সংসদ নির্বাচন ২০১৮, কারচুপি আর বিবিসি বাংলা

সংসদ নির্বাচন ২০১৮, কারচুপি আর বিবিসি বাংলা

  • ১৯ জানুয়ারি ২০১৯
বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন শেষে ঢাকায় পোস্টার সংগ্রহ করেছেন এক ব্যক্তি, ৩১-১২-২০১৮।ছবির কপিরাইটMUNIR UZ ZAMAN
Image captionদিনের শেষে: নির্বাচন শেষে পোস্টার সংগ্রহ করেছেন এক ব্যক্তি।

বাংলাদেশে নির্বাচন এবং তার পরবর্তী খবরাখবরের জন্য কয়েক সপ্তাহ এডিটার’স মেইলবক্স বন্ধ ছিল। এর মধ্যে অনেক চিঠি এসেছে যার উত্তর দেয়া সম্ভব হয়নি। সেজন্য আমি দু:খিত। চেষ্টা করবো আগামী সপ্তাহগুলোতে পুরনো কিছু চিঠির উত্তর দিতে।

শুরু করছি নির্বাচন নিয়ে একটি চিঠি দিয়ে, লিখেছেন রাজশাহীর রানীবাজার থেকে হাসান মীর:

বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের একটা বড় অংশ দলবাজি ও মালিকপক্ষের স্বার্থ রক্ষায় নিবেদিত বলে তারা নিরপেক্ষ মত প্রকাশে অনেক ক্ষেত্রেই অক্ষম। বিবিসি বাংলার কর্মীদের সেই সীমাবদ্ধতা না থাকায় তাঁরা সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনের সময় সংবাদ, সংবাদ পর্যালোচনা, স্পট রিপোর্টিং ও সাক্ষাৎকার প্রচারে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি নিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে পেরেছেন । নির্বাচন উপলক্ষে তিনটি বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারের সিদ্ধান্ত আমার ভালো লেগেছে।

আপনাকে ধন্যবাদ মি: মীর। সত্যি কথা বলতে, এবারের নির্বাচন খুব সহজ ব্যাপার ছিলনা। বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে এবারের নির্বাচনের সংবাদ পরিবেশন করতে হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা নির্বাচনের সঠিক চিত্র আপনাদের জন্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। (চট্টগ্রামের একটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরুর আগেই ব্যালট ভর্তি বাক্সর দৃশ্য নিয়ে বিবিসি বাংলার ভিডিও)

চট্টগ্রামে ভোটের আগে ব্যালট বাক্স ভরা পেলেন বিবিসি’র সাংবাদিক

ছোট ধন্যবাদ দিয়েছেন সাভারের ভাকুর্তা থেকে মোসাম্মাৎ সাবিনা ইয়াসমিন:

ব্যস্ত জীবনে আমার একমাত্র ভরসা হলো বিবিসি বাংলার সাড়ে সাতটার খবর। বাংলাদেশ নির্বাচনে সারাদেশ ঘুরে এতো সুন্দর সুন্দর খবর প্রচার করার জন্য বিবিসি বাংলাকে অজস্র ধন্যবাদ।

আপনাকেও ধন্যবাদ মিস ইয়াসমিন, আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য।

এবারে লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি থেকে মোহাম্মদ উল্লাহ:

বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের খবর নিরপেক্ষভাবে পরিবেশন করার জন্য বিবিসি বাংলাকে ধন্যবাদ জানাই। আজকাল, বিটিভি আর ব্যক্তিমালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মধ্যে পার্থক্য করা বেশ কঠিন হয়ে গেছে। আমি বলছি না যে, বেসরকারি চ্যানেলগুলো সঠিক খবর দেয় না, কিন্তু তারা পূর্ণ চিত্র তুলে ধরে না। দৈনিক পত্রিকাগুলোর ক্ষেত্রেও সমস্যাটা একই, তবে এখানে ডেইলি স্টার বা প্রথম আলোর মত কিছু ব্যতিক্রম আছে।

আমার খুব আশ্চর্য লাগে, যে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়ার গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে থেকেও, যখন নিজ দেশের প্রসঙ্গ আসে তখন অনেক বাংলাদেশী রাজনৈতিকভাবে এক-চোখা হয়ে যায়। আমি আওয়ামী লীগ বা বিএনপি সমর্থন করতে পারি কিন্তু অন্তত যেটা ঠিক সেটাকে ঠিক বলা উচিত।

আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত মি: উল্লাহ, আপনি যে দলই সমর্থন করেন না কেন, যেটা সত্য সেটাকে সত্য হিসেবে মেনে নেয়া উচিত। দল কানা হয়ে দিনকে রাত বানানো ঠিক না। তবে আমার মতে বিটিভির সাথে বেসরকারি চ্যানেলগুলোর তুলনা হয়তো সঠিক না, কারণ তাদের অনুষ্ঠানমালা এবং সম্পাদকীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে অনেক পার্থক্য আছে। আপনাকে ধন্যবাদ। (ঢাকার একটি কেন্দ্রে দুপুর বেলায় গেট আটকে রাখা নিয়ে বিবিসি বাংলা ভিডিও রিপোর্ট)

দরজা বন্ধ, ভেতরে ভোট চলছে!

নির্বাচন নিয়ে আরো মন্তব্য করেছেন ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাসুম বিল্লাহ:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে এতোটা একচেটিয়া নির্বাচন হবে আমরা ভাবতে পারিনি। অন্তত বিএনপিকে কিছুটা ছাড় দেয়া উচিত ছিল। নির্বাচনের প্রতিটা মূহূর্ত মনে হয়েছে সরকার নিজেই যেন নিজের দখলদারিত্বের মাধ্যমে নিজেকে নির্বাচিত করে নিয়েছে। ভোট কেন্দ্রে কী পরিমাণ ভোট ডাকাতি হয়েছে তা এখন আর নতুন কোন সংবাদ নয়। বিবিসিও তার প্রমাণ চট্টগ্রামে গিয়ে নিজ চোখে দেখে এসেছে।

তবে চীন এবং ভারত যখন এই ভোট ডাকাতিকে সমর্থন করে আওয়ামী লীগ কে সাধুবাদ জানিয়েছে, তাহলে বলতে হয় তাদের দেশেও হয়তো তারা ঠিক একই ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেই তারা টিকে আছে?

আমার মনে হয় ভারত, চীন এবং বাংলাদেশকে একই ভাবে মাপলে ঠিক হবে না মি: বিল্লাহ। তিনটি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ভিন্ন, উন্নয়নের মাত্রা ভিন্ন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা ভিন্ন। চীনে ১৯৪৯ সাল থেকে একদলীয় শাসন চলছে। ভারতে ১৯৪৭ সালের পর থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের চর্চা বিভিন্ন সময়ে বাঁধা পেয়েছে এবং তার মধ্য থেকেই দারিদ্র বিমোচন করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হচ্ছে। আপনাকে ধন্যবাদ।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং (বামে) এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।ছবির কপিরাইটMIKE HUTCHINGS
Image captionদুই মেরুর মিত্র: ভারত আর চীনের রাজনৈতিক মূল্যবোধ বিপরীতমুখী, কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শি জিন পিং (বামে) এবং নরেন্দ্র মোদীর চিন্তা একই।

এবারে একটি ভিন্ন মত পোষণ করে লিখেছেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন থেকে সাজ্জাদ খান। ইংরেজিতে লেখা চিঠিটি মূলত একটি প্রতিবেদন। কিন্তু এখানে যেহেতু প্রতিবেদন প্রকাশের কোন ব্যবস্থা নেই, তাই সংক্ষেপে চিঠি হিসেবে নেয়া হচ্ছে:

