১২ এপ্রিল ২০২৩
ড. ফয়জুল হক
বিদ্যানন্দ কাদের তৈরি? তাদের উদ্দেশ্য কি? তা তাদের ভক্তকুলের পোস্ট, কমেন্টের মাধ্যমেই ওপেন হতে শুরু করেছে! সত্য হচ্ছে এতদিন প্রতারণা করে সাধারন ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতি নিয়ে টাকা পয়সা নিয়েছে। এখন কি করবে? যে বুদ্ধিজীবী বিদেশের টিকিট ক্যানসেল করে দেশে পরে আছেন বিদ্যানন্দে যাকাত দিবেন বলে! জানতে ইচ্ছে হচ্ছে সেই সম্মানিত ভদ্রলোকের যাকাত হয় কত? এই যাকাতে কি বিদ্যানন্দের অফিস ভাড়া হবে? ঐ দলের বুদ্ধিজীবীরা বা বামপন্থীরা কি আদৌ যাকাত দেয়? না কি এখন ডানপন্থী লোকদের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে যাকাত দেয়ার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
শিক্ষা নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যে শাহবাগীদের কর্ম পরিকল্পনায় ছদ্মবেশী নামে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিদ্যানন্দ। ২০১৩ সালের পরবর্তী সময়ে যখন শাহবাগীরা ফ্লপ খেয়েছে, তখন শাহবাগীদের সাথে সম্পর্কিত মতাদর্শের লোকদেরকে নিয়েই এই বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু করে। তারা নিরপেক্ষ সাজার জন্য পরিচয় গোপন রাখার মতো চতুরতার আশ্রয় গ্রহন করে। আমাদের দেশের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষজন তাদের সেই খপ্পরে পরেছেনও। বিদ্যানন্দের মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রমে অর্থ পয়সা দিয়ে সাহায্যও করে এদেশের সাধারন ধর্মপ্রাণ মানুষ। পাশাপাশি বিদেশী এজেন্ট থেকে বড় ধরণের সাহায্য আসতে থাকে ওদের ফান্ডে। যা দিয়ে গোপনে চলছে ওদের মিশন!
ব্যক্তিগত জীবনে আমার একটি অতি সাধারণ নিয়ম আছে, আর তা হচ্ছে, যখন দেখি কোন হাসিনা ভক্ত কিংবা বামপন্থী কেউ কারো প্রশংসা করছে বা কোন ব্যক্তি বা অর্গানাইজেশন এর ব্রান্ড এম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছে, ঠিক তখনই আমার সন্দেহ শুরু হয় ওদের এজেন্ডা বা উদ্দেশ্য নিয়ে। তেমনি একটি ঘটনা দেখলাম গত কয়েকমাস পূর্বে, একজন আওয়ামী সমর্থক দাবীদার, বুদ্ধিজীবী টাইপের মনে করা লোকটি হঠাৎ করে বাংলাদেশের সকল পেশার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, শায়েখ আহমদুল্লাহর আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন! পাশাপাশি কোন প্রকার প্রসঙ্গ ছাড়াই বিদ্যানন্দের প্রশংসায় মেতে উঠলেন! তখনই আমার সন্দেহ শুরু হয়েছিলো বিদ্যানন্দের উদ্দেশ্য নিয়ে। সেই ব্যাক্তির আসল উদ্দেশ্য নিয়ে। যদিও আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশন যে পরিমান সমাজের কল্যাণে কাজ করছে তার আসে পাশেও নেই বিদ্যানন্দ।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কিছু ভাত ছিটানো নিম্নমানের দালাল রয়েছে, যারা বিশেষ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সবসময় শেখ হাসিনার পিছনে থেকে কাজ করছে, সাপোর্ট করছে।এদেরকে মাঝে মধ্যে দেখবেন ঢোল তবলা নিয়ে শেখ হাসিনার নৌকার পক্ষে মাঠে ময়দানে চষে বেড়ায়।নির্লজ্জ বেহায়ার মতো জনগনের বিরুদ্ধে গিয়েও ভোট ডাকাতদের পক্ষে নৌকার স্লোগান দেয়। যদিও ওদের কথায় কেউ ভোট দেয়না বা ওদের সমাজের কাছে কোন মূল্যই নেই। কারণ যে দেশে জনগন ভোটই দেয়না, দিতে পারেনা সেই দেশে ওদের ক্যাম্পেইনে কি আসে যায়?
গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ করে দেখতে পেলাম সেই দালাল বাহিনীই আবার বঙ্গবাজারে আগুন লাগাকে কেন্দ্র করে লাইন দিয়ে পোড়া কাপড় কিনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এর কাছ থেকে! দুয়েক দিনের মধ্যেই দেখতে পেলাম বুদ্ধিজীবী বনে যাওয়া আরো কয়েকজনের বিদ্যানন্দের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে যাকাত পর্যন্ত দিয়ে দিচ্ছেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে। যদিও ওদের সেই যাকাতের পরিমান নিয়ে আমার প্রশ্ন রয়েই গেলো। বিদ্যানন্দ তাদের সাহায্য নামকা ওয়াস্তে গোপন রাখার কথা বললেও আমার বিশ্বাস কয়েকদিনের মধ্যেই সেই ভদ্রলোকের যাকাত দেওয়ার মানি রিসিপট আমরা অনলাইনে দেখতে পাবো। কারণ ইদানীং তাকে আওয়ামীলীগের কাছে আওয়ামীলীগার সাজতেই ফেইসবুকে তার সম্মানিত বাবা যে আওয়ামীলীগ করতো তার প্রমান স্বরূপ চাঁদা প্রদানের মানি রশিদ দেখাতে হচ্ছে! কারণ সেতো শাহবাগী আওয়ামীলীগ! সেই ধারনা থেকেই অপেক্ষায় আছি যাকাত দেওয়ার তথ্যটাও তিনি হয়ত শেয়ার করবেন অচিরেই।
যে কোন সামাজিক সংগঠনের সকল ভালো কাজের আমি সমর্থন করি। তবে তা হতে হবে স্পষ্ট এবং ওপেন। দেশবাসীর কাছে ক্লিয়ার। কিন্তু বিদ্যানন্দ কেন সে কাজটি করতে পারলোনা? কারণ ওদেরকে তাহলে মানুষ বিশ্বাস করবেনা, সাহায্য দিবেনা। এদেশের মানুষ আর যাই হোক ধর্মপ্রাণ মানুষ ছাড়া এই পথে অন্য কাউকে বিশ্বাস করতে চায়না। যে কারণে পরিচয় গোপন রাখা ছিলো ওদের একটি অপকৌশল মাত্র।তাই সাময়িক মিথ্যা প্রতারণা করেই পথ চলা শুরু করেছিলো। কারণ ওরা যে শাহবাগের এপিঠ ওপিঠ।
যেই বিদ্যানন্দ শুরু হয়েছে পথ শিশুকে শিক্ষা দিবে বলে! আজ তারা ইসলাম ধর্মের অন্যতম খুঁটি যাকাত প্রথাকে তাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে নতুন করে পথভ্রষ্ট করছে সাধারণ নাগরিকদেরকে। যাকাত একটি ইসলামের পবিত্র বিধান যা পালনে রয়েছে রয়েছে বহু সতর্কতা।আর আমাদের দেশ ইসলামী কোন সরকার পদ্ধতি না থাকায় ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেই এই যাকাত বিতরণ হচ্ছে যুগযুগ ধরে। পাশাপাশি বিভিন্ন ইসলামিক অর্গানাইজেশন গুলো এই যাকাত উত্তোলন করে বিতরণ করছে বিভিন্ন উপায়ে।
তাহলে হঠাৎ করে বিদ্যানন্দ যাকাত ফান্ডের আসল উদ্দেশ্য কি? কেন শিক্ষার নামে ফাউন্ডেশন খুলে যাকাতের নামে পরিচালনার ইচ্ছে জেগেছে তাদের? কেনইবা আওয়ামীলীগার সব একত্রিত হয়ে মাঠে নেমেছে ওদের পক্ষে ক্যাম্পেইন করতে?
এর উত্তর অত্যন্ত সহজ, এদেশের মানুষ বিরানি খাওয়ায়ে তৈরি করা শাহবাগীদের বিশ্বাস করেনা। হাজারো প্রপাগান্ডা ছড়ায়েও এদেশের মানুষকে তৈরি করতে পারেনি আলেম ওলামা ও ধর্মবিরোধী! যে কারণে এদেশের মানুষ আলেম ওলামার পাশে থেকে সকল দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। যার ছোট্ট উদাহরণ হচ্ছে শায়েখ আহমাদুল্লাহর আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। বিদ্যানন্দের তৈরি করে আলেম ওলামাদের কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশনগুলো থেকে মানুষকে ভিন্ন খাতে ফেরাতেই নতুন করে এই ষড়যন্ত্র শুরু। তবে ওরা শাহবাগীদের মতোই বুমেরাং হচ্ছে। ওরা এখন বিশ্বাস হারাচ্ছে সকল নাগরীকগদের কাছে। পরাস্ত হোক ওদের ষড়যন্ত্র, ধ্বংস হোক ওদের চক্রান্ত।