সময় তো লাগবেই!

 

গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

আপডেটঃ   ১৯  সেপ্টেম্বর ২০২৫     ভোর রাত ০২ঃ ৫৫

[এই লেখাটা এর আগে প্রথম ভার্সানে ছাপা হয়েছিল দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় আমারই লেখা এক কলাম হিসাবে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫।  আজ এখানে সে লেখাটারই  আরেক বর্ধিত এক নয়া এডিটেড ভার্সান এখানে আমার নিজ সাইটে ছাপা হল। বলাই বাহুল্য এখানে শিরোনামটাই শুধু নতুন নয় বরং এমন অনেক প্রসঙ্গই নয়া এখানে যোগ করা হয়েছে যেটা পত্রিকার ভার্সানে ছিল না। আসলে পত্রিকার কলাম ভার্সান মানে যেটা যুগান্তরের এডিটরিয়াল পলিসি সঠিক মনে করে সেই ভার্সান; এভাবে দেখাটাই সঠিক হবে। আর তুলনায় এটা আমার নিজ পরিবর্ধিত-এডিটেড ভার্সান মনে করলেই সঠিক হবে বলে আমার বিশ্বাস! ]

Source: https://wp.me/p1sCvy-6xb

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here