ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত ও চলমান বৈশ্বিক ডলার সংকটে সারাবিশ্বেই ক্রেতাদের কেনাকাটার অভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে। একই সঙ্গে ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতির এক তৃতীয়াংশ মন্দার মুখোমুখি হবে- এমন পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় বিগত ৬ মাসে দেশের তৈরি পোশাক রফতানির প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও, মূলত তা কমেছে।
কাজল আব্দুল্লাহ
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দেশের পেশাক শিল্পের অবস্থা নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সভাপতি ফারুক হাসান।
পোশাক খাতের রফতানির চিত্র তুলে ধরে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি বলেন, সবশেষ চলতি বছরের শেষ দুই মাসে রফতানি কমেছে। এর মধ্যে মার্চে ১ দশমিক ৪ শতাংশ ও এপ্রিলে ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমেছে।
গত বছরের নভেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রফতানি কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ৫ মাসে দেশটিতে রফতানি প্রবৃদ্ধি টানা কমেছে। এ সময়ে রফতানি মূল্য ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ কমেছে এবং পরিমাণে কমেছে ২৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
তবে নতুন বাজারে রফতানি আয় বেড়েছে জানিয়ে ফারুক হাসান বলেন, অপ্রচলিত বাজার থেকে গত ১০ মাসে ৭ দশমিক শূন্য ১ বিলিয়ন ডলার আয় এসেছে।
তিনি বলেন, চলতি বছর শেষে নতুন বাজারে রফতানি ৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এ সময়ে মোট পোশাক রফতানির প্রবৃদ্ধি হবে ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ আর নতুন বাজারে প্রবৃদ্ধি ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ।
২০২১-২২ সালে মোট রফতানি আয়ের মধ্যে পোশাক খাত থেকেই ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশ এসেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যা চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে দাঁড়িয়েছে ৮৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ‘সহায়তা’ বলার দিন শেষ, বলতে হবে ‘ঋণ’
ফারুক হাসান বলেন, ‘রফতানি আয় বাড়িয়ে রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না। এক্ষেত্রে কৌশল গ্রহণ, বৈদেশিক বাণিজ্যের ভারসাম্য ধরে রাখা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল রাখতে হবে।
২০২৬ সাল পর্যন্ত সরকারের আরও সহায়তা অব্যাহত থাকলে চলমান পোশাকখাতের মন্দা মোকাবিলা করে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রফতানি সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিজিএমইএ’র সংবাদ সম্মেলনে তিন কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেছে। সেগুলো হচ্ছে:
১. ২১-২৭ মে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা এবং বৈদ্যুতিক ও অগ্নি নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করা হবে;
২. ১৮-২৪ জুন রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হবে; এবং
৩. ১৫-২১ জুলাই বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন করা হবে।