ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফিলিস্তিনের সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দুই রাষ্ট্রনীতি গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। আজ রোববার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এই ইফতারের আয়োজন করা হয়। ইফতার অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন অংশ নেন। এ ছাড়া চীন, ভারত, পাকিস্তান, নরওয়ে, সুইডেন, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা ইফতার অনুষ্ঠানে ছিলেন। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকেরাও ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।
সিঙ্গাপুরে প্রায় তিন সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে গতকাল শনিবার ঢাকায় ফেরেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ এই ইফতার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকায় প্রথম কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিলেন তিনি।
ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ একটা গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট পড়েছে। দেশে একটা ‘ফ্যাসিস্ট রেজিমের’ শাসন চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ৭ জানুয়ারি একটি নির্বাচন করেছে, যে নির্বাচনের দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। নির্বাচনে নির্লজ্জ কারচুপি, অনিয়ম, ক্ষমতাসীনদের তৈরি করা সহিংসতার চিত্র এবং দেশজুড়ে নির্বাচনী কারসাজির চিত্র গণমাধ্যমের প্রতিবেদন, আলোকচিত্র ও ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
এ ছাড়া নির্বাচন ঘিরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলার কথাও কূটনীতিকদের জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, দেশের জনগণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এই সরকারের পদত্যাগ এবং নতুন নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করছে। বর্তমান সংকট সমাধানে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।
ইফতারের আগে বিএনপি মহাসচিব কূটনীতিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি ইফতারে অংশ নেওয়া কূটনীতিকদের শুভেচ্ছা জানান।
ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, মীর নাসির, বরকত উল্লাহ, আবদুল আউয়াল, শামসুজ্জামান, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলে এলাহী আকবর, আবদুল কাইয়ুম, ফরহাদ হালিম, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, শ্যামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম, জহির উদ্দিন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, কায়সার কামাল, আসাদুজ্জামান আসাদ, ফাহিমা নাসরিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া পেশাজীবীদের মধ্যে অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক শহীদুজ্জামান, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, সাবেক ব্যাংকার বখতিয়ার নাসের, সাবেক সাংসদ গোলাম মওলা রনি উপস্থিত ছিলেন।
ইফতার ও মাগরিবের নামাজ শেষে কূটনীতিকরা নৈশভোজেও অংশ নেন।
prothom alo