টেস্টে বিরতি চান তাসকিন

টেস্টে বিরতি চান তাসকিনতাসকিন আহমেদ

সংবাদ সম্মেলন শেষে ড্রেসিংরুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তাসকিন আহমেদ। পাশ থেকে কুশল জানতে চাওয়া হলে হাসিমুখে জানান ভালো আছেন। কাঁধের চোটের উন্নতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বলেন, নিয়মিত পরিচর্যা করে খেলতে হচ্ছে বিপিএলে।

ডান কাঁধের লিগামেন্টের আংশিক ছেঁড়া নিয়ে লম্বা সময় ধরে খেলছেন তাসকিন। লিগামেন্ট ছেঁড়ার পরিধি বেড়ে যাওয়ায় বিরতি নিতে হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। বিশ্বকাপ চলাকালে তাসকিনের ডান কাঁধের লিগামেন্টে ৪০ শতাংশ টিআর ধরা পড়ে এমআরআই স্ক্যানে। চোট পরিচর্যা করে কোনোরকমে বিশ্বকাপটা শেষ করেন। চোটের গভীরতা অনুধাবন করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম ও অ্যাওয়ে সিরিজ থেকে বিশ্রাম দেওয়া হয় তাঁকে। বিশ্রাম-পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসন সম্পন্ন করে খেলায় ফেরেন তিনি। বিপিএল টি২০ টুর্নামেন্ট খেলার মধ্যেই তাসকিনের উপলব্ধি হয়েছে, টেস্ট ছেড়ে দিলে ওয়ানডে–টি২০ ক্যারিয়ার বড় হতে পারে।

কাঁধের লিগামেন্টের টিআর বেড়ে গেলে অস্ত্রোপচার করাতে হবে বলে জানান তাসকিন। আর অস্ত্রোপচার হলে এক বছর খেলার বাইরে থাকতে হবে পুনর্বাসন সম্পন্ন করতে। বোলিংয়ের পুরোনো ছন্দ ফিরে পাওয়া নিয়েও শঙ্কা থাকবে।

যেটা ভীষণ ভাবাচ্ছে তাসকিনকে, ‘বিশ্বকাপের সময় ৪০ শতাংশ ছিঁড়েছে। বেশি চাপ দিলে ছেঁড়ার পরিমাণ বাড়বে। তখন অস্ত্রোপচারে যেতে হবে। আর অস্ত্রোপচারের পর লম্বা বিরতি থাকে। আগের মতো বোলিং নাও হতে পারে। শুধু সাদা বলের ক্রিকেট খেললে চাপ কম পড়বে। পরিচর্যা করে খেলে যেতে পারব। বিষয়টি নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে কথা বলব। আশা করি, বোর্ড আমার সমস্যা উপলব্ধি করতে পারবে।’

টেস্ট ম্যাচে একজন পেসারকে কম করে হলেও দুই ইনিংসে ৩৫ থেকে ৪০ ওভার বল করতে হয়। তাসকিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বোলারের কাছে প্রত্যাশাও থাকে বেশি। অথচ কাঁধে এ রকম চোট নিয়ে লম্বা স্পেলে সেরা বোলিং করা কঠিন তাসকিনের জন্য। বিশ্বকাপ শেষে তাই জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছিলেন, ‘তাসকিনের কাঁধে অস্ত্রোপচার করে খুব একটা লাভ হবে না। চোট পরিচর্যা করে খেলতে হবে। প্রয়োজনে খেলা কমাতে হবে।’

রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমানের কাঁধে অস্ত্রোপচারের পর পুরোনো ছন্দে ফেরা হয়নি। টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারেননি তারা। দু’জন সাদা বলের ক্রিকেটেও সেরা ছন্দ দেখাতে ব্যর্থ হন। রুবেল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ছিটকে গেছেন বেশ আগে। মুস্তাফিজ খেলেন শুধু সাদা বলের ক্রিকেটে।

তাসকিনকে পছন্দের সংস্করণ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হবে কিনা– জানতে চাওয়া হলে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘সে আমাদের কিছু বলেনি। বললে মেডিকেল বিভাগের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। কারও সমস্যা থাকলে তাকে সুযোগ দেওয়া উচিত। দেখি ও কী বলে।’

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু গতকাল সিলেটে ছিলেন বিপিএলের ম্যাচ দেখতে। তাসকিনের ক্যারিয়ারের স্বার্থে টেস্ট থেকে বিরতি দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা– জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘তাসকিনের সঙ্গে কথা বলতে হবে। ওর পরিকল্পনা জানার পর বাকি সিদ্ধান্ত।’

বিপিএল শেষেই জাতীয় দলের হোম সিরিজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজ ছাড়াও তিনটি করে ওয়ানডে ও টি২০ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ‘ওয়ার্ক লোড’ নিয়ন্ত্রণে রাখার স্বার্থে টেস্ট সিরিজ নাও খেলতে পারেন তাসকিন। কারণ টেস্ট খেলে চোট বেড়ে গেলে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে তাসকিনের টি২০ বিশ্বকাপ খেলা।

সূত্র : সমকাল