
বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, দেশে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে ৫৩ বছরের জঞ্জাল পাঁচ বছরে দূর করে একটি ন্যায়-ইনসাফপূর্ণ মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
তিনি গতকাল রাজধানীর রামপুরার অলিভ রেস্টুরেন্টে রামপুরা উত্তর থানা জামায়াত আয়োজিত সুধী ও পেশাজীবীদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
থানা আমির ফজলে আহমদ ফজলুর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা। বক্তব্য রাখেন সাবেক থানা আমির মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল হালিম ও নায়েবে আমির ভিপি শাহাবুদ্দিন প্রমুখ।
এ সময় সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের হেদায়েতের জন্য পবিত্র কালামে হাকিম পাঠিয়েছেন। আমরা পেয়েছি একটি পরিপূর্ণ, শাশ্বত ও নির্ভুল জীবন বিধান। আমরা যাতে নির্মূল জীবন বিধান অনুসরণ করে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তিলাভ করতে পারি, সে জন্যই যুগে যুগে নবী-রাসূলগণকে প্রেরণ করা হয়েছে। আর আল্লাহর বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করলে দুনিয়াতে থেকে সব জুলুমাতের অবসান ঘটে এবং নূর তথা আলোকিত রাস্তা প্রস্তুত হয়। তাই আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান সবাইকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করতে হবে। কেউ আংশিক অনুসরণ করলে তাকে দুনিয়াতে লাঞ্ছিত হতে হবে এবং আখেরাতে অপমানজনকভাবে ধাক্কা দিয়ে জাহান্নামে পাঠানো হবে। তিনি দ্বীনের পরিপূর্ণ বিজয়ের লক্ষ্যে সবাইকে এক প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মানুষের তৈরি জীবনবিধানের পরিবর্তে ব্যক্তি, সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে ইসলামী বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। যারা আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী বিচার-ফয়সালা করে না তাদেরকে কালামে পাকে স্থানভেদে কাফির, ফাসিক ও জালিম হিসাবে উল্লেখ করে ভয়াবহ পরিণতির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের দেশে নামাজ, রোজা, হজ্জ ও জাকাতের চর্চা সীমিত পরিসরে থাকলে এবং এতে কেউ বাধা প্রদান না করলেও দেশে সুদভিত্তিক অর্থনীতি চালু রয়েছে। কিন্তু এ সুদভিত্তিক অর্থনীতির পরিবর্তে জাকাতভিত্তিক ইনসাফপূর্ণ অর্থনীতি দেশে চালু করতে হলে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। আর এর জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্র ক্ষমতা। ক্ষমতা ছাড়া রাষ্ট্রের কোনো মৌলিক বিধান পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
মহানগরী আমির বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি গণমুখী, আদর্শবাদী ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন। জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় পাঠালে দ্বীনি আদর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যে রাষ্ট্রে মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না; থাকবে না কোনো ক্ষেত্রেই বে-ইনসাফি। দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করবে রাষ্ট্রই। জামায়াত পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলে দেশকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করে সবার জন্য ইনসাফ ও সুবিচার নিশ্চিত করা হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সবার আগে দেশকে দারিদ্রমুক্ত করা হবে। প্রত্যেক নাগরিকের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ক্ষেত্র বিশেষে অফেরৎযোগ্য অনুদান, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কর্জে হাসানা প্রদান করা হবে। আর দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক আত্মনির্ভরশীল হলেই দেশও আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে।
তিনি দেশকে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সকলকে জামায়াতে ইসলামীর পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।