৯ জুলাই ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি
সিলেটে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি এবং বিরোধী দলগুলোর এখন একটাই দাবি। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এ দাবিতে আগামী ১২ই জুলাই ঢাকা সমাবেশ থেকে নতুন ঘোষণা দেয়া হবে। এই ঘোষণার মাধ্যমে আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হবে। এই ঘোষণার পর সবাইকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
রোববার (৯ই জুলাই) বিকালে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে এই সমাবেশের আয়োজন করে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। এতে বিএনপি ও এই তিন অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ সফল করতে সিলেট বিভাগের চার জেলা থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তরুণদের এই সমাবেশের একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। ৭১ সালে আমরা তরুণ ছিলাম, তখন আমরা যুদ্ধ করেছি দেশকে স্বাধীন করার জন্য। আজকে দেশকে মুক্ত করতে, গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে তরুণদের লড়াই করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
তিনি বলেন, এখন আমাদের ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রয়েছে, এই মামলা থেকে মুক্ত হয়ে শান্তির দেশ গড়ার জন্য আমাদের লড়তে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১২ তারিখ (১২ই জুলাই) ঢাকায় সমাবেশ হবে। এই সমাবেশ থেকে আন্দোলনের নতুন ঘোষণা আসবে। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের আন্দোলনের নতুন যাত্রা শুরু হবে। মানুষ আর মানুষ, যুবক আর যুবকের সমাহার দিয়ে সরকারকে পরাজিত করে জনগণের রাষ্ট্র আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি বলেন, জীবন বাজি রেখে আমরা এই লড়াইয়ে থাকবো। দেশকে রক্ষা করতে হলে দেশের আপামর জনসাধারণকে এই আন্দোলনে শরিক হতে আমরা আহবান জানাচ্ছি। আমাদের কথা পরিষ্কার। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। এজন্য তরুণ সমাজকে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের অধিকার আদায়ে রাজপথে নামতে হবে। আসুন সবাই উঠে দাঁড়াই।
এর আগে বিকেল সোয়া ৪টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে নতুন ভোটার ও তরুণদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ উপলক্ষে রোববার সকাল থেকেই সিলেট শহরে জড়ো হতে শুরু করেন বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সিলেট শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান নিয়ে দুপুরের মধ্যেই আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে জড়ো হন।
এ সময় তারা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। সমাবেশস্থলের চারপাশে অসংখ্য ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন টাঙানো হয়।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএমএ জিলানীর সভাপতিত্বে এবং যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সিলেট বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেন, সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি মোহাম্মদ কাইয়ুম চৌধুরী, বিএনপির নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদীর লুনা, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের জাকির হোসেন সিদ্দিকী, স্বেচ্ছাসেবক দলের ফখরুল ইসলাম রবিন, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, নতুন ভোটার সাবিয়া জামান আরিফা, সাদিয়া কাওসার রুহিসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা।