শুল্ক কমানোর সংবাদ দেশের জন্য ভালো খবর: ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার

(৩৬ মিনিট আগে) ১ আগস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ৮:০০ অপরাহ্ন

mzamin

facebook sharing button
whatsapp sharing button

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ওপর সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের সংবাদকে দেশের জন্য ভালো খবর বলে অভিহিতি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে আমির কমপ্লেক্সের সামনে মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে একটা ভালো খবর আছে, কয়েকদিন আগে আপনারা দেখেছেন যে- আমেরিকা আমাদের পণ্যের ওপর ট্যারিফ আরোপ করেছে। ট্যারিফ কী জানেন? আমরা যেসব পণ্য রপ্তানি করবো তার ওপরে ৩৫ ভাগ ট্যাক্স নিয়ে নেবে। অর্থাৎ আমাদের যে জিনিসটার দাম ৫০ টাকা, ওটার সঙ্গে আরো ৩৫ টাকার যোগ হবে, তার মানে ১০০ টাকার জিনিস ১৩৫ টাকা দাম হবে। ফলে আমাদের জিনিসটা আর বিক্রি হবে না। ওটাকে (যুক্তরাষ্ট্র ট্যারিফ) আমাদের পররাষ্ট্র দপ্তর এবং উপদেষ্টারা আলোচনা করে কমিয়ে ২০% পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। সেজন্য আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা একটা বড় দায়িত্ব পালন করেছে।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেকে অনেক কথা বলেন, অনেক ভুল আছে, ত্রুটি আছে, অভিজ্ঞতা বেশি নাই। আমি আশা করেছিলাম যে, এক বছরের মধ্যে আমাদের যারা শহীদ হয়েছে তাদের প্রকৃত তালিকা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে। দুর্ভাগ্য তারা পুরোটা করতে পারেনি। কিন্তু তারা চেষ্টা করছে। এই যে সংস্কারের বৈঠক, সে বৈঠক বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। আমরা আশা করছি, দুই একদিনের মধ্যেই পুর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসবে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সব চেয়ে বড় ক্রাইসিস হচ্ছে, যে ঘোষণা আমাদের প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন- আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে, তাই না। এই নির্বাচনটা আমরা চাই, দেশের মানুষ চায়, দেশের মানুষ একটা নির্বাচিত সরকারের অধীনে দেশ পরিচালনা করতে চায়। আমার তো যাওয়ারই জায়গা নাই। এখন আমার কোন সমস্যা হলো আমি কার কাছে যাবো? কোন এমপি নাই তো? আছে? তাহলে আমি যাব কার কাছে। আমার সমস্যাটা পার্লামেন্টে কে তুলে ধরবে? লোক নাই। কে পার্লামেন্টে আমার দাবি নিয়ে কথা বলবে? লোক নাই। এজন্যই আমাদের দ্রুত নির্বাচন দরকার, খুব দ্রুত পার্লামেন্ট দরকার। যে পার্লামেন্টে আমরা আমাদের কথাগুলো বলতে পারব।

লুটেরাদের সঙ্গে কোনো আপোষ নয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিরাট একটা ভয়ঙ্কর ফ্যাসীবাদের হাত থেকে আপাতত মুক্তি পেয়েছি। এই মুক্তি তখনই চূড়ান্ত হবে যখন তাদেরকে আমরা রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারব। যারা লুটপাট করে, যারা ব্যাংক লুট করে, যারা চাঁদাবাজি করে, যারা মানুষের সম্পত্তি দখল করে নিয়ে যায় তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো রকমের আপোষ থাকবে না। তাদেরকে আমরা কখনোই স্বীকার করবো না এবং তাদেরকে আমরা কোন মতেই সামনে আসতে দেবো না।
অপেক্ষা করছি কবে তারেক রহমান দেশে আসবেন জানিয়ে ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপরে যে আস্থা রেখেছিল জনগণ, একইভাবে আজকে তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপর আস্থা রাখছে। অপেক্ষা করছি, কবে তারেক রহমান দেশে আসবেন। কবে নেতৃত্ব দেবেন? আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি যে, তারেক রহমান অতি দ্রুত দেশে আসবেন, আমাদেরকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে নেতৃত্ব দেবেন- সেটাই আমাদের কামনা।

তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান প্রতিদিন কথা বলছেন। প্রতিদিন তিনি বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করছেন, তিনি বলছেন যে- আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি করবো। যে বাংলাদেশে সব মানুষের সমান অধিকার থাকবে, যে বাংলাদেশে মানুষ ভোট দিতে পারবে, যে বাংলাদেশে সাধারণ গরীব মানুষ, সে গরীব থাকবে না, আস্তে আস্তে সে উন্নতির দিকে যাবে এবং বারবার করে বলেছেন যে, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে। আগামীতে তারেক রহমান নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রান্তিক মানুষের জন্য ‘ফার্মার্স কার্ড’, ‘স্বাস্থ্য কার্ড’, ‘ফ্যামিলি কার্ড’ ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নিয়েছেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএমএ আবদুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় সমাবেশে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি পালন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম নিরব, কৃষকদলের হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজিব আহসান, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, জাসাসের হেলাল খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীরসহ শহীদদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here