সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের পুরোনো খেলার পুনরাবৃত্তি এ দেশে আর করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘সংখ্যালঘু কার্ড দিয়ে অনেক খেলা হয়েছে। সেটা দেশেও যেমন হয়েছে, দেশের বাইরেও কম হয়নি। নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে আর দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্তে যুগ যুগ ধরে এই সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরুর স্পর্শকাতর বিষয় আর নির্যাতনের কল্পকাহিনি ফেঁদে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অপচেষ্টা দেশে-বিদেশে বারবার কারা করেছে, সেটাও আমরা সবাই জানি।’
মঙ্গলবার দলের চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও সালাউদ্দিন আহমেদ।
তারেক রহমান বলেন, এ দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে এক ধর্মের উপাসনালয় আরেক ধর্মের অনুসারীরা ঐতিহ্যগতভাবে সুরক্ষিত রেখেছে যুগ যুগ ধরে। বারবার প্রমাণ করেছে, এ দেশে সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই। আমাদের সবারই এক ও অভিন্ন পরিচয়—আমরা সবাই বাংলাদেশি। শুধু কথায় নয়, কাজেও এটার প্রমাণ দিতে হবে, যখনই প্রয়োজন হবে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস আর অনুশাসনকে পুঁজি করে যারা ধর্মীয় স্থাপনায় রাজনীতি করবে, বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করবে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা ধর্ম-বর্ণের বিভক্তিকে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে, নিজ নিজ এলাকায় ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ত্যাগ আর শত সহস্র নেতা-কর্মীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিএনপি জনগণের আস্থা আর বিশ্বাসের যে জায়গায় পৌঁছেছে, কতিপয় বিপথগামীর হঠকারিতায় সেটা বিনষ্ট হতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে দল আপসহীন, তিনি দলের কত শীর্ষে অবস্থান করেন, সেটা বিবেচ্য নয়।’
রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে দেশের সাংবিধানিক কাঠামো আর জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছে। যেটা সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য এখনো উন্মুক্ত। যাঁরা যে সংস্কারের প্রস্তাবনাই আনুন, আমাদের সংস্কার প্রস্তাবে সেগুলোর সবই অন্তর্ভুক্ত আছে।’
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিজয় এখনো অনেক দূরে, সফলতার পথ অনেক দীর্ঘ। আমরা গত সতেরো বছর বিরোধী দলে ছিলাম, আজও আছি। এখন আত্মতুষ্টির সময় নয়। বরাবরের মতো তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অতন্দ্রপ্রহরীর মতো অতীতে যেমন সংকটকালে দলের পাশে ছিলেন, আগামীতেও বাংলাদেশের জনমানুষের প্রত্যাশার ভাষা বুঝে তাদের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করলে বিএনপি দেশের মানুষকে একটা নতুন আর পরিবর্তিত বাংলাদেশ উপহার দিতে পারবে।’
Ajker Patrika