যুগান্তর প্রতিবেদন
বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন সঠিক পথে রয়েছে বলে মনে করেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলটির নেতাদের তিনি বলেছেন, আন্দোলন চালিয়ে যান, এবার ফলাফল আসবে। ঠিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারলে সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, এ সময় চেয়ারপারসনের সঙ্গে নেতাদের দেশের রাজনীতি নিয়ে তেমন কোনো কথাবার্তা হয়নি। তবে স্থায়ী কমিটির একজন নেতা চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গ তুললে চেয়ারপারসন বলেন, আন্দোলন চালিয়ে যাও, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে ফলাফল আসবে। আরেকজন নেতা বলেন, ম্যাডাম আগামী দিনে আপনাকে দেশের প্রধান হিসাবে দেখতে চাই। জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জনসম্পৃক্ত আন্দোলনে এই সরকারকে বিদায় করতে পারলে সেটাই হবে বড় অর্জন। কে কী হবে, পরেরটা পরে। আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যান।’
খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে ফিরোজার গেটের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে এটা একটা সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ ছিল। আমরা ওনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি, উনি কেমন আছেন জানতে চেয়েছি। উনিও আমাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন বলেন, শারীরিকভাবে ওনার উন্নতি হয়েছে, এটা বলা যায় না। ওনার চিকিৎসা বাইরে অ্যাডভান্স সেন্টারে একান্তভাবে প্রয়োজন।
এর আগে ঈদের দিন দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ অন্য নেতারা শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতেও অংশ নেন।
ফিরোজায় ঈদ উদ্যাপন : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নিকটাত্মীয়দের নিয়ে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ঈদুল আজহা উদ্যাপন করেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার জানান, ঈদের দিন দুপুরে বোন-ভাইসহ নিকটাত্মীয়রা তার বাসায় যান। তারা সঙ্গে করে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) জন্য বাসায় রান্না করা খাবার নিয়ে যান। এছাড়া তার বাসায়ও বিশেষ খাবার রান্না করা হয়। দুপুরে তারা ফিরোজায় একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) পক্ষ থেকে একটি গরু ও একটি ছাগল কুরবানি দেওয়া হয়। পরে কুরবানির মাংস রাজধানীর বিভিন্ন এতিমখানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া খালেদা জিয়া ঈদের দিন ভার্চুয়ালি লন্ডনে থাকা তার বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার পরিবারের সদস্য এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ফোনে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এদিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তাদের ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোসহ ২৮ নেতাকর্মীর নামে চারটি গরু কুরবানি দেওয়া হয়। নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকেই গুম ও খুনের শিকার। ঈদের দিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যবস্থাপনায় গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ কুরবানি দেওয়া হয়। প্রতিটি গরুতে সাতজন অংশীদার ছিলেন।