সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রোববার থেকে আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি। অর্থাৎ আগামী রোববার সকাল ছয়টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত সারা দেশে সর্বাত্মক অবরোধ পালন করবে দলটি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
এ ছাড়া ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সারা দেশে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীদের হামলায় যাঁরা নিহত হয়েছেন (এক সাংবাদিকসহ ৯ জন), তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করে শুক্রবার দোয়া ও মোনাজাতের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। সারা দেশের সব মসজিদে এই দোয়া ও মোনাজাত হবে। পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে আত্মগোপনে থাকা রুহুল কবির রিজভী অজ্ঞাত স্থান থেকে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশে হামলা, হত্যার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে বিএনপি। এরপর ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ দেয়। আজ সেই কর্মসূচি শেষে আগামীকাল শুক্রবার ও পরদিন শনিবার বিরতি দিয়ে আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি দিল দলটি।
নেতাদের ঘরবাড়িছাড়া করে কার সঙ্গে সংলাপ
২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ ঘিরে বিএনপি নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনায় বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই আলোচনায় আমন্ত্রণ জানাতে ইসির একজন বার্তাবাহক আজ একটি চিঠি তালাবদ্ধ বিএনপি কার্যালয়ে রেখে এসেছেন।
নির্বাচন কমিশনের এই চিঠি পাঠানোর সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কিসের সংলাপ, কার জন্য সংলাপ? নির্বাচন কমিশন লোক দেখানোর জন্য এই তামাশা করছে। চিঠি দেবেন, মহাসচিব কারাগারে। সরকারের নির্দেশে এই তামাশা, ইয়ার্কি করা হচ্ছে।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপির মহাসচিবসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ঘরবাড়িছাড়া করে কার সঙ্গে সংলাপ করতে চায় (ইসি), যেখানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কর্মচারী পর্যন্ত যেতে পারছে না। সবাই আতঙ্ক-শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে ‘ক্রাইম সিন’ করে ক্ষমতাসীনেরা বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত করতে চায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অতীত-বর্তমান বিভিন্ন বক্তব্য উল্লেখ করেন রিজভী । তিনি বলেন, ‘একটা লাশ পড়লে ১০ লাশ পড়বে, অতীতে এমন কথা তো তিনি বলেছেন। এখনো বলছেন, হাত ভেঙে দেব, পুড়িয়ে দেব—এগুলো কোনো ভদ্রলোকের ভাষা হতে পারে না।’
ইসির সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যে তালিকা দেওয়া হবে, তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করা ছাড়া তিনি (সিইসি) কিছুই করতে পারবেন না।