অনেকেই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির প্রাপ্ত ভোটের মধ্যে বিশাল ব্যবধান দেখে হতবাক হয়ে গেছেন। তারা কারচুপিকেই একমাত্র কারণ হিসেবে দেখছেন। কিন্তু বাস্তবে, কারচুপির অভিযোগকে কোনভাবেই গ্রহণ করা যায়না। যারা নির্বাচন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন, তারা জোর দিয়ে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আসলে, ফলাফল প্রকাশের পর অনুমান-নির্ভর কারচুপির অভিযোগ করা হচ্ছে। ভোট কেন্দ্রের উৎসবমুখর এবং আনন্দময় পরিবেশ আমি নিজের চোখে দেখেছি। আমি ফলাফল দেখে মোটেই আশ্চর্য হই নাই, হয়তো এত বিশাল কিছু প্রত্যাশা করছিলাম না।

তবে অনেকেই কিছু সহজ ফ্যাক্টর দেখতে পারছেন না, যেমন শেখ হাসিনার নেতৃত্ব। তার কারণেই আওয়ামী লীগের এই বিশাল বিজয়। তারপর, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। এবারে তরুণ ভোটার ছিল চার কোটি, যাদের ৯০ শতাংশ আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট দিয়েছে, কারণ তারা জানে কে তাদের কর্মসংস্থান দিতে পারবে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ০৭-০১-২০১৯।ছবির কপিরাইটMUNIR UZ ZAMAN
Image captionশেখ হাসিনা: আওয়ামী লীগের জয়ের প্রধান কারণ?

আপনাকে ধন্যবাদ মি: খান। আপনি আপনার দীর্ঘ প্রতিবেদনে আরো কয়েকটি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেছেন। আপনার বিশ্লেষণের সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না, বিশেষ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিষয়টি যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা অনস্বীকার্য। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে যা দেখেছি এবং বিবিসি বাংলার সাংবাদিকরা যা বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে দেখেছে, তা থেকে বলতে পারি এই নির্বাচন অত্যন্ত শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল এবং কারচুপির আলামত অনেক জায়গাতেই দেখা গেছে।

আমাদের সকালের রেডিও অনুষ্ঠানে প্রচারিত একটি ভুলের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পিরোজপুরের কাউখালি থেকে ইসমাইল শওকত:

শুক্রবার সকলের পত্রিকা পর্যালোচনায় বলা হলো, ” গতকাল ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা ছিল যা ক্যাপসুলের মান নিয়ে সন্দেহ হওয়ার কারণে বন্ধ করা হয়েছে “। এর দ্বারা বুঝা যায় ১৭ তারিখ বৃহস্পতিবার খাওয়ানোর কথা ছিল। কিন্তু সঠিক সংবাদ হবে,”আগামী কাল ১৯ তারিখ ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা ছিল যা ক্যাপসুলের মান নিয়ে সন্দেহ হওয়ার কারণে বন্ধ করা হয়েছে।”

আপনি ঠিক বলেছেন মি: শওকত। খবরটি কোন্‌ পত্রিকা থেকে নেয়া হয়েছে সেটা উপস্থাপক নির্দিষ্ট করে বলেননি, তবে আমি প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার পত্রিকায় দেখলাম ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা ছিল শনিবার, বৃহস্পতিবার না। ভুলের জন্য আমরা দু:খিত।

বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনিছবির কপিরাইটBUDDHIKA WEERASINGHE
Image captionদীপু মনি: শিক্ষা মন্ত্রী হিসেবে সফল হবেন কি?

সংবাদপত্র পর্যালোচনার বিষয়ে আরেকটি চিঠি, লিখেছেন গোপালগঞ্জের ঘোড়াদাইর থেকে ফয়সাল আহমেদ সিপন:

প্রত্যুষা অনুষ্ঠানে ‘সংবাদপত্র পর্যালোচনা’ আমার ভীষণ ভাল লাগে। মাঝে মধ্যে বড় শহরগুলির স্থানীয় দুই-একটি পাঠক প্রিয় পত্রিকায় প্রকাশিত খবর নিয়ে আলোচনা করার অনুরোধ করছি।

ভাল প্রস্তাব দিয়েছেন মি: আহমেদ। জাতীয় পত্রিকাগুলো আমাদের ঢাকা অফিসে প্রতিদিন সকালে জোগাড় করা সম্ভব হয়, তবে ঢাকার বাইরে যেমন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ইত্যাদি শহরে প্রকাশিত পত্রিকা অনলাইন সংস্করণ থাকলে সেগুলো থেকে খবর নেয়া সম্ভব হবে। আপনাকে ধন্যবাদ।

