Published on :
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘এখন থেকে পাল্টা আক্রমণ করতে হবে। কেউ আমাদের কামড়াবে আর আমরা বসে বাঁশি বাজাব তা হতে পারে না।’
রাজধানীতে আজ শনিবার বিকেলে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অধিনস্থ আদালত এবং সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতিসহ ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীর মতিঝিলে পীরজঙ্গী মাজারের সামনে এই জনসমাবেশ হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ নিশিরাতের সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। আসুন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে প্রস্তুতি নিই। ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে এই সরকারকে বানের পানির মতো ভাসিয়ে দিব।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মো. রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় জনসমাবেশে বক্তব্য দেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, মীর সরফত আলী সপু, কামরুজ্জামান রতন, রকিবুল ইসলাম বকুল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, মহানগর বিএনপির নবীউল্লাহ নবী, হাবিবুর রশিদ হাবিব, লিটন মাহমুদ, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, কৃষকদলের শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, ওলামা দলের নজরুল ইসলাম তালুকদার, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাবসহ অনেকে।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ব্যালটের বদলে বুলেট কেন? অধিকারের কথা বলতে গেলে পুলিশের পিটুনি খাচ্ছে মানুষ। এই দেশের মানুষ ভোটাধিকার আদায়ের জন্য রাস্তায় নামলেই তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। যা বিশ্বের কোনো সভ্য দেশে হয় না। প্রতিবেশী ভারতেও গুলি করা হয় না। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য খুনি হাসিনার সরকার গুলি চালায়। তারা ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই ভোটের তোয়াক্কা করে না। তারা জনগণকে ধাপ্পা দিয়ে দিনের ভোট রাতে করেছে। সুতরাং তারা ভোটের তোয়াক্কা করবেও না। তোয়াক্কা করলে আজকে জিনিসপত্রের দাম এমন বাড়ত না।’
তিনি বলেন, “আজকে সরকারের শিল্পপ্রতিমন্ত্রী নিজের মুখেই বলেছেন, ‘সব কথা বলতে গেলে দেখবেন আমার লাশটা রাস্তায় পড়ে আছে’। এ ধরনের কথা যখন মন্ত্রী বলেন তখন আমরা আর কী বলতে পারি। আমাদের নেতাকর্মীরা তো অহরহ মার খাচ্ছে। গুলি খাচ্ছে। তাদের লাশ পড়ছে।’’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, গত শুক্রবার খুলনায় বিএনপির সমাবেশে গুলি করেছে। কেন? আপনারা তো আমাদের ট্যাক্সের টাকায় চলেন। যারা গুলি করছেন মনে রাখবেন এই পোশাক কিন্তু সারা জীবন আপনাদের গায়ে থাকবে না। সুতরাং গুলি চালানোর সময় ভবিষ্যতের জন্য এবং পরিবার ও সন্তানের বিষয়টি চিন্তা করবেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘৪৮ বছর পর যদি আপনারা জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিতে পারেন। আমরাও ৪৮ বছর পর আপনাদের বিরুদ্ধে আজকের অত্যাচার নিপীড়নের বিচার করতে পারব। আমাদের নতুন প্রজন্মকে বলব—তোমরা দেখে নাও এবং জেনে নাও আমাদের ওপর কী ধরনের অত্যাচার চালানো হচ্ছে। বিএনপি নাকি হাঁটু ভাঙা দল। তবে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেখুন না। বিএনপি হাঁটু ভাঙা নাকি কে হাঁটু ভাঙা? আজকে নতুন প্রজন্মের কেউ ভোট দিতে পারে না। তারা জানে না ভোটের রং কি? তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দিলেই বুঝবেন কোমরে জোর আছে নাকি হাঁটুতে। তখন পালানোর পথ পাবেন না। এখন ক্ষমতায় আছেন তো টের পাচ্ছেন না। আসলে আওয়ামী লীগ মিথ্যা বলতে বলতে অভ্যাস হয়ে গেছে। এখন শুধু শিল্প প্রতিমন্ত্রীর হুঁশ হয়েছে তবে সবার এখনো হুঁশ হয়নি।’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার জন্য ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ ’৭২-’৭৫ সালে আবারও বাকস্বাধীনতা হরণ করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম। আজও আমাদের যুদ্ধ চলমান। এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।’