রুপির রেকর্ড দরপতন
ডলারের সাপেক্ষে তলানিতে ঠেকেছে পাকিস্তানি রুপির দর। এর আগে কখনো পাকিস্তানের মুদ্রার দর এত নিচে নামেনি। বৃহস্পতিবার আন্তব্যাংক লেনদেনে মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির মান ২০০ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ দেশটিতে ১ ডলার কিনতে এখন ২০০ রুপির বেশি খরচ করতে হচ্ছে। জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চাহিদার তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার কম সরবরাহ, বিশ্বব্যাপী নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে।
এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশটির মুদ্রার মানের পতন ঠেকাতে এবং অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে দেশের আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
একটি দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার অন্যতম সূচক হচ্ছে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার। কিন্তু পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের কাছে বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার তলানিতে ঠেকেছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় তলানিতে ঠেকায় পাকিস্তানের অর্থনীতির ওপর ব্যাপক চাপ পড়তে পারে।
এদিকে ভারতের রুপির দামও কমছে। বৃহস্পতিবার রুপির পতন সর্বকালীন রেকর্ড গড়েছে। বাজার বন্ধ হওয়ার সময় ডলার পিছু রুপির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৭৭ টাকা ৭৩ পয়সা। বুধবার ১ ডলারে রুপির দাম ছিল ৭৭ টাকা ৬১ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি মাসে একাধিকবার বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির জেরে অপরিশোধিত তেলের দাম আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছে। তার প্রভাব সরাসরি এসে পড়ছে উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার ওপর। আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদের হার বাড়ানোয় বিনিয়োগ কমেছে। এর সম্মিলিত প্রভাবেই মুদ্রার অবমূল্যায়ন বলে মনে করা হচ্ছে। আর বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সরকার আমদানি নিরুৎসাহিত করে রপ্তানি বৃদ্ধি করতে টাকার অবমূল্যায়ন করছে।