জাতীয় নারী ফুটবল দলে ১১ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই প্রথম বিদেশের মাটিতে খেলছেন সানজিদা আক্তার। বুধবার ভারতের ক্লাব ইস্ট বেঙ্গলে যাওয়ার পরদিন প্রস্তুতি ম্যাচে গোল করে সবার নজর কেড়েছেন। ভারতের নারী লিগে খেলা কলকাতার ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবেও প্রথম বিদেশি ফুটবলার সানজিদা। বাংলাদেশি বলে সেখানে যাওয়ার পর থেকেই সবার ভালোবাসা পাচ্ছেন। অনুশীলন ভেন্যু থেকে খেলার মাঠ; যেখানেই গিয়েছেন ভক্তদের সেলফি তোলার আবদার ফেলতে পারেননি সানজিদা। তিন দিনেই ইস্ট বেঙ্গলের সবাইকে আপন করে নেওয়া সানজিদা আক্তার শুক্রবার কলকাতা থেকে টেলিফোনে সমকালের কাছে নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশ করেছেন। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়
সমকাল : ইস্ট বেঙ্গলে যাওয়ার পর থেকে আপনাকে নিয়ে কেমন উন্মাদনা?
সানজিদা : অনেক। এখানে আমাকে নিয়ে সবার অনেক আগ্রহ। ইস্ট বেঙ্গলের নারী দলে এই প্রথম বিদেশি ফুটবলার আনা হয়েছে। আমাকে তো অনেকে চেনে। আমার ফেজে এখানকার অনেক ফ্যান দেখলাম। আমাদের দেশের অনেক তারকা ফুটবলার ইস্ট বেঙ্গলে খেলে গিয়েছেন। তারা অনেক ভালো করেছেন। সব মিলিয়ে ইস্ট বেঙ্গলে আমাদের বাংলাদেশের প্লেয়ারদের অন্যরকম মূল্য।
সানজিদা : এখানে যারা খেলে গিয়েছিলেন, তাদের সবার কথাই শুনেছি। সত্যি কথা বলতে কী, যারা এখানে খেলে গিয়েছিলেন, সবার কথাই এখানে সবাই বলে। ক্লাবে গিয়ে মোনেম মুন্না ভাইয়ের ছবি দেখেছি।
সমকাল : জাতীয় দল এবং একই ক্লাবের জার্সিতে সাবিনা খাতুনের সঙ্গে খেলেছেন। ভারতে গিয়ে প্রতিপক্ষ হলেন…
সানজিদা : ৩ ফেব্রুয়ারি সাবিনা আপুর দল কিকস্টার্সের বিপক্ষে আমাদের খেলা আছে। আজকেও তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। সাবিনা আপু হচ্ছেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলের সেরা তারকা। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমার জন্য প্রথম হলেও তাঁর কিন্তু বিদেশের লিগে অতীত অভিজ্ঞতা আছে। এখন যেহেতু এখানে আমরা একে অপরের প্রতিপক্ষ, সেহেতু বন্ধুত্বটা অন্তত মাঠে থাকবে না। অবশ্যই তাঁর দলকে হারানোর চেষ্টা থাকবে আমাদের।
সমকাল : দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রথমবারের মতো বিদেশি লিগে খেলছেন…
সানজিদা : যেহেতু এটা প্রথম, সবকিছু মিলিয়ে অনেক ভালো লাগা কাজ করছে। আমি জাতীয় দলে ১১ বছর ধরে খেলছি, এর আগে কখনোই বিদেশি লিগে খেলিনি। ইস্ট বেঙ্গলও এই প্রথম নারী দলে কোনো বিদেশি ফুটবলার নিয়ে এসেছে। সেই প্রথমটি আমি বলে আরও বেশি খুশি লাগছে। নিজেকে আমি ভাগ্যবান ভাবতেই পারি।
সমকাল : এই ক্লাবে ভারত নারী জাতীয় দলের কোনো ফুটবলার আছেন?
সানজিদা : হ্যাঁ, আছেন; যারা আগে খেলেছিলেন। কিন্তু ইস্ট বেঙ্গল নারী দল নতুন। যে কারণে সময় কম থাকায় দলটা ভালোভাবে গোছাতে পারেনি।
সমকাল : ইস্ট বেঙ্গলের মতো ক্লাবে খেলতে পারাটা অবশ্যই গর্বের…
সানজিদা : আমি এখানে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি। আমি মনে করি, খারাপ খেললে বাংলাদেশের দুর্নাম হবে। আমি যদি ভালো খেলি, তখন এখানকার সবাই বলবে যে বাংলাদেশ থেকে যারা আসে, তারাই ভালো খেলছে।
সমকাল : বাংলাদেশের নারী ফুটবলে সানজিদা খুব জনপ্রিয়– সেটা মাঠ এবং মাঠের বাইরে; দুই জায়গাতেই…
সানজিদা : আমি কেমন খেলি বা কী করি, সেটা জানি না। তবে আমি প্রচুর মানুষের ভালোবাসা পাইছি এখন পর্যন্ত। আমি তাদের ভালোবাসার প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করব। ইস্ট বেঙ্গলের মিলিয়ন মিলিয়ন দেখলাম ফ্যান, ফলোআর। আমার টার্গেট হলো এখানে সেরাটা দেওয়ার।
সমকাল : যেহেতু সানজিদা বেশ জনপ্রিয়। নিশ্চয় সেখানেও অনেক ভক্ত আছে?
সানজিদা : হ্যাঁ। আমি তো জানতাম না যে, এখানে আমার অনেক ভক্ত আছে। গতকালকে (বৃহস্পতিবার) ম্যাচ খেলতে যাওয়ার পর সবাই আমার সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য পাগল হয়ে গেছে। এখানে অনেক মিডিয়া আমার সঙ্গে কথা বলবে বলেছে। তাই কর্মকর্তাদের বলেছি যে একটা ম্যাচ খেলি, তার পর সবার সঙ্গে কথা বলব। আমার যে অনেক ফ্যান, ফলোয়ার আছে। এই জিনিসটা কলকাতার মানুষ জানে।
সমকাল