সংসদ সদস্য রণজিতের সম্পদ বেড়ে ১৩৩ গুণ, স্ত্রীর ২৬৩

যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়
যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়ছবি: সংগৃহীত

যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়ের স্ত্রী নিয়তি রানী রায়ের সম্পদ বলতে ছিল নগদ ৭০ হাজার টাকা এবং ১৫ হাজার টাকার ৫ তোলা সোনা। ১৫ বছরের ব্যবধানে এখন তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২৪ লাখ ২৫ হাজার টাকায়, যা ২০০৮ সালের তুলনায় ২৬৩ গুণ।

একইভাবে সম্পদ বেড়েছে রণজিত কুমারেরও। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার আগে তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। এখন তাঁর মোট সম্পদের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৪৯ লাখ ৮ হাজার টাকায়, যা ২০০৮ সালের তুলনায় ১৩৩ গুণ।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ২০০৮ সাল থেকে তিনবার সংসদ সদস্য হওয়া রণজিত কুমার এবার দলের মনোনয়ন পাননি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যশোর-৪ (অভয়নগর, বাঘারপাড়া ও সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এসব নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দাখিল করা তাঁর হলফনামা বিশ্লেষণ করে সম্পদ বাড়ার চিত্র পাওয়া গেছে। তবে কোনো হলফনামাতেই তাঁর স্ত্রীর আয়ের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বাড়ি, গাড়ি, সঞ্চয় সব হয়েছে নিয়তি রানীর

হলফনামা থেকে দেখা গেছে, অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রণজিতের স্ত্রী নিয়তি রানীর নামে এখন নগদ টাকা আছে ৫১ লাখ ১৫ হাজার। ২০০৮ সালে যা ছিল ৭০ হাজার। স্থায়ী আমানত হিসেবে (ডিপিএস) বিনিয়োগ আছে ১৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। আরও আছে ৫৫ লাখ টাকা দামের প্রাইভেট কার, যা আগে ছিল না। এ ছাড়া আছে ৪৫ হাজার টাকা দামের ১০ তোলা সোনা, ৪০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ১৫ হাজার টাকার আসবাব।

নিয়তি রানীর স্থাবর সম্পদ আছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার টাকার তিনটি বাড়ি ও ৫০ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট, যা ২০০৮ সালে ছিল না।

রণজিতের হাতে নগদ টাকাই কোটির ওপর

বর্তমানে রণজিত কুমারের নিজের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে নগদ ১ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্থায়ী আমানত হিসেবে বিনিয়োগ (ডিপিএস) ১২ লাখ ৫১ হাজার টাকা, ২৩ লাখ টাকার জিপ গাড়ি, ১ লাখ টাকার ৬০ তোলা সোনা, ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ১ লাখ ২০ হাজার টাকার আসবাব। ২০০৮ সালে ছিল নগদ ১ লাখ টাকা, ১ লাখ টাকার সোনা এবং ৬০ হাজার টাকার আসবাব ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী।

২০০৮ সালে রণজিত রায়ের স্থাবর সম্পদ ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার। এর মধ্যে বাঘারপাড়ায় চার বিঘা পৈতৃক জমি এবং ৫০ হাজার টাকা দামের খাজুরা বাজারে আধা পাকা টিনের বাড়ি। এবারের হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন, তাঁর স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৪ কোটি ৫০ হাজার টাকার। এর মধ্যে ১ লাখ টাকা দামের ১২ বিঘা কৃষিজমি, ঢাকার পূর্বাচলে ৩০ লাখ টাকা দামের রাজউকের প্লট, ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের দালান এবং ১০ লাখ টাকার অকৃষি জমি।

রণজিতের আয় বেড়ে ২৫ গুণ

২০০৮ সালে রণজিত রায়ের মোট বার্ষিক আয় ছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষি থেকে বছরে ১৭ হাজার ও ব্যবসা থেকে দেড় লাখ টাকা আসত। এখন তাঁর সেই আয় দাঁড়িয়েছে ৪২ লাখ ৮৫ হাজার টাকায়। এবার তিনি তাঁর পেশার ঘরে কৃষি ও ব্যবসার পাশাপাশি ‘ভাড়া আদায়’ যুক্ত করেছেন। তিনি বাড়ি/দোকান ভাড়া দিয়ে এখন বছরে আয় করছেন ৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। সংসদ সদস্যের পারিতোষিক ও সম্মানী ভাতা হিসেবে বছরে আয় করেন ২২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ব্যবসা থেকে সাড়ে ১৪ লাখ ও কৃষি থেকে ৭২ হাজার টাকা আয় করেন।