শুধু এক ব্যক্তির শরীরে নহে – পুরো বিচার ব্যবস্থায় ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে
========================================
কোনও ব্যক্তির মেডিকেল হিস্টোরি জনসমক্ষে প্রকাশ করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ । এই ধরনের কোনও কাজ একটি সভ্য সমাজে কল্পনাই করা যায় না । এটা জেনেও প্রধান বিচারপতির মত ব্যক্তির মেডিকেল হিস্টোরি জনসমক্ষে প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে । এই দেশে জান ,মাল এবং ইজ্জত কারোরই আর নিরাপদ রইল না ।এক “কুকীর্তি” ঢাকতে আরো জঘন্য একটি কাজ করা হলো ।
মূলত এর মাধ্যমে কোনও কিছুই ঢাকা থাকে নি । বরং ঘটনা আরো করুণভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়েছে । দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম আই কিউ সম্পন্ন মানুষটিও টের পাচ্ছে যে আসলে কী ঘটনা ঘটে চলছে ।
আসলে এই দেশটি শাসন করছে গুটিকয় মগজ ও বিবেকহীন দস্যু রাজা ও দস্যু রাণীগণ । এই দেশটি এখন ফুলন দেবীদের হাতে পড়ে গেছে ।
ছাত্রলীগের একজন প্রাক্তন সভাপতি তাদের প্রিয় এই দলটি সম্পর্কে বলেছেন , আওয়ামী লীগ একটি অভিশপ্ত দল । কারো প্রতি এরা বিরূপ হলো কতটুকু প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠতে পারে – তা আরেকবার প্রমাণ করে ছাড়লো ।
বিচারপতি সিনহা নিজেও এক সময় এই প্রক্রিয়ার অংশ ছিলেন , আজকের এই পরিস্থিতি তৈরিতে তাঁর নিজেরও একটা ভূমিকা রয়েছে । অনেকটা সময় ধরে তিনি নিজেও সেই পথে হেঁটেছেন । ” আমি খাড়ায়া পড়মু আফনে বসায়া দিবেন” – এই বোঝাপড়ায় অন্যদের সঙ্গে তিনিও পথ চলেছেন । শেষ পর্যন্ত তাঁরও আর শেষ রক্ষা হলো না । বিবেকের দংশনে তিনি নিজে একটু মোচড় দেওয়াতে ভীমরুলের চাকের মুখে পড়েছেন । তাঁকে এই ভীমরুলের হাত থেকে বাঁচানোর দায়িত্ব ছিল সুশীল সমাজ সহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের । বিশেষ করে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা আইনজীবী সংগঠনগুলোর এমুহূর্তে এগিয়ে আসা দরকার ছিল । সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নেতাদের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় নি । শুধু প্রধান বিচারপতি নহে – দেশের পুরো বিচার ব্যবস্থাটিও আজ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে । শুধু প্রধান বিচারপতি নহে – পুরো বিচার ব্যবস্থার শরীরে ক্যান্সার ঢুকে পড়েছে ।
একটা জাতির হৃদপিন্ড হলো এই সুপ্রীম কোর্ট । কাজেই দেশের বিচার ব্যবস্থাকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে সারা দেশের আইনজীবীদের সংগঠন গুলোকে এখনই সোচ্চার হওয়া দরকার । দুয়েকটি বিবৃতিই যথেষ্ঠ নয় । প্রয়োজনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার । আর তার সময় বোধহয় এখনই ।
এখানে কোনও দলের স্বার্থ নয় – সারা জাতির অস্তিত্ব এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ।
জনমনে বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সমালোচনা স্বাভাবিক। পরিহাস ছলে সাহিত্যিক বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এক কঠোর মন্তব্য করেছিলেনঃ আদালত বারাঙ্গনার মন্দির তুল্য। অর্থাৎ ন্যায় বিচার টাকাকড়ি লেনদেন নির্ভর।
এর সরল মানে হল, টাকাপয়সা খরচ না করলে আদালত থেকে বিচার আশা করা উচিত নয়। টাকাকড়ি হল দেহপরসারিণীদের মূল লক্ষ্য।
মনে রাখা উচিত, উনবিংশ শতাব্দীতে বঙ্কিম চন্দ্র বঙ্গীয় সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। তিনি সুসাহিত্যিক মীর মোশারফ হোসেনের সমসাময়িক ছিল। এত বড় কঠিন কথা বলেও তিনি চাকুরিতে অক্ষত ছিল। শেষ দিন পর্যন্ত সসম্মানে চাকুরি করে গেছেন। উপনিবেশ যুগের শাসকগণ সমালোচনার মুখেও সহনশীলিতা হারান নি।
উন্নয়ণশীল দেশে সাধারণ, নিম্নবিত্ত মানুষের ন্যায় বিচার “নীরবে নিভৃতে কাঁদে।”
Salute you, Dr Atul krishna for your bold assertion on the subject. rgds.