৫ জানুয়ারি’র নির্বাচন জাতির জীবনে কালো অধ্যায় : মির্জা ফখরুল

Daily Nayadiganta

৫ জানুয়ারি’র নির্বাচন জাতির জীবনে কালো অধ্যায় : মির্জা ফখরুল – ছবি : নয়া দিগন্ত

৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল ও জনদাবীকে অগ্রাহ্য করে একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকে কালো অধ্যায় হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিবৃতি বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘৫ জানুয়ারী ২০১৪ গণতন্ত্র হত্যার এক নজীরবিহীন কালো অধ্যায়। ওইদিন নির্লজ্জ একতরফা নির্বাচন করার উদ্দেশ্যই ছিল ৭৫ এর একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত করার পথে অগ্রসর হওয়া। ৭৫ এর ২৫ জানুয়ারী গঠিত যে একদলীয় বাকশালী সরকার ব্যবস্থা ব্যর্থ হয় সেই ব্যর্থতার জন্য আওয়ামী লীগারদের মনোবেদনা পুঞ্জীভূত থাকে। সেই ব্যর্থতার গ্লানি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যই বর্তমান অবৈধ সরকার ভিন্ন আঙ্গিকে জনসমর্থনহীন একটি তামাশার নির্বাচনে সেই একদলীয় বাকশালের নবসংস্করণ তৈরী করেছে। জনমতকে তোয়াক্কা না করে, অ্যামিরাস কিউরিদের মতামতকে উপেক্ষা করে এমনকি নিজ দলীয় সংসদ সদস্যদের মতামতকেও উপেক্ষাসহ সকল বিরোধী দলের দাবিকে অগ্রাহ্যের মাধ্যমে শুধুমাত্র এক ব্যক্তির ইচ্ছায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। স্ববিরোধীতার এক নিকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে সরকারী দল আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, যারা জ্বালাও-পোড়াও এর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন করেছিল তারাই আজীবন ক্ষমতায় থাকার লালসায় সেই ব্যবস্থাটি সংবিধান থেকে মুছে দেয়। আর এটি করতে গিয়ে রক্তের অজস্র স্রোতধারায় অর্জিত গণতন্ত্রকে সমাহিত করতে বাংলাদেশের বহুদলীয় বহুমাত্রিক পরিচয়কে মুছে দেয় তারা। গণতন্ত্রের পথচলাকে থমকে দেয়া হয়।

দেশে এক ভয়াবহ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজমান উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, অবরুদ্ধ জাতির সাফোকেশন ভেন্টিলেট যাতে করা সম্ভব না হয় সেজন্য সকল ছিদ্র বন্ধ করে দেয় তারা। বিরোধী কণ্ঠ, মত ও পথকে নিশ্চিহ্ন করে বেপরোয়া দেশশাসন করতে গিয়ে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের আকাশচুম্বী মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যূৎ, পানি ও গ্যাসের ভুতুড়ে বিলে স্বল্প আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। আর এসব নিয়ে যাতে কোন প্রতিবাদ না হয় সেজন্য গণতন্ত্রকে রাষ্ট্র ও সমাজ থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন প্রতিদিন নির্মম নিষ্ঠুরতায় বিরোধী দলের কর্মসূচিকে বানচাল করতে সাজানো প্রশাসনকে বেপরোয়াভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এর মধ্য দিয়েই তারা মানুষের বাক-ব্যক্তি ও বিবেকের স্বাধীনতাকে কঠিন লৌহ শৃঙ্খলে বন্দী করে রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের মুখে গণতন্ত্রের কথা বলার অর্থই হলো মানুষের নাগরিক স্বাধীনতার দিকে বিপজ্জনক বার্তা। আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যে গণতন্ত্রের ছিটেফোটাও কখনো স্থান পায়নি। এরা কথার বাগাড়ম্বর দিয়ে ক্ষমতায় এসে প্রথমেই গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে। এরা আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার শত্রু।

তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারী ২০১৪ এর নির্বাচন ছিল ‘৭৫ এর ব্যর্থ বাকশালকে পুণপ্রতিষ্ঠার যাত্রাপথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ওই নির্বাচন স্বাধীনতার মূল চেতনা, গণতন্ত্র ও নাগরিক স্বাধীনতার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। দেশের আপামর নির্যাতিত জনগণ এখন গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। জনগণের উদ্বেল অভিযাত্রা যেকোন মূহুর্তে রাজপথে প্রবল স্রোত তৈরী করবে।’