রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

logo

সৌরভ কুমার দাস

২৩ জুলাই ২০২৫, বুধবার

mzamin

facebook sharing button

১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই খাদের কিনারায় পাকিস্তান। ৪৭ রানে পড়লো ৭ উইকেট। এরপর একা হাতে শেষ পর্যন্ত লড়লেন ফাহিম আশরাফ। তাকে যথেষ্ট সঙ্গ দিলেন অভিষিক্ত ড্যানিয়েল। শেষ দুই ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২৮ রান। ১৯তম ওভারের প্রথম ৫ বল থেকে ১৫ রান, তবে শেষ বলে ফাহিম আশরাফকে আউট করেন রিশাদ হোসেন। শেষ ওভারে সমীকরণ ছিল ১৩ রানের, প্রথম বলেই ৪ হজম করেন মোস্তাফিজুর রহমান। তবে পরের বলেই ড্যানিয়েলকে আউট করে ৮ রানের জয় এনে দেন এই বাঁহাতি পেসার। আর এতেই এক ম্যাচ হাতে রেখেই প্রথম বারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদ, পাওয়ার প্লে’র মধ্যেই নেই ৪ উইকেট। এরপর প্রথমে শেখ মেহেদীকে নিয়ে ও একাই লড়লেন জাকের আলী। শেষ পর্যন্ত জাকের ফিফটিতেই ১৩৩ রানের মাঝারি সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। তবে সেটাই পাকিস্তানি ব্যাটারদের জন্য আকাশ সমান বানিয়ে ফেলেন টাইগার বোলাররা। শেষদিকে ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ আব্বাস লড়াই করলেও সেটা শুধু হারের ব্যবধান কমিয়েছে।

১৩৩ রানের পুঁজি ডিফেন্ড করতে নামা বাংলাদেশকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন বোলাররা। প্রথম ওভারেই রান আউটে কাটা পড়েন পাকিস্তানি ওপেনার সিয়াম আইয়ুব। পরের ২২ বলের মধ্যে আরও ৪ উইকেট হারায় পাকিস্তান। দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ হারিসকে এলবি করেন শরিফুল ইসলাম। এক ওভার পর বল হাতে নিয়ে আরেক ওপেনার ফখর জামানকে লিটনের ক্যাচে পরিণত করেন শরিফুল ইসলাম। পরের ওভারেই জোড়া ধাক্কায় পাকিস্তানকে খাদের আরও কিনারায় ঠেলে দেন তানজীম হাসান সাকিব।  হাসান ও মোহাম্মদ, দুই নেওয়াজকেই একইভাবে উইকেটকিপার লিটন দাসের ক্যাচ বানান তিনি। হাসান ৬ বলে ও মোহাম্মদ নেওয়াজ ১ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে ৬ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭ রান তোলে পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টিতে এটা পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এর আগে পাওয়ার প্লেতে পাকিস্তানের সর্বনিম্ন্ন সংগ্রহ ছিল ১৩ রান। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঢাকাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়ে এই রান তোলে দলটি।  এরপর খুশদিল শাহকে নিয়ে বিপর্যয় এড়ানোর চেষ্টা করেন পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আঘা। তবে তাতে রানের চেয়ে উইকেট বাঁচানোই ছিল প্রথম লক্ষ্য। কিন্তু তাতেও টিকতে পারেননি তিনি। ১০ম ওভারে শেখ মেহেদীর ফাঁদে পা দিয়ে ছক্কা মারতে যান সালমান, লং অনে সেটা তালুবন্দি করেন তাওহীদ হৃদয়। ফাহিম আশরাফ শেষদিকে আব্বাসকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরান। তবে ১৭তম ওভারে আব্বাসকে ফিরিয়ে তাদের সব আশায় পানি ঢেলে দেন শরিফুল ইসলাম। এতে ভাঙে ৪১ রানের জুটি। এরপরও লড়াই চালিয়ে গেছেন ফাহিম। ১৭তম ওভারে ফাহিম ক্যাচ তুললেও সেটা ফেলে দেন তানজিম সাকিব। শেষ পর্যন্ত ১৯ তম ওভারে ফেরার আগে ৩২ বলে ৫১ রান করেন ফাহিম। বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল ইসলাম ৩টি আর সাকিব, মেহেদী নেন দু’টি করে উইকেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ যেটা করলো এটা প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের পুনঃচিত্রায়ন বললেও ভুল হবে না। সেই একই চিত্র, একের পর এক উইকেট ছুড়ে দেয়া। তানজীদ হাসান তামিমের জায়গায় সুযোগ পাওয়া নাঈম শেখ প্রথম ওভারে স্কুপ করতে উইকেট ছুড়ে দেন। এরপর চোখের পলকে ফেরেন লিটন কুমার দাস, পারভেজ হোসেন ইমন। ২৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর এরপর জাকের আলী ও শেখ মেহেদী মিলে প্রাথমিক বিপর্যয় এড়ান। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে জমা হয় ২৯ রান।  এরপর আস্তে আস্তে মেহেদী ও জাকের মিলে ইনিংস সামনে এগিয়ে নেন। দু’জনের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয়ের শঙ্কা এড়িয়ে লড়াকু সংগ্রহের দিকে এগোতে থাকে টাইগাররা। দলীয় ৮১ রানে মেহেদীর বিদায়ে ভাঙে ৫৩ রানের জুটি। টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ড ৪৪, ২০১৪ সালে মিরপুরেই সাকিব-নাসিরের। ফেরার আগে ২৫ বলে সমান দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩৩ রান করেন মেহেদী। এরপর আবার নিয়মিত উইকেট হারানো শুরু হয়। তবে জাকের ঠিকই একপ্রান্ত ধরে স্কোর বোর্ড সচল রাখেন জাকের। শেষ ওভারেও তার ব্যাট থেকে আসে ২ ছক্কা। ৪৮ বলে ৫৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে, যেটা কিনা দলের মোট রানের ৪১.৩৫ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here