সিলেটে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে কিশোরী ধর্ষণ মামলা

সিলেটে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে ২২ দিন জোরপূর্বক আটকে রেখে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর মা শুক্রবার রাতে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে- সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১১নং ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুস সালামকে। তার বাড়ি নগরের লালাদিঘীর পাড় এলাকায়। মামলার অপর আসামি আব্দুল মনাফ একই এলাকার ইশাদ মিয়ার পুত্র। আব্দুল মনাফ সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য। ওই কিশোরী অভিযোগ করেন, নির্যাতিতা ওই তরুণী নগরীর শেখঘাটের একটি বোতল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতো। পরিবারের সদস্যরা ওই তরুণীকে সিলেট শহরের বাসায় রেখে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। এই সুযোগে একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম লালদিঘীর পাড়ের আবদুস সালামের সঙ্গে তরুণীকে পরিচয় করিয়ে দেয়। গত ৭ই জানুয়ারি রেখা বেগম কাজের কথা বলে তরুণীটিকে আবদুস সালামের লালদিঘীর পাড়স্থ বাসায় নিয়ে যায়।

পরে বাসার একটি রুমে ২২ দিন আটকে রেখে আবদুস সালাম তাকে ধর্ষণ করে। পরিবারের সদস্যরা সিলেট নগরীস্থ বাসায় ফিরে তরুণীকে না পেয়ে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নেন। কিন্তু কোথাও না পেয়ে থানায় জিডি করতে চাইলে রেখা বেগম বাধা দিয়ে তাদেরকে আবদুস সালামের কাছে নিয়ে যায়। আবদুস সালাম তরুণীটিকে উদ্ধারের ব্যাপারে আশ্বাস দেয়। কয়েকদিন পর পরিবারের সদস্যরা আবারো আবদুস সালামের কাছে গেলে সে জানায় লন্ডন প্রবাসী একটি পরিবারের কাছ থেকে তরুণীটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় লন্ডন প্রবাসী পরিবারের পরিচয় জানতে চাইলে আবদুস সালাম ক্ষেপে যায়। কিন্তু নির্যাতিতা তরুণী ২২ দিনের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর আবদুস সালাম কর্তৃক ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা অভিভাবকদের কাছে খুলে বললে সালাম তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিও দেয়। এদিকে তরুণীর খোঁজ মেলার তিনদিন পর ওই তরুণীকে মামলার আসামি আবদুল মনাফের মাধ্যমে তাকে হবিগঞ্জে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে আটকে রেখে তাকে আবদুস সালাম ও আবদুল মনাফসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন তরুণীটিকে ধর্ষণ করে।
সেখান থেকে গত ২৬শে মার্চ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কৌশলে তরুণীকে উদ্ধার করে আনা হয়। তরুণীর মা জানিয়েছেন, মেয়েকে ফিরে পাওয়ার পর তিনি সম্পূর্ণ ঘটনা জেনে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন বলে জানান।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সুমন চৌধুরী মানবজমিনকে জানিয়েছেন, নির্যাতিত কিশোরী আদালতে জবানবন্দি দিয়ে তার উপর ঘটে যাওয়া ঘটনা বলেছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। একই সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে বলে জানান তিনি।
manabzamin