তিক্ত মতবিরোধ, জি-২০ তেও একই ঘটনা

logo

মানবজমিন ডেস্ক

(১ দিন আগে) ৩ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার, ৯:১৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ২:০২ অপরাহ্ন

mzamin

যেমনটা ভাবা হয়েছিল, ঠিক তা-ই ঘটলো। দিল্লিতে জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সামিটে প্রাধান্য বিস্তার করেছে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ইস্যু। তা নিয়ে উত্তপ্ত মতবিনিময় হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আয়োজক ও প্রেসিডেন্সি ভারত বলেছে, মতবিরোধের কারণে তারা এই সামিটেরও কোনো যৌথ বিবৃতি দিতে পারছে না। সামিটে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, বিনা প্ররোচণায় এবং অন্যায়ভাবে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে এই মিটিং বাধাগ্রস্ত হয়েছে। জবাবে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে ‘ব্লাকমেইল এবং হুমকি’র অভিযোগ এনেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এর আগে ব্যাঙ্গালোরে জি-২০-এর অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলনও একইভাবে শেষ হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

অন্যদিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এমন অন্য ইস্যুগুলোতে আলোচনায় জোর দিতে চেয়েছে ভারত। তবে ইউক্রেন ইস্যুতে মতবিরোধে সবার একমত হওয়া সম্ভব নয়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, আমরা চেষ্টা করেছি।

কিন্তু দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধ খুবই বেশি। 

জি-২০ হলো বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী ১৯টি দেশ এবং ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের একটি গ্রুপ। বিশ্বের মোট অর্থনীতির শতকরা ৮৫ ভাগই ধারণ করে তারা। গ্রুপটির রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন, চীনের কিন গ্যাং সহ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ভারতের প্রেসিডেন্সির অধীনে দিল্লিতে এই সামিটে যোগ দিয়েছিলেন। এক বছরেরও বেশি সময় আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এটাই ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিকদের প্রথম মুখোমুখি হওয়া। বৈঠকের এক ফাঁকে ল্যাভরভের সঙ্গে প্রায় ১০ মিনিট সাক্ষাৎ করেন অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এসময় যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছে, যতদিন লাগে ইউক্রেনের পাশে থাকবে পশ্চিমারা। এ সময় ‘নিউ স্টার্ট’ পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে আবার যোগ দেয়ার জন্য রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করেন ব্লিনকেন। সম্প্রতি এই চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করেছে রাশিয়া।
কোনো সমঝোতা হওয়ার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন রাশিয়ান কর্মকর্তারা। আরও আগে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি অনুমোদন বিষয়ক একটি চুক্তিকে পশ্চিমারা কবর দিয়েছে বলে অভিযোগ করে রাশিয়া। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, ইউক্রেনের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত করছে মস্কো। রাশিয়ান কর্মকর্তারা বলেন, পশ্চিমারা ব্লাকমেইল করছে ও হুমকি দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে একমত হয়েছে মস্কো ও বেইজিং। তবে রাশিয়ার এ দাবি নিশ্চিত করেনি চীন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধিবেশন উদ্বোধন করেন। তিনি সতর্ক করেন এই বলে যে, বৈশ্বিক বিভক্তি টেকসই উন্নয়নের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশ অস্থিতিশীল ঋণের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তারা খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।

শেষে সমাপনী ভাষণ দেন এস জয়শঙ্কর। তিনি বৃহস্পতিবারের মিটিংয়ের পর ‘চেয়ারস সামারি’ উপস্থাপন করেন। এর অর্থ অংশগ্রহণকারীরা যৌথ বিবৃতিতে পৌঁছতে সক্ষম হননি। ইউক্রেন যুদ্ধের নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানায় মাত্র দুটি দেশ। তারা হলো রাশিয়া ও চীন।