শাওন হত্যায় বিএনপির ৫ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা

  • নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা
  •  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:০৯
নিহত যুবদল কর্মী রাজ আহমেদ শাওন – ছবি : নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সাথে সংঘর্ষে যুবদল কর্মী রাজ আহমেদ শাওন নিহতের ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পাঁচ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। তবে আসামির তালিকায় কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে শাওনের বড় ভাই মিলন প্রধান নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় এ মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শাওন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ইট ও আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে মারা যান।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১টার দিকে কড়া পুলিশি পাহারায় নবীনগর কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপস্থিতিতে নিহত শাওনের বড় ভাই মিলন প্রধান ও মামা মোতাহার হোসেনের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

পরে পুলিশ ও জেলা ডিবি পুলিশের পাহারায় শাওনের লাশ বাড়িতে নেয়া হয়। লাশ হস্তান্তরের পৌনে এক ঘণ্টার মধ্যে তড়িঘড়ি করে শাওনের লাশ দাফন করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, শাওন নবীনগর এলাকার একটি ওয়ার্কশপে মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার সকালে ওয়ার্কসশপের মালামাল কেনার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে শহরের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। বেলা ১টার দিকে শাওনের ভাই মিলন মোবাইলফোনে খবর পান শাওনের লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে। পরে মিলন হাসপাতাল গিয়ে তার লাশ শনাক্ত করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের পাঁচ হাজারের বেশি নেতাকর্মী ইটপাটকেল, লোহার রড, হকিস্টিকসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় মিছিল করে এবং পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। শাওন দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় পাকা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছোড়ে, ককটেল বিস্ফোরণ করে ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করতে থাকলে ওই ইটপাটকেল ও অবৈধ অস্ত্রের গুলিতে শাওন মাথায় ও বুকে গুরুতর জখম হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। পরে রাস্তায় থাকা লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকতাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শুক্রবার সকালে মিলনের কাছে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, তার ভাইকে যারা হত্যা করেছেন, তিনি তাদের বিচার চান।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা জানান, বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলার সময় শাওন নিহত হয়েছেন অভিযাগ করে তার বড় ভাই হত্যা মামলা করেছেন। এছাড়াও পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশ বক্স ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে আরো একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।