সরকারি ব্যাংকে কমলেও খেলাপি ঋণ বেড়েছে বেসরকারিতে

রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কমলেও বেড়েছে বেসরকারি ব্যাংকে। বিদেশি ও বিশেষায়িত ব্যাংকেও খেলাপি ঋণ বেড়েছে। যদিও সামগ্রিক খেলাপি ঋণ আগের প্রান্তিকের চেয়ে ৬৪২ কোটি টাকা কমে গত সেপ্টেম্বর শেষে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটা টাকা হয়েছে। মোট ঋণের যা ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। গত জুন শেষে যা ছিল ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। তিন মাসে ঋণ বেড়েছে ২২ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, জুলাই–সেপ্টেম্বর সময়ে জনতা ব্যাংকের প্রভাবে রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৮ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা কমে ৬৫ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকায় নেমেছে। এসব ব্যাংকের মোট ঋণের যা ২১ দশমিক ৭০ শতাংশ। তিন মাস আগে ৭৪ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা বা ২৫ দশমিক শুন্য ১ শতাংশ ছিল খেলাপি। গত প্রান্তিকে জনতা ব্যাংকে দুই শিল্প গ্রুপের ১৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ঋণ পুনঃতপশিলের মাধ্যমে নিয়মিত করা হয়েছে। এতে করে সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ১১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা কমে ১৭ হাজার ১২৮ কোটি টাকায় নেমেছে। মোট ঋণের যা ১৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ। গত জুন শেষে জনতার খেলাপি ঋণ ছিল ২৮ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা বা ৩০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ব্যাংকটিতে গ্রুপ দু’টির ঋণ খেলাপি করা হয় এপ্রিল–জুন প্রান্তিকে।

সেপ্টেম্বরে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৭ হাজার ৮৩ কোটি টাকা বেড়ে ৮১ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকায় উঠেছে। মোট ঋণের যা ৭ দশমিক শুন্য ৪ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ তিন মাস আগের তুলনায়  তিন হাজার ১৯৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা হয়েছে। এসব ব্যাংকের ঋণের যা ৫ দশমিক শুন্য ৭ শতাংশ। আর বিশেষায়িত ব্যাংকের ৪ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ১০ শতাংশ এখন খেলাপি। গত জুনে যা ছিল ৪ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।

চলতি বছর মেয়াদি ঋণের বিপরীতে যা পরিশোধ করার কথা তার  ৫০ শতাংশ দিলে আর খেলাপি হচ্ছে না। এর আগে ২০২০ সালে করোনার কারণে এক টাকাও পরিশোধ না করলেও খেলাপি করা হয়নি। ২০২১ সালে একজন গ্রাহকের যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা, তার  ১৫ শতাংশ পরিশোধ দিলে নিয়মিত দেখানো হয়। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ দেখিয়ে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। এরপরও খেলাপি ঋণ ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।

সূত্র : সমকাল