বাংলাদেশের নতুন মন্ত্রীসভার একজন সদস্যকে নিয়ে লিখেছেন খুলনার দাকোপ থেকে মুকুল সরদার:

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন দীপু মনি। বিবিসি বাংলাকে এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, তিনি ভর্তি বাণিজ্য বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। ফেসবুকের কল্যাণে আমরা এটিও দেখেছি, শিক্ষা মন্ত্রী হিসেবে প্রথম কর্ম দিবসে দীপু মনি নিজ হাতে তার অফিস পরিষ্কার করেছেন। আমারা প্রত্যাশা করব, শুধু নিজের অফিস নয়, দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনিয়ম আর দুর্নীতির যে জঞ্জাল জমে উঠেছে সেটিও মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী পরিষ্কার করে মান সম্মত শিক্ষা অর্জনের পথকে সুগম করবেন।

আপনাকে ধন্যবাদ মি: সরদার। শিক্ষা খাত সম্ভবত যে কোন দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত, কাজেই সেখানে থেকে দুর্নীতি, অনিয়ম দূর করা অপরিহার্য। তবে আমি যতদূর জেনেছি, অফিস ঝাড়ু দেবার ছবিটি পুরনো একটি ছবি। সে যাই হোক, আসল কথা হচ্ছে মন্ত্রীর সাফল্য বা ব্যর্থতা বিচার করা হবে দেশে শিক্ষার মানের ওপর, তাঁর অফিসের পরিচ্ছন্নতার ভিত্তিতে না।

পরের চিঠি লিখেছেন ঢাকা থেকে ফারুক আহমেদ আবির:

বিবিসি বাংলা অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে যা আমার বা আমাদের খুবই ভালো লাগে। বাংলাদেশে একটি তীব্র ও জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হচ্ছে বেকারত্ব। আর, এ বেকারত্বের সুযোগে বাংলাদেশে এক শ্রেণীর মানুষ স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে রূপান্তর হয়েছে বা হচ্ছে।

ঢাকার অনেক অভিজাত স্কুল কলেজ আছে যারা ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন নেয়। অথচ, শিক্ষকদের বেতন দেয় দশ হাজার টাকা মাত্র! এটা যেন ত্রিশ দিন পরিশ্রম করিয়ে তিন দিনের পারিশ্রমিক প্রদানের একটা উৎকৃষ্ট নমুনা। বিবিসি বাংলা যদি একটা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করে তো বাধিত থাকবো।

নির্বাচন পরবর্তী খবরের অংশ হিসেবে আমরা কর্মসংস্থান নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন শীঘ্রই পরিবেশন করতে যাচ্ছি, প্রথমে আমাদের টেলিভিশন অনুষ্ঠান বিবিসি প্রবাহতে, যেটা অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। ঢাকার অভিজাত স্কুল-কলেজের ওপর কোন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার পরিকল্পনা এই মুহূর্তে না থাকলেও ভবিষ্যতে সেরকম একটি পরিকল্পনা হাতে নেয়াও যেতে পারে। আপনাকে ধন্যবাদ।

পরের চিঠি লিখেছেন বগুড়া থেকে হাসিবুর রহমান বিলু:

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অনেক ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। তার অনেক কিছু আপনারা প্রচার করেন, আবার অনেক কিছুই করেন না। আমার মনে হয় যেসব ঘটনা বাদ পড়ছে, তার মধ্যে অনেক ঘটনাই বিবিসির কোন না কোন জায়গায় স্থান পেতে পারতো।

আপনাকে ধন্যবাদ মি: রহমান। আপনি বলেছেন এক সময় আপনি বিবিসির জন্য কাজ করেছেন এবং উত্তরাঞ্চলের অনেক খবরের কথা আপনি বিবিসির ঢাকা অফিসে সরবরাহ করতেন। এটা ঠিক যে, অনেক দিন হয়ে গেল বিভাগীয় শহরগুলো ছাড়া অন্যান্য শহরের সহযোগী সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে আশা করছি ভবিষ্যতে স্থানীয় সংবাদের দিকে আমরা আবারো দৃষ্টি দেব।

নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেছেন ঢাকার ধানমন্ডি থেকে শামীম উদ্দিন শ্যামল:

বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে মানুষের শত কৌতূহল, আশা, নিরাশা, হতাশা, সংশয় সর্বোপরি হৈচৈ-এর অবসান হয়ে গেছে। যদিও নির্বাচন পরবর্তী আলোচনা, বিশ্লেষণ এবং এসব মানুষের প্রত্যাশা নিয়ে বিবিসি নিউজ বাংলা সংবাদ/ফিচার পরিবেশন করেই যাচ্ছে। এটা আমাদের চাওয়া এবং দায়িত্বশীল গণমাধ্যম হিসেবে বিবিসির কাছে এটা পাওয়াও বটে।

নির্বাচনের সব কিছু’র অবসান হলেও এখনো মানুষের মনে কিছু প্রশ্ন থেকেই যাই। সরকার গঠন, শরিক দলগুলোকে মন্ত্রীসভায় যুক্ত না করা, নির্বাচন বিতর্কে সরকারের ভাবমূর্তি, সরকার বিরোধী জোট ঐক্যফ্রন্টের পরবর্তী কার্যক্রম এগুলোর কি হবে? বিবিসির কাছে সবাই একটা প্রশ্ন রাখবে “সবকিছু কি সুষ্ঠু-স্বাভাবিকভাবে চলবে?” নাকি সেই সংশয়, নিরাশা, হতাশা বাড়তেই থাকবে? বিবিসি কি উত্তর দিবে আমাদের?

এই প্রশ্নের উত্তর বিবিসির পক্ষে কি দেয়া সম্ভব? আমার মনে হয় এখানে হ্যাঁ বা না বলা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। শুধু এটুকু বলা যায়, এই নির্বাচন নিয়ে অনেক সন্দেহের অবকাশ রয়েছে, যেটা আমাদের সংবাদদাতার সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেছেন। বিরোধী পক্ষকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার এখন কতটুকু আন্তরিক হবে এবং বিশেষ করে ভবিষ্যতে নির্বাচনকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার জন্য কী পদক্ষেপ নেবে, সেগুলোই বলে দেবে আগামী দিনগুলো ঘিরে আশা-ভরসা থাকবে নাকি হতাশা-নিরাশায় আচ্ছন্ন থাকবে। আপনাকে ধন্যবাদ।

এবারে কিছু চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করা যাক ..

মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার, মাসকাট, ওমান।

এস এম রকিবুল হাসান খান, বকশীগঞ্জ, জামালপুর।

মোহাম্মদ ইমদাদুল হক মিলন, পঞ্চগড়।

মোহাম্মদ রহিদুল ইসলাম,বীরগঞ্জ, দিনাজপুর।

মুহাম্মাদ নূরুল্লাহ, মনোহরদী, নরসিংদী।

সাইয়ুম সরকার সাম, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।

মোহাম্মদ আমদাদুল হক, নওগাঁ।

মোহাম্মদ তাজনুর ইসলাম, ফ্রেন্ডস ডি-এক্সিং ক্লাব, ঢাকা।

মোহাম্মদ ফিরোজ আহমেদ, মান্দা, নওগাঁ।

মোহাম্মদ শিমুল বিল্লাল বাপ্পী, কপিলমুনি খুলনা।

গাজী মোমিন উদ্দীন, ডেস্টিনি ওয়ার্ল্ড রেডিও ক্লাব, সাতক্ষীরা।

মোহাম্মদ মহিবুর রহমান, নড়াইল সদর।

বিবিসি বাংলার খবর নিয়ে আপনাদের মতামত, প্রতিক্রিয়া, অভিযোগ কিংবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কাছে লিখতে পারেন:

ইমেইল ঠিকানা: [email protected]

ফেসবুক পেজ: www.facebook.com/BBCBengaliService/