- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:২৯
ঘুম থেকে উঠে মনটা খারাপ হয়ে গেছে? হতেই পারে। ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিয়েই যখন ক্যারাবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের স্কোরকার্ডটা দেখবেন, তখন মন খারাপ না হয়ে থাকতে পারে? আপনি তো শুধু স্কোরকার্ড দেখেছেন, কিন্তু একবার তাদের কথা ভাবুন, যারা কাক ডাকা ভোরে উঠে বসে আছে খেলা দেখতে! গায়ানার জার্সিতে সাকিব আল হাসানকে দেখতে।
সাকিব আল হাসান ক্যারাবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলতে গিয়েছেন, বেশ পুরনো খবর। নানা ধরনের গুঞ্জন উঠলেও গত ১৮ অক্টোবর সাকিব আল হাসান দলের সাথে যোগ দেন। তবে খেলেননি সেইদিনের ম্যাচে, বার্বাডোজের বিপক্ষে। কারণ হিসেবে জানা যায়, সাকিব আল হাসানের সাথে গায়ানা আমাজনের চুক্তিটাই মূলত দক্ষিণ আফ্রিকান তাবরিজ শামসি চলে যাওয়ার পরে।
অতঃপর গতকাল ভোরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামেন এবারের সিপিএলে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি। তবে ভুলে যাওয়ার মতোই শুরু তার, জ্যামাইকার বিপক্ষে ইমাদ ওয়াসিমের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে প্রথম বলেই ফেরেন সাজঘরে। আজও যেন হলো তার পুনরাবৃত্তি। সেদিন লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়লেও আজ মার্ক ডেয়ালের বলে বোল্ড হয়ে ফের সাজঘরে ফিরেন প্রথম বলে, শূন্য রানে।
এমন মুহূর্ত সাকিব আল হাসান লাইফে হয়তো আর কখনো দেখেননি। ব্যাট হাতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের সবথেকে বাজে সময়টাই যে পার করছেন, তাও বলা যায় নিঃসন্দেহে। বল হাতে যদিও সান্ত্বনা দিচ্ছেন, তবে ব্যাট হাতে সমর্থকদের অতৃপ্ত করে রেখেছেন। সর্বশেষ ৯টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সাকিব আল হাসানের রান ১৫১। তার মাঝে এক ম্যাচেই করেছেন অপরাজিত ৬৮ রান।
৬৮ রানের ইনিংসটাসহ গড় হয় ১৭ ছুঁই ছুঁই। স্ট্রাইকরেট ১২২। আর সেই ইনিংসটা দূরে সরালে, চোখ উঠবে কপালে। হয়তো নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে চাইবেন না, বলতে বাধ্য হবেন সাকিব আল হাসানও এতো খারাপ করতে পারেন? হ্যাঁ, বাকি ৮ ম্যাচে গড় মাত্র ১০। আর স্ট্রাইকরেট মাত্র ১১৫। এই সময় বোলিংটাও হয়নি মনমতো। নিয়েছেন মাত্র ৮ উইকেটে। ইনিংসে ২ উইকেটের বেশি নিতে পারেননি একবারও।
সাকিবের ব্যাটে সর্বশেষ ইম্প্যাক্টফুল ইনিংস দেখা গেছে গত বিপিএলে। ফরচুন বরিশালের হয়ে সেই আসরে দারুণ ছন্দে ছিলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে সমতালে সম্মুখ থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। যদিও শিরেপা পাওয়া হয়নি, তবুও সাকিবের ব্যাটিং মন জয় করেছিলো সবার। হয়েছিলেন আসর সেরা ক্রিকেটার। প্রায় ২৯ গড়ে ১৪৪ স্ট্রাইকরেটে করেছিলেন ১১ ম্যাচে ২৮৪ রান, উইকেটও নিয়েছিলেন ১৬টি। ফলে সবাই ভেবেছিলো, সেই ২০১৯ বিশ্বকাপের সাকিব ফিরে এসেছেন বুঝি!
কিন্তু পরের তিন সিরিজে আর চলমান সিপিএলে নামের প্রতি করতে পারছেন না সুবিচার। তবে সাকিব আল হাসান চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার। তিনি জানেন কিভাবে ফিরে আসতে হয়। কিভাবে সমালোচনার জবাব দিতে হয়। ক্রিকেটারদের যে জবাব মুখে নয়, মাঠে দিতে হয় তা সাকিব ভালো করেই জানেন। সুতরাং, বিশ্বাস রাখাই যায়, সাকিব ফিরবেন, ফিরবেন চিরচেনা সেই রূপে, ব্যাটে-বলে সমতালে।